স্বস্তি: শেষ আটে ওঠার পরে উচ্ছ্বসিত মদ্রিচরা। রয়টার্স
বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি মারতে ব্যর্থ হন লুকা মদ্রিচ। যা তাঁকে মনে করিয়ে দেয় ২০০৮ ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালের মুহূর্ত। তুরস্কের বিরুদ্ধে ইউরো কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে পেনাল্টি নষ্ট করে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন মদ্রিচরা।
মদ্রিচের পেনাল্টি নষ্টের কারণে এই ম্যাচও গড়ায় টাইব্রেকার পর্যন্ত। টাইব্রেকারে পেনাল্টি মারতে এসে ক্যাসপার স্কেমিশেলকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হননি মদ্রিচ। ম্যাচ শেষে ক্রোয়েশিয়ার তারকা জানিয়েছেন ইউরো কাপের স্মৃতি যেন বার বার তাঁর সামনে ফুটে উঠছিল। মদ্রিচ বলেছেন, ‘‘টাইব্রেকারে গোল করার পরে আমি স্বস্তি পেয়েছি। ২০০৮ সালের ইউরো কাপের স্মৃতি এখনও আমাকে ভূতের মতো তাড়া করে। ভাগ্যিস এই ম্যাচে তার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। এখন আমাদের সামনে লক্ষ্যটা পরিষ্কার। ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে যেতে হবেই।’’
সেই স্মৃতি ভুলতে পারেননি বার্সেলোনা তারকা ইভান রাকিতিচও। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে তিনিই ক্রোয়েশিয়ার শেষ পেনাল্টি কিকটি নেন। দলকে জেতাতেও সক্ষম হন। রাকিতিচের কথায়ও উঠে আসে দশ বছর আগের সেই স্মৃতি। তিনি বলছেন, ‘‘ঠিক দশ বছর আগে এ রকমই সুবর্ণ সুযোগ আমরা হাতছাড়া করেছিলাম। কিন্তু এই ম্যাচে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। জানতাম স্কেমিশেল ভাল গোলরক্ষক। কিন্তু নিজের ওপর থেকে বিশ্বাস হারাইনি।’’
মদ্রিচের পেনাল্টি নষ্ট নিয়ে এক ফোঁটাও ক্ষোভ প্রকাশ করেননি ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাটকো দালিচ। তিনি বরং জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি নষ্ট করার পরে নিজেই টাইব্রেকারে পেনাল্টি মারতে এগিয়ে গিয়েছিলেন মদ্রিচ। দালিচের বক্তব্য, ‘‘মদ্রিচ আমাকে মুগ্ধ করেছে। এক জন আসল অধিনায়কের এটাই পরিচয়। অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি নষ্ট করার পরে টাইব্রেকারে নিজেই পেনাল্টি নেওয়ার জন্য এগিয়ে এল। এটাও নষ্ট করলে ভাবুন তো ওর ওপর কতটা মানসিক চাপ পড়ত? কিন্তু দেশকে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলার দায়িত্ব থেকে পিছু হটেনি আমার অধিনায়ক।’’
রাকিতিচ ও মদ্রিচ টাইব্রেকারে গোল করলেও দানিয়েল সুবাসিচ তিনটি পেনাল্টি না আটকালে হয়তো শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিতে হত ক্রোয়েশিয়াকে। ম্যাচের পরে সুবাসিচকে মাথায় তুলে উৎসব পালন করেন ইভান পেরিসিচরা। যা করতে গিয়ে এক বার মাটিতে পড়ে গিয়ে আঘাত লাগে মোনাকোর গোলরক্ষকের। দালিচ অবশ্য জানিয়েছেন তাঁর গোলরক্ষকের চোট গুরুতর নয়। দালিচ বলেছেন, ‘‘উৎসব পালন করতে গিয়ে হাল্কা আঘাত লেগেছে সুবাসিচের। জয়ের নায়ককে নিয়ে উৎসব তো হবেই।’’ তিনটি পেনাল্টি বাঁচাতে আমি বেশি গোলকিপারকে দেখিনি। বিশ্বকাপে তো সেটা আরও কঠিন। এই ম্যাচে ওকেই সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল। ও সেটা করে দেখিয়েছে।’’