সফল: ৬৯ রানে চার উইকেট নিলেন অশ্বিন। পিটিআই
বিরাট কোহালি আগেই বলে দিয়েছিলেন, চলতি প্রজন্মে বিশ্বের সেরা উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। শনিবার থেউনিস দে ব্রুইনকে উড়ন্ত ক্যাচে ফিরিয়ে সেই উক্তি আরও এক বার প্রমাণ করলেন বঙ্গসন্তান।
শুধু একটি ক্যাচ দিয়েই ঋদ্ধিকে বিচার করা হচ্ছে না। এ দিন একাধিক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রানের সম্ভাবনা থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন। বিশেষ করে ইশান্ত শর্মার বলে।
উইকেটের বিপজ্জনক অংশে প্রবেশ করার জন্য ইশান্তকে দু’বার সতর্ক করেন আম্পায়ার। পপিং ক্রিজে নিজের ল্যান্ডিং বদলাতে ক্রিজের কোণ থেকে ডেলিভারি শেষ করেন ইশান্ত। তাই লাইন গুলিয়ে ফেলেন। মিডল স্টাম্পে পড়ে একাধিক বার লেগস্টাম্পের অনেক বাইরে চলে যাচ্ছিল ইশান্তের বল। বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে বেশ কয়েক বার সেই রান বাঁচান ঋদ্ধি। এ ছাড়াও অশ্বিন, জাডেজাদের বিরুদ্ধে এ দিনও তিনি সাবলীল। তাই আর অশ্বিনের বলতে দ্বিধা নেই, ‘‘ঋদ্ধি আমাদের দলের সম্পদ।’’
শনিবার চার উইকেট নিয়ে দিন শেষ করার পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে অশ্বিন বলেন, ‘‘যদি বলি ঋদ্ধি বিশ্বের অন্যতম সেরা নয়, তা হলে একেবারেই বোকামি হবে। ওর হাত থেকে বল ফস্কাতে খুব কম দেখেছি। আজও যে ভাবে আমার বিরুদ্ধে কিপিং করেছে, তা দেখেই আন্দাজ করা যায়, ওর হাত কতটা মসৃণ। ওর উপস্থিতি দলকে আলাদা মাত্রায় পৌঁছে দেয়।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ব্যাট হাতে ওর অবদান নিয়েও প্রশ্ন তোলা যাবে না। একাধিক ইনিংসে ভাল ব্যাট করে গিয়েছে। অসাধারণ ব্যক্তিত্ব।’’
ক্ষিপ্র: ডান দিকে পাখির মতো উড়ে ব্রুইনের ক্যাচ ধরলেন ঋদ্ধি । টুইটার
দিনের শেষে ২৭৫ রানে শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ভারতের চেয়ে তারা পিছিয়ে ৩২৬ রানে। তাদের ফলো-অন করানো হবে কি না, তা সরকারি ভাবে জানানো হয়নি শনিবার বিকেল পর্যন্ত। ভারতীয় দলের নতুন প্রথা অনুযায়ী ৭৫ ওভার বোলাররা বল করে ফেললে, দ্বিতীয় ইনিংস বল করানোর ঝুঁকি নেওয়া হয় না। রিকভারির দিকে কড়া নজর রাখা হয়। তাই অশ্বিনও এ বিষয়ে নিশ্চিত নন। বলছিলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার ধারণা নেই। আজ রাতের মধ্যেই অধিনায়ক ঠিক করবে, ফলো-অন করানো হবে কি না। অনেকটাই নির্ভর করছে বোলাররা কী রকম রিকভারি করে তার উপরে।’’
এ দিন ১৬৪ মিনিট ক্রিজ কামড়ে পড়েছিল কেশব মহারাজ ও ভার্নন ফিল্যান্ডারের জুটি। টেলএন্ডারদের লড়াইয়ের সামনে ভারতীয় বোলারেরা কি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন? অশ্বিনের সাফ উত্তর, ‘‘একেবারেই না। কখনওই হতাশ হইনি। বল করতে ভালবাসি। যে কোনও ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে এই মনোভাব বজায় রাখি।’’ যোগ করেন, ‘‘তা ছাড়া, টেলএন্ডার বলে বর্তমান ক্রিকেটে কিছু হয় না। কেশবরা যে ভাবে ব্যাট করেছে, তা দেখে ওদের এক বারও টেলএন্ডার মনে হয়েছে? টেলএন্ডার উক্তিটিই এখন কাল্পনিক হয়ে গিয়েছে। আমাদের দলেও ১১ নম্বর পর্যন্ত প্রত্যেকে ব্যাট করতে পারে।’’
চার উইকেট পেয়ে পিচ নিয়ে সন্তুষ্ট অশ্বিন। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে চর্চায় কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল যে বাইশ গজ, তৃতীয় দিনের শেষ পর্যন্ত সেখানে ৮৭৬ রান হয়েছে। পড়েছে ১৫টি উইকেট। বোলাররাও যেমন পিচের সাহায্যে পেয়েছেন, ব্যাটসম্যানেরাও রান করে গিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতেই অশ্বিনের মত, ‘‘পিচ নিয়ে একেবারেই কোনও অভিযোগ নেই। আমার তো খুব ভাল লেগেছে। রঞ্জি ট্রফিতেও এ ধরনের পিচেই খেলতে হয়। এখানে পেসাররাও যেমন সাহায্য পাচ্ছে, স্পিনারদের বলও ঘুরছে।’’ ভারতীয় পেসারদের প্রশংসাও শোনা গেল তাঁর মুখে। বলছিলেন, ‘‘শামি ও উমেশের বোলিং আলাদা সৌন্দর্য যোগ করেছে। ভারতীয় পিচেও ওদের বল বুক উচ্চতায় উঠছে। আমাদের পেসাররা এখন এতটাই উন্নত যে, এ ধরনের কোনও প্রাপ্তি আর নতুন নয়।’’