অ্যালবাম: ১৯৫৮ সালে কলকাতা লিগজয়ী ইস্টার্ন রেল দল। ফাইল চিত্র
দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ছয় দশক। সেই ১৯৫৮ সালের অগস্টে কলকাতা ময়দানের তিন বড় দলকে টপকে ইস্টার্ন রেলের হয়ে কলকাতা লিগ জিতেছিলেন তাঁরা।
ছয় দশক আগের সেই ইতিহাস গড়ার নায়ক প্রদীপ (পিকে) বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স এখন ৮৩। সে বার কলকাতা লিগে তিনি ১২ গোল করেছিলেন ইস্টার্ন রেলের জার্সি গায়ে। রবিবার পিয়ারলেসের জয়ের পরে তাঁকে যখন ফোনে ধরা হল, ময়দানের প্রবীণ কোচ ততক্ষণে জেনে গিয়েছেন ম্যাচের ফল। সল্টলেকের বাড়িতে বসেই তিনি বলে দেন, ‘‘১৯৫৮ সালে আমাদের ইস্টার্ন রেলের কোচ ছিলেন বাঘা সোম। লিগ চ্যাম্পিয়ন সেই দল থেকে প্রদ্যোৎ বর্মন, অসীম সোম, নিখিল নন্দী, সুনীল নন্দী, বুরন বসুর মতো বাঙালি ছেলে উঠে এসেছিল। পিয়ারলেসের এই দলেও তো শুনলাম গোটা দশেক বাঙালি ছেলে রয়েছে। আশীর্বাদ করছি ওরা যেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমাদের স্পর্শ করতে পারে। তিন প্রধানে না খেলেও যে লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায়, আমাদের মতো সেটা প্রমাণ করুক জহর দাসের ছেলেরাও।’’
সে বারের ইস্টার্ন রেল দলে পিকে-র সঙ্গেই খেলেছিলেন নিখিল নন্দী। নাগেরবাজারের বাড়িতে বসেই ৮৪ বছরের এই প্রাক্তন ফুটবলার বলছেন, ‘‘নক-আউট প্রতিযোগিতায় জেতা কিছুটা সহজ। কিন্তু একটা লম্বা লিগ জেতা খুবই কষ্টকর ব্যাপার। কাজেই পিয়ারলেসের এই সাফল্যকে সম্মান জানাতেই হবে। খুব খুশি হব, যদি এ বারের কলকাতা লিগটা পিয়ারলেসই পায়। ওরাই লিগ জয়ের যোগ্য দাবিদার।’’
নিখিলের ভাই সুনীল নন্দীও সে বারের লিগ জয়ী ইস্টার্ন রেল দলে ছিলেন। বর্তমানে বেলেঘাটার বাসিন্দা ৭৬ বছরের সুনীলবাবু পেশায় আইনজীবী। তিনি আবার উচ্ছ্বসিত বাংলার ছেলেদের নিয়ে বাংলার একটি অফিস দলের সাফল্যে। বলছেন, ‘‘বাঙালি ছেলেদের কলকাতা লিগে নজর কাড়ার জন্য একটা তাগিদ বা আবেগ থাকে। ক্রোমার মতো দক্ষ বিদেশির সঙ্গে বাঙালি ছেলেদের নিয়ে দল গড়ায় সেই আবেগের মূল্য পেল পিয়ারলেস। খুশি হব ওরা লিগ জিতলে। পিয়ারলেস লিগ জিতলে একটা পরিবর্তনের সূচনা হতে পারে। তথাকথিত ছোট দলগুলো বিশ্বাস করতে পারে, বড় দলকে পিছনে ফেলে লিগ জেতা যায়। যা আমাদের পরে হয়নি।’’