সফল শামি। মেলবোর্নে প্রথম দিন। ছবি: গেটি ইমেজেস।
দিনের শেষ দিকে, তখনও নতুন বল নেওয়া হয়নি। খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলেন মহম্মদ শামি। হিন্দিতে কমেন্ট্রি করছিলেন শোয়েব আখতার। বলে উঠলেন, “যে ভাবে খঁুড়িয়ে খঁুড়িয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে শামি, তাতে মনে হচ্ছে না ভারতের পক্ষে ভাল খবর। হ্যামস্ট্রিং হয়ে গেলে গোটা টেস্টে ভারতকে এক জন বোলার কম নিয়ে খেলতে হবে।”
শোয়েবের আশঙ্কা অবশ্য সত্যি হয়নি। দিনের শেষ ওভারের আগেই মাঠে ফিরলেন বাংলার স্পিডস্টার। শেষ ওভারটা করলেনও। দিনের খেলা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেও দিলেন, “কাল সকালে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অস্ট্রেলিয়াকে অল আউট করে দিতে হবে। কাল এটাই আমাদের আসল কাজ।”
আর চোট? প্রসঙ্গটা উঠতেই বললেন, “ফিটনেস নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। ছোটখাটো চোট-আঘাত তো প্লেয়ারের লেগেই থাকে। বাঁ ঊরুতে একটা টান ধরেছিল। সেটা যাতে না বাড়ে, তাই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। একটু বিশ্রাম নিতেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। শেষ ওভারে বল করে বুঝে নিলাম ঠিকই আছি। কালও বল করব।”
তার পরই শামি চলে যান শনিবারের প্ল্যানিংয়ে। “কাল প্রথম সেশনে ওদের শেষ করে দিতে পারলেই মঙ্গল”, বললেন প্রথম দিন দু’উইকেট পাওয়া ধোনির দলের পেস অস্ত্র। এ দিন স্টিভ স্মিথ ৫০-এর দোরগোড়ায় থাকার সময় শামির সঙ্গে অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের হাল্কা তর্কাতর্কি হয়। এই নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করলে একেবারে সোজা ব্যাটে খেলেন শামি, “আমাদের ফোকাস হল সব ব্যাটসম্যানকে আউট করা। সেই ব্যাটসম্যান কে— স্মিথ না অন্য কেউ, সেটা বড় কথা নয়।”
হাফসেঞ্চুরি করে এমসিজির ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া ওপেনার ক্রিস রজার্স ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শন মার্শকে ফেরান শামি। দুটোই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তবে এর জন্য তাঁর কোনও বাড়তি অনুভূতি ছিল না বলে জানিয়ে শামি বলছেন, “সকালে লাইন-লেংথের উপরই বেশি জোর দিয়েছিলাম। বলের গতি নিয়ে বেশি ভাবিনি। কারণ পরিস্থিতি সে রকম ছিল না। উইকেট থেকে সাহায্য না পেলে আমি গতির উপর জোর দিই না। সব সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কিছু হয় না। কখনও ভাল বল করেও উইকেট পাওয়া যায় না, প্রচুর রান দিতে হয়। তাই উইকেট নিয়ে না ভেবে লাইন ও লেংথের উপরই মনঃসংযোগ করি। এই মানসিকতা নিয়ে বল করলে উইকেট আপনাই আসে।”
এ দিন শামির প্রথম শিকার রজার্স উইকেটে জমে যাওয়ার পরেও আউট হওয়াটাকে মোটেই মেনে নিতে পারছেন না। বলেন, “খুব আফসোস হচ্ছে। অতক্ষণ উইকেটে থাকার পর বেশ ভাল জায়গায় চলে এসেছিলাম। তখন ও ভাবে আউট হওয়াটা ঠিক হয়নি। খুব হতাশ লাগছিল। কারণ আমি তখন সেঞ্চুরির কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলাম।” তবে ভারতীয় বোলিংয়ের প্রশংসাই শোনা গেল রজার্সের মুখে। “ওরা খুব প্ল্যান করে বল করছে। ভারতের আক্রমণের ধার ক্রমশ বাড়ছে। রাউন্ড দ্য উইকেট বল করে ওয়ার্নারকে যে ভাবে আউট করল (উমেশ) আর দিনের শেষ দিকে হাডিনকে যে রকম চাপে ফেলে দিয়েছিল, তাতে বোঝাই যাচ্ছে কাল ওদের সামলানো সহজ হবে না। আজ ইশান্তকে সামলানোও মুশকিল হয়ে উঠেছিল। দুর্দান্ত সুইং করাচ্ছিল আর মাঝেমধ্যে মারাত্মক স্ট্রেটার দিচ্ছিল।”
যাঁর সঙ্গে ১১৫-র পার্টনারশিপ খেলেন আজ রজার্স, সেই শেন ওয়াটসনও সেঞ্চুরি না পেয়ে আফসোস করছেন। বললেন, “তখন মোটেই খারাপ ব্যাট করছিলাম না। এ রকম সময় আউট হলে খুব খারাপ লাগে। সত্যিই খুব হতাশ আমি।”