আপনি সিএবির আম্পায়ার? মাঠে ক্রিকেটার গালিগালাজ করছে?
চিন্তা নেই, মাঠেই ক্রিকেটারকে চিঠি ধরানো হবে!
ক্লাব ঝামেলা করছে সিদ্ধান্তের? উত্তপ্ত হুমকি আসছে?
চিন্তা নেই, প্রথমে ওয়ার্নিং। নইলে চিঠি ক্লাবকে, ওই মাঠেই।
ময়দানের স্থানীয় ক্রিকেটে এত দিন যা কখনও দেখা যায়নি, এ বার তা চালু করেছে সিএবি। আরও ভাল করে বললে যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। যেখানে আম্পায়ারদের প্রতি অতিরিক্ত অসূয়া দেখালেই তাঁকে মাঠে চিঠি ধরাচ্ছেন ম্যাচ অবজার্ভার, বলে দেওয়া হচ্ছে, তুমি আইন ভেঙেছো। এ বার সিএবিতে গিয়ে দেখা করো। চিঠি গ্রহণ করতে না চাইলে? সেটা অবজার্ভার লিখে সোজা পাঠিয়ে দেবেন সিএবিতে। যেখানে প্লেয়ারের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে পারে আরও বড় শাস্তি।
রবিবারই লিগে মহমেডান বনাম নেতাজি সুভাষ ইন্সটিটিউটের ম্যাচে যা ঘটল। নেতাজি সুভাষের এক ক্রিকেটার আউট হওয়ার পর মাঠে আম্পায়ারের প্রতি বেশি অসন্তোষ দেখাতে গিয়ে চিঠি হজম করলেন ম্যাচ অবজার্ভার তথা প্রাক্তন বাংলা ক্রিকেটার তপন ভট্টাচার্য-র থেকে। সিএবিতে এখন তাঁকে দেখা করতে হবে। “কী কী করা যাবে না, আইনটা কী, সেটা যেমন আমার কাছে থাকে, তেমনই ক্লাবের কাছেও আছে। সেটা ভাঙলে ছাড়ব কেন?” এ দিন বলছিলেন তপনবাবু। শোনা গেল, আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে ক্লাবের হুমকিও এখনও মোটে বরদাস্ত করা হচ্ছে না।
চাকিং আটকানোর জন্যও কঠোর পদক্ষেপ আমদানি করা হচ্ছে। প্রথমে যে সব বোলারের অ্যাকশন নিয়ে সমস্যা আছে, তাদের একটা তালিকা করেছিল সিএবি। শুধরোনোর সুযোগ দিচ্ছে। শরদিন্দু মুখোপাধ্যায় এবং সুব্রত পোড়েলের তত্ত্বাবধানে অ্যাকশনের ত্রুটি সারানো চলছে। কিন্তু তাতে দেখা দিচ্ছে অন্য বিপত্তি। অভিযোগ, ক্রিকেটারদের কেউ কেউ নাকি সিএবি-র ক্লাসে গিয়ে কনুই ভাঙছেন না, মাঠে নেমে ‘সিএবি ক্লিয়ার করে দিয়েছে’ বলে মাঠে ফের ‘চাক’ করছেন! কোনও কোনও ক্লাবের অভিযোগ, তাদের বোলারকে চাকিংয়ের জন্য ‘নো’ ডাকা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিপক্ষের ‘চাকার’-কে ডাকা হচ্ছে না। সিএবি-র এক উচ্চপদস্থ কর্তা এ দিন আবার অভিযোগ করলেন, ময়দানের এক বোলার দিব্য ‘ভিশন-২০২০’ ও সিএবি-র অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খেলে ফেলার পর তাঁকে ধরা হয়েছে ‘চাক’ করেন বলে। বলছেন, তা হলে ভিশন বা বাংলার কোচ কেন আগে ধরতে পারল না?
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এ দিন চাকিং-কাণ্ড নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন আম্পায়ার, অবজার্ভারদের সঙ্গে। পরে বললেন, “আমরা কাউকে নির্বাসনে পাঠাতে চাই না। চাই ক্লিন অ্যাকশনে বোলাররা বল করুক।” শোনা গেল, বৈঠকে আম্পায়ারদের পরিষ্কার বলা হয়েছে, সিএবি কাউকে ক্লিয়ার করেনি। চাক করলেই নো ডাকতে হবে। সিএবি-র অন্য যুগ্ম-সচিব আবার আক্রমণাত্মক। সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলে দিলেন, যে সব ক্লাব হারছে, তারাই অভিযোগ তুলছে। আর পরের বার চাকারদের তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। কোনও ক্লাব তাদের নিলে নিতে হবে নিজেদের ঝুঁকিতে, কারণ আর একবার নো ডাকলেই গোটা মরসুমে নির্বাসন! বলে দিচ্ছেন, “নিজের ক্লাবেই বরদাস্ত করছি না। বাকিদের করব কেন?”
ঘটনা। তাঁর ক্লাব পাইকপাড়া স্পোর্টিংয়ের সানি সোকেনের চাক করা বন্ধ হতেই উইকেটও বন্ধ হয়েছে। আর ক্লাবকর্তারা সিএবি যুগ্ম-সচিবের কাছে তদ্বির করেও কোনও সুবিধে করতে পারছেন না!