আগামী পনেরো মাস আমরা এ ভাবেই ক্রিকেট খেলব

বললেন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। খেলার পর অ্যাডিলেড ওভাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে এবিপি-কে সাক্ষাত্‌কার দিলেন। তাঁকেও বিরাট কোহলির মতোই উত্‌ফুল্ল দেখাল। নিজেই শুরু করলেন, “টিমের অ্যাটিটিউড দেখলেন? কী ভাবে রানটা তাড়া করেছিল?”

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

অ্যাডিলেড শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২২
Share:

মারমুখী মুরলী। অ্যাডিলেডে।

বললেন টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী। খেলার পর অ্যাডিলেড ওভাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে এবিপি-কে সাক্ষাত্‌কার দিলেন। তাঁকেও বিরাট কোহলির মতোই উত্‌ফুল্ল দেখাল। নিজেই শুরু করলেন, “টিমের অ্যাটিটিউড দেখলেন? কী ভাবে রানটা তাড়া করেছিল?”

প্রশ্ন: হ্যাঁ অনবদ্য। কিন্তু হারার পর ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা কেমন ছিল?
শাস্ত্রী: প্রথমে সবাই চুপ করে বসেছিল। তার পর খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে গেল। সবাই বুঝেছে কেমন মনে রাখার মতো লড়াই আমরা দিয়েছি। এই সামান্য সময়েই যা রই্যাকশন পাচ্ছি, দারুণ। আমি খুব খুশি দেখে যে, আমাদের টিমে মানসিকতাটাই আমূল বদলে গিয়েছে।

প্র: ভারতীয় বোর্ড কিছু বলেছে?
শাস্ত্রী: না। বোর্ড থেকে এখনও কিছু পাইনি।

প্র: এই যে শেষ দিনে ৩৬৪ তাড়া করা হবে, সেটা কখন ঠিক হল?
শাস্ত্রী: কাল রাত্তিরের মিটিংয়ে। বিরাট নিজেই কথাটা তোলে যে, যত রানই হোক আমরা চেজ করব। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ড্রয়ের খেলা খেলব না।

প্র: কোহলির ইনিংসটা কেমন দেখলেন?
শাস্ত্রী: আমার জীবনে ফোর্থ ইনিংসে কাউকে খেলতে দেখা এটাই সেরা ইনিংস।

প্র: তাই?
শাস্ত্রী: অফকোর্স। ফোর্থ ইনিংসে এ রকম দাপট নিয়ে এত খারাপ উইকেটে আমি কাউকে ব্যাট করতে দেখিনি। একে নিয়েই তো ইংল্যান্ডের পর কত কিছু লেখা আর বলা হয়েছিল। মনে আছে আমি সে দিন বলেছিলাম, কোথাও না কোথাও কাউকে না কাউকে কোহলির এই সাময়িক খারাপ ফর্মের দাম চুকোতে হবে। ঠিক তা-ই হল।

প্র: পিছন ফিরে এখন কী মনে হচ্ছে, যে ক্রিকেটার এ রকম ব্যাট করতে পারে, তার ইংল্যান্ডে এত খারাপ হাল হয়েছিল কেন?
শাস্ত্রী: কিছু কিছু অ্যাডজাস্টমেন্টের সমস্যা হচ্ছিল। যেমন ফুটওয়ার্কে অনিশ্চিত ভাব।

প্র: আজ তো ইয়ান চ্যাপেল কোহলির ফুটওয়ার্কেরই সবচেয়ে প্রশংসা করছিলেন।
শাস্ত্রী: রিয়েল ট্যালেন্ট। ঠিক নিজের ভুলটা শুধরে নিয়েছে। কিন্তু সেই সময় কত লেখা হল। কত কিছু লোকে বলে ফেলল। এখন সব চুপ তো?

প্র: ওটা ছাড়ুন। সরাসরি জানতে চাইছি। এড়িয়ে যাবেন না। আম্পায়ারিংয়ে দু’টো ভুল সিদ্ধান্ত কি আপনাদের জন্য খুব মারাত্মক হয়ে দেখা দিল না?
শাস্ত্রী: আমি আম্পায়ারিংয়ের দোহাই দেব না। ওটা খেলার অংশ। হতেই পারে ভুল। কিন্তু আমার কাছে শ্লাঘার হল, যে ভাবে আমরা লড়াই করেছি। অস্ট্রেলিয়া তো জেনে গেল যে, আমরা এ ভাবেই গোটা সিরিজ খেলব। ভেতরে একটা খচখচানি তো হবেই।

প্র: কিন্তু এত লড়ে তো সেই হারতেই হল।
শাস্ত্রী: ভাগ্য একটু সহায় দিলে জিতেই যেতাম আজ। শেষ দিকে পাঁচ-ছ’টা ওভার গণ্ডগোল হয়ে গেল।

প্র: বাজে শটে কয়েকটা উইকেট গেল।
শাস্ত্রী: হ্যাঁ, ঋদ্ধির তখন চালাবার দরকার ছিল না। ওভারে অলরেডি ১৪ রান উঠে গিয়েছে। শামিও ধৈর্য ধরলে পারত। এগুলো সবই অনভিজ্ঞতা। আর একটু খেললে আর এক ভুল হবে না।

Advertisement

এ সব ছোট ছোট জিনিস থাকবে। ব্রিসবেনের আগে সেগুলো শুধরে নিতে হবে। আপনার প্রশ্নের সঙ্গে একটা ব্যাপারে আমি সহমত যে, ড্র-টাই ম্যাচের ন্যায়বিচার হত। হয়নি, এখন কী করা যাবে? যে ছক আগামীর জন্য ঠিক হয়েছে তাকে তো আর বদলাতে পারি না। কিন্তু আসল কথা হল, যে ভঙ্গিতে ছেলেরা খেলেছে। আমরা ঠিক করে ফেলেছি বিদেশ তো কী। যখন যেখানে খেলব আগামী পনেরো মাস, স্রেফ জেতার জন্য খেলব।

প্র: কিন্তু এই টিমের আসল ক্যাপ্টেন তো ধোনি। তিনি কি ব্রিসবেনে এই মডেলে খেলবেন যে, জেতা ছাড়া শুরুতে কিছু ভাবব না?
শাস্ত্রী: বললাম তো, আগামী পনেরো মাস এ ভাবে টিম খেলবে। দেখি কারা সামনে আসে।

প্র: একটা খটকা লাগছে। আপনি ক্রিকেটে যে অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেন, তারা বরাবর বলে এসেছে বিদেশে গেলে প্রথমে হার বাঁচাও। তার পর জেতার চেষ্টা করো। তা হলে সেই মডেল বদলে যাচ্ছে?
শাস্ত্রী: হ্যাঁ। এরা প্রথমে জেতা ছাড়া কিছু মাথায় রাখবে না।

প্র: কিন্তু চিরকাল তো অ্যাওয়ে ম্যাচ ইন্ডিয়া টিম ড্র করতেই চেয়েছে। আপনি নিজে বিরানব্বইয়ের জো’বার্গ টেস্ট চার ঘণ্টা খুঁটে খুঁটে খেলে ড্র করেছিলেন। তখন তো বলেননি, না, আগে জিততে চাই।
শাস্ত্রী: আরে, সেই সাউথ আফ্রিকা টিমের বোলিং মনে করতে পারেন? কারা কারা সব ছিল? সেখানে ঝুঁকি নিয়ে লাভ হত না। আর আমাদের তো তখন একটা সহবাগও ছিল না। কে করত অত রান?

প্র: ক্লার্ক সিরিজের বাইরে চলে গেলেন তো।
শাস্ত্রী: হুঁ, শুনলাম।

প্র: শুনলাম মানে? আপনাদের তো বিরাট সুবিধে হয়ে গেল।
শাস্ত্রী: যে সামনে পড়ুক আমাদের কিছু আসে যায় না। ছেলেরা সেই জেতার জন্যই কঠিন খেলবে। তুমুল পজিটিভ থাকবে। ওহে অস্ট্রেলিয়া বুঝে গেলে তো আমাদের টিমটা কী বস্তু?

Advertisement

আমি আম্পায়ারিংয়ের দোহাই দেব না। ওটা খেলার অংশ। হতেই পারে ভুল। কিন্তু আমার কাছে শ্লাঘার হল যে, ভাবে আমরা লড়াই করেছি। অস্ট্রেলিয়া তো জেনে গেল যে, আমরা এ ভাবেই গোটা সিরিজ খেলব। ভেতরে একটা খচখচানি তো হবেই।

রবি শাস্ত্রী

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement