তিরন্দাজ শীতল দেবী। —নিজস্ব চিত্র।
জন্ম থেকেই বিরল রোগ ‘ফোকোমেলিয়া’য় আক্রান্ত। ফলে বেড়ে ওঠেনি হাত। কিন্তু তাতেও দমে যায়নি জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ারের লোইধার গ্রামের ১৬ বছর বয়সী তিরন্দাজ শীতল দেবী। চিনে আয়োজিত প্যারা এশিয়ান গেমসে শুক্রবার সোনা জিতেছে শীতল। এই নিয়ে তিনটি সোনা জিতল শীতল। এশিয়ান গেমসের একটি সংস্করণে দু’টি বা তার বেশি স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা শীতল। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
এ বছর প্যারা এশিয়ান গেমসে মহিলাদের ডবলসে রূপো এবং মিক্সড ডাবলসে সোনা জিতেছিল শীতল। শুক্রবার একক ইভেন্টে ফের সোনা জিতল শীতল। এই জয়ের ফলে ২০২৩ প্যারা এশিয়ান গেমসে ভারতের মোট পদক সংখ্যা দাঁড়াল ৯৯।
মাত্র দু’বছর আগেই তীর-ধনুক নিয়ে অনুশীলন শুরু করে শীতল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শীতল বলে, “প্রথম দিকে ধনুক ধরতেই পারতাম না। পরে অনুশীলন করার পর ঠিক হয়েছে। আমার বাবা-মা কখনও আমার উপর বিশ্বাস হারাননি। আমার বন্ধুরাও আমাকে অনেক সমর্থন করেছে।” শীতল আরও বলে, “একটি বিষয়ই আমার পছন্দ নয়। তা হল আমার হাত নেই বলে সবাই যখন বিশেষ দৃষ্টিতে আমায় দেখেন। তাঁদের ভুল প্রমাণ করার জন্যই এই পদক। এই পদক শুধু আমার নয়, গোটা দেশের।”
অনুশীলনের শুরুতে দৈনিক ৫০ থেকে ১০০টি তীর ছুঁড়ত শীতল। কখনও কখনও তা ৩০০ তেও পৌঁছে যেত। সোনপতে অনুষ্ঠিত প্যারা ওপেন ন্যাশনাল্সে রৌপ্যপদক জিতেছিল শীতল। তার দুই কোচ অভিলাষা চৌধরী এবং কুলদীপ ভেদওয়ান এর আগে কখনই হাত নেই এরকম কোনও তীরন্দাজকে প্রশিক্ষণ দেননি। শীতলই প্রথম। ২০১২ লন্ডন প্যারালিম্পিক্সে রৌপ্যপদক বিজয়ী ম্যাট স্টুটজম্যান তীর ছোড়ার জন্য যে ভাবে তাঁর পা ব্যবহার করছেন তা দেখে শীতলকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই বছরের শুরুতে শীতল চেক প্রজাতন্ত্রের পিলসেনে বিশ্ব প্যারা আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য পদক জিতেছিল। ফাইনালে তুরস্কের ওজনুর কিউরের কাছে হেরে গিয়েছিল সে।