Neeraj Chopra

World Athletics Championship 2022: নীরজের সোনার অলিম্পিক্সে ফাইনালেই উঠতে পারেননি পিটারস, তার পর স্বপ্নের উত্থান

টোকিয়ো অলিম্পিক্সের আগে সোনা এসেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে। টোকিয়োতে ফাইনালে উঠতে না পারা পিটারস পাল্টে গেলেন তার পরেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ১৪:৩৩
Share:

পদক নিয়ে নীরজ এবং পিটারস। ছবি: রয়টার্স

ছ’বছর আগে যুব বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে নীরজ চোপড়া সোনা জিতে যখন নায়ক, সেই পদক তালিকায় একটি নাম প্রায় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল। অ্যান্ডারসন পিটারস। গ্রেনাডার সেই ক্রীড়াবিদ ২০২২ সালে নীরজকে হারিয়েই বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন। পর পর দু’বার। পুরুষদের মধ্যে পিটারস দ্বিতীয় ক্রীড়াবিদ যিনি বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে পর পর দু’বার সোনা জিতলেন।

Advertisement

রবিবার সকালে পিটারস যখন একের পর এক জ্যাভলিন ৯০ মিটার বেশি দূরত্বে ছুড়ছেন, তখন ভারতীয় সমর্থকদের মনে একটাই প্রশ্ন, টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পিটারস কি খেলেননি? পিটারস খেলেছিলেন। নীরজের প্রায় সমবয়সি পিটারস। তফাত মাত্র দু’মাসের। ২৪ বছরের পিটারস এবং নীরজ প্রায় একই সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নামেন। পদকও জেতেন। ২০১৬ যুব বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের মতো ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসেও সোনা জেতেন নীরজ এবং ব্রোঞ্জ পান পিটারস। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নীরজ সোনা জেতেন এবং পিটারস ফাইনালেই উঠতে পারেন না। তার পরেই পালাবদল।

অলিম্পিক্সের পর ভারতীয়দের কাছে একটা সংখ্যা খুব কাছের হয়ে যায়। ৮৭.৫৮। অলিম্পিক্সে ৮৭.৫৮ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়েই সোনা জিতেছিলেন নীরজ। যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকেই ছিটকে যাওয়া পিটারস ছুড়েছিলেন ৮০.৪২ মিটার। রবিবার নীরজ থামেন ৮৮.১৩ মিটারে। পিটারস ছোড়েন ৯০.৫৪ মিটার। ৯০ মিটারের উপরে মারা পিটারসের কাছে এখন রোজকার ব্যাপার।

Advertisement

দোহা ডায়মন্ড লিগে পিটারস সোনা জেতেন ৯৩.০৭ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়ে। ছবি: রয়টার্স

এই বছর দোহা ডায়মন্ড লিগে পিটারস সোনা জেতেন ৯৩.০৭ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়ে। রবিবারও তিন বার ৯০ মিটারের উপরে জ্যাভলিন ছোড়েন গ্রেনাডার এই অ্যাথলিট। সেখানে নীরজের ব্যক্তিগত এবং জাতীয় রেকর্ড ৮৯.৯৪ মিটার। এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিযোগিতায় ৯০ মিটার ছুঁতেই পারেননি নীরজ। অলিম্পিক্সের পর নীরজকে এতটা পিছনে ফেললেন কী করে পিটারস?

জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসাবে একের পর এক প্রতিযোগিতায় পদক পেলেও পিটারস চেয়েছিলেন উসেইন বোল্টের মতো দৌড়বিদ হতে। ছোড়ার ব্যাপারে এক সময় পর্যন্ত পিটারসের অভিজ্ঞতা ছিল পাথর ছুড়ে আম পাড়া আর ক্রিকেট বল ছোড়া। পিটারস বলেন, “আমি দেখতে চেয়েছিলাম জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসাবে আমি কী করতে পারি। ছোটবেলায় কোন জিনিস আমাকে জ্যাভলিনের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল তা মনে নেই। বাচ্চাদের দেখতাম জ্যাভলিন ছুড়তে। মনে হয়েছিল আমি ওদের থেকে বেশি দূরে ছুড়তে পারব।”

ক্রিস গেল, কায়রন পোলার্ডদের মতো পিটারসও এক জন ক্যারিবিয়ান। দু’বারের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ীরা যে ছোটবেলায় ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হবেন তা বলাই যায়। পিটারসও ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতেন। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই পাথর, ক্রিকেট বল ছুড়ে বড় হয়েছি। সেই ছোড়ার হাতেই জ্যাভলিন তুলে নিয়েছিলাম। অন্য জ্যাভলিন থ্রোয়ারদের মতো আমি অত শক্তিশালী নই। কিন্তু আমি ওদের থেকে দ্রুত ছুটতে পারি এবং অনেক বেশি বিস্ফোরক।”

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

বার বার চোট পাওয়ায় দৌড়বিদ হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যায় পিটারসের। অন্য ধরনের খেলায় মনোযোগ দিতে শুরু করেন তিনি। ২০১৬ সালে যুব বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে জ্যাভলিনে তাঁর ব্রোঞ্জ জয় বুঝিয়ে দেয় যে পিটারস ঠিক পথে রয়েছেন। ২০১৯ সালে দোহা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর সোনা জয় ছিল চমক। ক্যারিবিয়ান দেশ থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সেটাই ছিল ফিল্ড ইভেন্টসে প্রথম সোনা। পিটারস বলেন, “আমার কাছে ছোড়া খুব সাধারণ ব্যাপার। ছোটবেলা থেকে পাথর ছুড়ে আম, আপেল পাড়তাম। আমাদের দেশে আম গাছগুলো খুব উঁচু।”

আম পাড়তে পাড়তেই জ্যাভলিনের প্রস্তুতি সেরে ফেলা পিটারস এখন পদকও পাচ্ছেন সহজে। এখনও পর্যন্ত ৯০ মিটার ছুড়তে না পারা নীরজের কাছে ত্রাস হয়ে উঠছেন পিটারস। অলিম্পিক্সের পর তাঁর উত্থান চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে ভারতের সোনার ছেলের জন্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement