টিমে নেই অরিন্দম।
পুরাতনকে বর্জন। নতুনকে আবাহন। মধ্যপ্রদেশ ম্যাচের আগে বাংলা দল নির্বাচনী সভার নির্যাস সংক্ষেপে এটা।
পুরাতন যেমন অরিন্দম দাস, ইরেশ সাক্সেনা। যাঁদের মধ্যপ্রদেশ ম্যাচের টিম থেকে বাদ দেওয়া হল। প্রথম জন চোদ্দো বছর বাংলা জার্সিতে খেলার পর পাকাপাকি ভাবে ইতিহাস হয়ে গেলেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা চলল। নতুন ঋত্বিক রায়চৌধুরী এবং আমির গনি। প্রথম জন অনূর্ধ্ব উনিশ বাংলার হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে। ডাবল সেঞ্চুরি, দেড়শোর উপর সব স্কোর আছে। ক্লাব ক্রিকেটেও ঋত্বিকের সেঞ্চুরি-সহ বড় স্কোর আছে। আর গনি অনূর্ধ্ব-উনিশ বিশ্বকাপে ভারতের জার্সি পরেছিলেন আগে। নির্বাচকরা এখন তাঁকে বঙ্গ স্পিনের পরবর্তী মুখ ধরছেন।
রেল ম্যাচ থেকেই অরিন্দমকে বসিয়ে দেওয়ার আওয়াজ তুলেছিলেন কোনও কোনও নির্বাচক। কিন্তু সিএবি যুগ্ম সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আরও একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন সিনিয়র ওপেনারকে। রেল ম্যাচেও চরম ব্যর্থ হন অরিন্দম। চলতি মরসুমে ৭ ম্যাচে ৩৯৭ রান তাঁর। গড় ছত্রিশের সামান্য বেশি। সেঞ্চুরি নেই। রান করলেও সেটা টিমের কাজে আসেনি। শোনা গেল, অরিন্দমকে বলা হবে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হল। কিন্তু খবর হচ্ছে, নির্বাচকরা তাঁকে ‘ইতিহাস’ করে দিতে চান। বলা হচ্ছে, অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বার তরুণ রক্ত তুলে আনা প্রয়োজন। পরের বার অবিশ্বাস্য খেলতে শুরু করলে অন্য কথা, নইলে অরিন্দমের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা কম। বাঁ হাতি স্পিনার ইরেশকে নিয়েও বিরক্ত নির্বাচকরা। তাঁর ধারাবাহিকতার অভাব।
অরিন্দমদের ছেঁটে ফেলার কারণ বলতে চাননি সৌরভ। শুধু বলেন, “নির্বাচকরা যা ভাল মনে করেছেন, তাই করেছেন।” কিন্তু শোনা গেল, আগামী বার রঞ্জি টিমে জুনিয়র-নীতি আরও প্রবল ভাবে ঢুকতে পারে। অগ্নিভ পানের নামও উঠেছিল। কিন্তু টিমে ইতিমধ্যেই দু’জন উইকেটকিপার (ঋদ্ধিমান সাহা ও শ্রীবত্স গোস্বামী) থাকায় তাঁর জায়গা হয়নি। ঋত্বিকের অর্ন্তভুক্তিতে অবশ্য কোনও দ্বিমত ছিল না। অনূর্ধ্ব-উনিশ কোয়ার্টার ফাইনালে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে তাঁর দু’শো পঁচিশে অর্ন্তভুক্তির দাবি আগে থেকেই অনেক জোরালো ছিল।
আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশ ম্যাচ খেলতে রওনা হয়ে যাচ্ছে বাংলা। যা গ্রুপের শেষ ম্যাচ। পয়েন্ট টেবলে বাংলা এখন ৭ ম্যাচে ১২। অবনমন বাঁচানো নিশ্চিত করা টিমের কাছে আপাত-দৃষ্টিতে প্রধান হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠারও একটা অদ্ভুত সম্ভাবনা আছে! মুম্বই এখন ৭ ম্যাচে ১৭। বরোদা ৭ ম্যাচে ১৮। মুম্বই শেষ ম্যাচ খেলবে কর্নাটকের সঙ্গে। বরোদা খেলবে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে। এখন যদি শেষ ম্যাচে বরোদা এবং মুম্বই দু’টো টিমই হেরে যায়, আর বাংলা জেতে, তা হলে কোয়ার্টারের দরজা খুলে যেতে পারে লক্ষ্মীরতন শুক্লর টিমের জন্য! বোনাস সহ সাত পয়েন্ট পেলে তো নিশ্চিত।
সম্ভব? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সব শুনে বললেন, “আগে বাংলা জিতুক। বোনাস পাক। তার পর ভাবব।”