ভারতীয় ক্রিকেটে গত তিরিশ বছরে সবচেয়ে মোড় ঘোরানো দু’টো ঘটনার তিনি ভগীরথ। প্রথম যখন ম্যাচ গড়াপেটায় জড়িত আজহারউদ্দিনদের বিরুদ্ধে বোর্ডের প্রধান হিসেবে তিনি চরম ব্যবস্থা নেন। শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধেও সাত বছর আগে তিনিই প্রথম আইনি আওয়াজ তুলেছিলেন। চেন্নাই আদালতে হেরে যাওয়ার পরেও মামলা লড়েই গিয়েছেন শ্রীনির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে যখন এবিপি-কে তিনি সাক্ষাৎকার দিলেন চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে প্লেন ধরার জন্য বেরোচ্ছেন এ সি মুথাইয়া।
প্রশ্ন: কত টাকা খরচ হল পাঁচ বছর ধরে মামলা চালাতে?
মুথাইয়া: পাঁচ নয়, ছয় বছর ধরে।
প্র: হ্যাঁ, কোটি কোটি টাকা নিশ্চয়ই।
মুথাইয়া: (হাসি) না কোটি কোটি টাকা নয়। আমার আইনজীবী নলিনী চিদম্বরম সম্পর্কে আত্মীয় হয়। ও আমায় রেগুলার ফিজ চার্জ করেনি (হাসি)।
প্র: কিন্তু স্বার্থের সংঘাত নিয়ে আপনি তো আগেও মামলা করেছিলেন। চেন্নাই আদালতে মামলাটা শ্রীনির কাছে হেরেও যান। তার পর এত বছর ধরেও একটা মামলা চালালেন। তখন মোদী, পওয়ার, বিন্দ্রা সবাই শ্রীনির দিকে ছিলেন। লড়াই করার জোর পেলেন কী করে?
মুথাইয়া: আমি বরাবরই লড়ুয়ে। সহজে ছাড়ি না। সবাই হাসত আর বলত, এর বিচার কোনও দিন হবে না। আমি হাল ছাড়িনি জানতাম এই জিনিস চলতে পারে না। আজ ঠিক প্রমাণিত হলাম তো?
প্র: কোন দিনটা বেশি আনন্দের? যে দিন ম্যাচ গড়াপেটার ঠিকঠাক বিচার করায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে পেরেছিলেন? নাকি আজকের দিনটা?
মুথাইয়া: আজকের দিনটা। আজহারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়ও প্রচুর চাপ ছিল। সবাই বারণ করেছিল। বোর্ডের মধ্যেই নানা চাপ ছিল। আমি তাও পিছু হঠিনি।
কিন্তু শ্রীনির আমলে অবস্থাটা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওর উত্তরসূরি কে আসবে জানি না কিন্তু তাকে গোটা আস্তাবল সাফ করতে হবে।
প্র: আপনাকে যদি বলা হয় বোর্ডে এই পদে ফিরে আসতে?
মুথাইয়া: আমি জানি না এই পরিমাণ নোংরা সাফ করার মতো এনার্জি আর সময় আমার আছে কি না!
প্র: আপনি তো বোর্ডে একটা খসড়া প্রস্তাব আনিয়েছিলেন যে, স্বার্থের সংঘাত বেআইনি। তা হলে সেটা কী করে আইন হয়ে গেল যে, একসঙ্গে সিএসকে আর বোর্ড করা যাবে?
মুথাইয়া: ওই যে শ্রীনিরা একটা অ্যামেন্ডমেন্ট করিয়ে নিল যে, আইপিএলকে স্বার্থের সংঘাত সংক্রান্ত আইনের বাইরে রাখা হবে। কী অদ্ভুত কথা! কেউ কখনও শুনেছে? নাকি দেখেছে?
প্র: এখন শ্রীনির কি আইসিসি-র সর্বোচ্চ পদে থাকা উচিত?
মুথাইয়া: অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত। আইসিসি প্রেসিডেন্ট তো ভারতীয় বোর্ডেরই নমিনি। তাকে এর পর তো বোর্ডও সমর্থন করবে না।
প্র: আপনি বললেন পদত্যাগ করা উচিত। শ্রীনিকে এত দিন দেখে কী মনে হয়?
মুথাইয়া: দেখে মনে হয় তাড়িয়ে না দিলে যাবে না (হাসি)।
প্র: আজ রায় পক্ষে পাবেন কোনও আশা ছিল?
মুথাইয়া: ভীষণ ছিল। আমি জানতাম এই রকমই কিছু হবে। তবে শ্রীনির নির্বাচনে দাঁড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা হবে কি না শিওর ছিলাম না।
প্র: ধোনির ভাগ্য এই রায়ের সঙ্গে বদলাবে?
মুথাইয়া: ওরা কি বন্ধ খামটা আদালতে আজ খুলেছে?
প্র: না।
মুথাইয়া: ধোনি নিশ্চয়ই এখন ভাববে কী করা যায়। শ্রীনি-ধোনি একটা গোপন বোঝাপড়া ছিল মোটামুটি সবার জানা। একই সঙ্গে ও আবার সিএসকে ক্যাপ্টেন। ইন্টারেস্টিং হবে ও কী করে!