আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গিয়েছে ছবিটা। মান-অভিমানের পালা শেষ করে এ বার ময়দানী দলবদলের চিরপরিচিত দর কষাকষির চিত্রনাট্য শুরু!
নেপথ্যে, আর্মান্দো কোলাসোর পুরনো ক্লাবে থাকার আগ্রহ প্রকাশ। যার সূত্র ধরে ফের গোয়ান কোচের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিলেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তারা। এ দিন বিকেলে ক্লাব তাঁবুতে বৈঠকে হাজির ছিলেন ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার, ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার এবং ইউবি গ্রুপের প্রতিনিধি অমিত সেন। ঘণ্টাদেড়েকের বৈঠকের পরে ইউবি প্রতিনিধি অমিত সেন বলেন, “আর্মান্দোর পাল্টা প্রস্তাবের অনেকগুলোই যুক্তিযুক্ত। তা মেনেও নিয়েছি। আমরা ওঁকে আগামী মরসুমে কোচ রাখতে চাই। উনি যে টাকা চেয়েছেন তা ক্লাব লাইসেন্সিং এবং আর্থিক মন্দার কারণে পুরোটা মেনে নেওয়া যাবে না। সমঝোতা মূলক একটা অঙ্ক পাঠিয়ে দিয়েছি।”
আর্মান্দোর প্রস্তাব অনুযায়ী গাড়ি, জিম ইনস্ট্রাকটর, ডায়েটিশিয়ান সবই নাকি মেনে নিয়েছে ক্লাব। তাঁর সুপারিশ মেনে দীপক মণ্ডলকেও আগামী মরসুমের জন্য সই করানো হল। তবে আইএসএল নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় ইস্টবেঙ্গল কর্তা এবং ইউবি গ্রুপের প্রতিনিধি। অমিতবাবু বলেন, “আমাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ থাকাকালীন অন্য অ্যাসাইনমেন্টে কোচকে আমরা সবুজ সঙ্কেত দেব না, জানিয়ে দিয়েছি।” ইস্টবেঙ্গল তাঁর দাবি অনেকটাই মেনে নিতে পারে বুঝে আর্মান্দো আর্থিক চুক্তি বাড়ানোর দিকেই জোর দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, “আইএসএলে কোচিং না করাতে পারলে আর্থিক চুক্তি বাড়ানো নিয়ে অন্তত ভাবা হোক।”
বৃহস্পতিবার রাতে ক্লাবের তরফে মেল পাঠানো হয় আর্মান্দোকে। এ দিন যার জবাব দিলেন গোয়ান কোচ। তার পরেই বৈঠক সেরে ক্লাবের এই অবস্থানের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় আর্মান্দোকে। আর্মান্দোর জবাব পেলে আগামী মঙ্গলবার ফের বৈঠক হবে। ক্লাবের বক্তব্য শুনে আর্মান্দো নাকি ঘনিষ্ঠমহলে বলেন, “ওরা আমাকে পিনাট (বাদাম) দিতে চাইছে। কিন্তু আমি চাই ওয়ালনাট (আখরোট)।”
এ দিকে, দশ বছর পর ফের ইস্টবেঙ্গলে ফিরে দীপক বলছেন, “অন্য ক্লাবেরও প্রস্তাব ছিল। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর পরিবেশটাই টেনে আনল।” লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “দীপক কলকাতায় আমাদের ক্লাবেই খেলা শুরু করেছিল। চাইব আমাদের ক্লাব থেকেই ও খেলা শেষ করুক।”
তবে দীপকের সইয়ের দিনে ক্লাব ছাড়লেন চিডি। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর গলায় অভিমান। বললেন, “ক্লাব হয়তো নতুন বিদেশিদের প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই আমার প্রস্তাব কর্তাদের পছন্দ হয়নি। আমি পেশাদার। ব্যাপারটা স্পোর্টিংলি নিচ্ছি।” চিডি জানিয়েছেন, আপাতত নাইজিরিয়ার বাড়িতে ফিরছেন। তার পর ভারতে না অন্য কোনও দেশে খেলবেন, তা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করবেন।
ইস্টবেঙ্গলে যখন কোচ নিয়োগ নিয়ে ডামাডোল, তখন শুক্রবারই আগামী মরসুমের টিডি হিসেবে সুভাষ ভৌমিককে চুক্তিবদ্ধ করে ফেলল মোহনবাগান। চুক্তির পর মোহন টিডির প্রতিক্রিয়া, “কঠিন লড়াই সামনে। নিজের দলের প্রস্তুতি ছাড়া আর কিছুই ভাবছি না।”