—ফাইল চিত্র।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে যুজ়বেন্দ্র চহালকে ‘কনকাসন সাব’ হিসেবে নামিয়ে এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ভারত। যে বিতর্কে জডিয়ে পড়লেন ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও। এক দিকে অনিল কুম্বলে, সুনীল গাওস্কররা। অন্য দিকে, প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মার্ক টেলর।
কুম্বলের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটার মনে করেন, ঠিকই করেছে বিরাট কোহালির দল। অন্য দিকে, টেলরের বক্তব্য, এই আইনের সঠিক প্রয়োগ হওয়া দরকার। জাডেজার ‘কনকাসন পরিবর্ত’ নিয়ে এত বিতর্ক কেন হচ্ছে, তা নিয়ে আবার বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার সুনীল গাওস্কর।
শুক্রবার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট করার সময় মিচেল স্টার্কের বল রবীন্দ্র জাডেজার হেলমেটে লাগে। তিনি ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও পরে ফিল্ডিং করতে নামেননি। তাঁর জায়গায় ‘কনকাসন পরিবর্ত’ হিসেবে নামা লেগস্পিনার চহাল তিন উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পিছনে বড় ভূমিকা নেন। যার পরেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক টেলর বলেছেন, ‘‘কনকাসনের আইন আনা হয়েছিল ক্রিকেটারদের রক্ষা করার জন্য। সেই আইনের অপপ্রয়োগ হলে কিন্তু সমস্যা তৈরি হবে।’’
শনিবার এক অনুষ্ঠানে কুম্বলে আবার বলেছেন, ‘‘কনকাসন আইনটা গত দু’বছর ধরে আছে। ফিল হিউজের মৃত্যুর পরে এই আইন চালু হয়েছিল। কারণ কনকাসনের ব্যাপারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি, জাডেজার হ্যামস্ট্রিংয়েও চোট লেগেছিল। কিন্তু তার সঙ্গে বদলি ক্রিকেটার নামানোর কোনও সম্পর্ক নেই।’’
কুম্বলে নিজে আইসিসি ক্রিকেট কমিটির প্রধান। যে কারণে এই আইনের ব্যাপারটা তাঁর কাছে আরও বেশি পরিষ্কার। চহাল কি জাডেজার ঠিক সমগোত্রীয় ক্রিকেটার? যে প্রশ্নটা তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। কুম্বলের জবাব, ‘‘জাডেজার ব্যাটিং হয়ে গিয়েছিল। ও শুধু স্পিন বল করত। আর চহালও তো এক জন স্পিনার। জাডেজার কাজটাই ও করেছে। এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। ঠিক পরিবর্ত ক্রিকেটারই নামিয়েছে ভারত।’’
কেউ, কেউ বলেছেন, মাঠের মধ্যে জাডেজার কোনও কনকাসন পরীক্ষা হয়নি। মাথায় চোট লাগার পরে তিনি ব্যাটও করেছেন। বরং তাঁর পায়েও চোট লেগেছিল। সে ক্ষেত্রে কি ‘কনকাসন সাব’ নিয়মের প্রয়োগ ঠিক? কুম্বলের জবাব, ‘‘মাঠের মধ্যে ফিজ়িয়ো ডাকার দায়িত্ব জাডেজার নয়। আম্পায়ারের। আর কনকাসন পরেও হতে পারে। ড্রেসিংরুমে ফিরে সমস্যা হতে পারে। তখনই চিকিৎসকদের পরামর্শ কাজে আসে।’’
টেলরও এর আগে আইসিসি ক্রিকেট কমিটির সদস্য ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রচারমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘কনকাসন আইনের অপব্যবহার যদি চলতে থাকে, তা হলে এর অবস্থাও রানার আইনের মতো হবে।’’ রানার আইন— অর্থাৎ কোনও ক্রিকেটার চোট পেলে ব্যাটিংয়ের সময় রানার নেওয়ার ব্যবস্থা। বহু বছর ধরে চলা এই নিয়ম এখন আর নেই। যার কারণ হিসেবে টেলর বলেছেন, ‘‘এই রানার আইনেরও ভীষণ অপব্যবহার হত। যে কারণে এই আইন নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এটা ক্রিকেটারদেরই দেখতে হবে যে, কনকাসন আইনের প্রয়োগ যেন ঠিকমতো হয়।’’ তবে পাশাপাশি টেলর এও মনে করিয়ে দেন যে, জাডেজার ক্ষেত্রে এই আইনের অপব্যবহার হয়েছে, এমনটা তিনি বলছেন না।