করোনাভাইরাসের আক্রমণে ক্রীড়াবিশ্ব থমকে থাকলেও দেখা গিয়েছে দুনিয়া জুড়ে নামীদামি সব তারকা সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। ভক্তদের সঙ্গে বা সতীর্থদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন, নিজেদের জীবনের নানা অজানা কাহিনি শোনাচ্ছেন। ব্যতিক্রম শুধু একজন। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তিনি সত্যিই নিভৃতবাসে রয়েছেন। কী করছেন না করছেন, তা নিয়ে একটা কথাও বলেননি ভারতের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ধোনি না এলেও তাঁর পত্নী সাক্ষীর অভিষেক ঘটল ইনস্টাগ্রাম লাইভে। চেন্নাই সুপার কিংসের সরকারি পেজে কথা বলতে এসে সাক্ষী শোনালেন ধোনির নিভৃতবাসের কর্মকাণ্ড। পাশাপাশি তুলে ধরলেন নানা অজানা কাহিনিও।
সাক্ষীর জীবনে ধোনি: আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়তাম। সেখান থেকে কলেজে। ফলে ক্রিকেট সে ভাবে দেখতাম না। হ্যাঁ, অবশ্যই সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম জানতাম। আর শুনেছিলাম, কে একটা লম্বা চুলের পাহাড়ি ছেলে দলে আছে। আমার মা ওর খুব ভক্ত ছিল। মায়ের কাছেই ওই পাহাড়ি ছেলের কথা শুনেছিলাম। পরে যখন আলাপ হয়, দেখলাম কোথায় লম্বা চুল। এ তো ছোটই। মাকে এসে বলিও সে কথা।
ক্যাপ্টেন কুল কতটা কুল: ধোনি মাঠে এতটাই শান্ত যে, লোকে মনে করে ওর মধ্যে আবেগের ছিটেফোঁটা নেই। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। ধোনি ক্রিকেট নিয়ে সত্যিই আবেগাক্রান্ত। ও খেলাটাকে যে দারুণ ভালবাসে। তবে ওর মাথা কিন্তু সত্যিই খুব ঠান্ডা। আমিই একমাত্র যে ওর মাথাটা গরম করে দিতে পারি। আর কেউ ওর সঙ্গে লড়াই বাধাতে পারবে না, আমি ছাড়া। আমার উপরেই যাবতীয় রাগ দেখায় মাহি, কারণ আমি যে ওর সব চেয়ে কাছের। বিয়ের দশ বছর পার হয়ে গেলে একে অন্যকে খুব ভাল ভাবে জানা হয়ে যায়। তাই তো বলছি, ওর সঙ্গে আমি ছাড়া আর কেউ লড়াই বাধাতে পারবে না।
লকডাউনে কর্মকাণ্ড: মাহির ন’টা বাইক আছে। ও এখন বসে বসে বাইকগুলো খুলছে, নতুন পার্টস কিনছে আর বাইকগুলোকে আবার জোড়া লাগাচ্ছে। এই করতে গিয়ে পরের দিন দেখা যাচ্ছে, একটা কিছু বাইকে লাগাতে ভুলে গিয়েছে। যার ফলে আবার বাইকটা পুরো খুলতে হচ্ছে! তার পরে ফের জোড়া লাগাচ্ছে।
ভিডিয়ো গেমসে ডুবে: ভিডিয়ো গেমস মাহিকে চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। ওর মস্তিষ্ক সব সময় কাজ করে চলেছে। কখনও বিশ্রাম নেয় না। এখন ক্রিকেট নেই। তাই যখন ভিডিয়ো গেমস খেলছে, তখন মাথাটা অন্য একটা দিকে খাটাচ্ছে। যেটা একটা দিকে ভাল। আর এখন পাবজি (জনপ্রিয় একটি ভিডিয়ো গেম) তো আমাদের বিছানাও দখল করে নিয়েছে। ইদানীং তো ঘুমের মধ্যেও পাবজি নিয়ে কথা বলে চলেছে মাহি।
ধোনি যখন অধিনায়ক: সফর চলাকালীন মাহি সব সময় ওর হোটেলের ঘরের দরজা খোলা রাখত। সেই ২০১০ সাল থেকে (ধোনি-সাক্ষীর বিয়ের সময়) আমি ব্যাপারটা দেখে আসছি। অনেকে আসত, আমরা ঘরে আড্ডা দিতাম। এমনকি ভোর তিনটে-চারটে পর্যন্ত সেই আলাপ-আলোচনা চলত। যখন দেখতাম, ওরা ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে এসেছে, তখন আমি ওখান থেকে উঠে যেতাম।
ধোনির অবসর বিতর্ক: মাহি বা আমি কেউ খবর বা টুইটার দেখি না। সে দিন (বুধবার) ওর অবসর নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, আমার এক বন্ধু মেসেজ করে বলে, এ সব কী হচ্ছে। তার পরে আমি জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে টুইটটা করি। পরে অবশ্য মুছেও দিই। কারণ যে বার্তাটা দিতে চেয়েছিলাম, সেটা দিতে পেরেছিলাম।
লকডাউনের পরে কী: যদি ক্রিকেট হয়, তা হলে ক্রিকেটই প্রাধান্য পাবে। তবে মাহি আর আমার পরিকল্পনা আছে পাহাড়ের দিকে যাওয়ার। আমরা উত্তরাখণ্ডের দিকে যেতে পারি। ছোট, ছোট গ্রামগুলোয় থাকলাম। গাড়ি নিয়ে সড়কপথে যাব, কোনও বিমানে নয়।
সাক্ষীর ইনস্টাগ্রামে লাইভ চ্যাট চলার সময়েই হঠাৎ করে সেখানে দেখা যায় বলিউডের নায়ক রণবীর সিংহের মন্তব্য। তিনি লেখেন, ‘‘কী চলছে সাকস। দুরন্ত অভিষেক।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ধোনি-ভক্তদেরও সেই একই কথা। সাক্ষীর ধমাকা-অভিষেক।