উইম্বলডনের সাদা পোশাক নিয়ে প্রশ্ন রজারের

কয়েকটা ঘটনা বলা যাক। ২০১৩ সালে ফেডেরার নিজেই শিকার হয়েছিলেন। যখন তাঁর জুতোয় থাকা কমলা রঙ নিয়ে আপত্তি উঠেছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৭
Share:

অনুশীলনে: বিরতির দিনেও বিশ্রাম নেই ফেডেরারের। ছবি: রয়টার্স

অল ইংল্যান্ড ক্লাবের প্রথা অনুযায়ী রবিবার উইম্বলডনে কোনও খেলা হল না। তবে দুই তারকা সরগরম করে রাখলেন ঘাসের কোর্টের গ্র্যান্ড স্ল্যাম। রজার ফেডেরার এবং নোভাক জোকোভিচ।

Advertisement

সুইস মহাতারকা এ বার রেকর্ড নবম খেতাব জেতার সামনে দাঁড়িয়ে। দুরন্ত ছন্দে আছেন। টানা ২৯টা সেট জিতে সোমবার চতুর্থ রাউন্ডের লড়াইয়ে নামবেন আদ্রিয়ান মানারিনোর বিরুদ্ধে। তার আগে উইম্বলডনের সাদা পোশাকের ঐতিহ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন। টেনিস বিশ্বের চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে এক মাত্র উইম্বলডনেই সাদা পোশাকে কোর্টে নামতে হয় খেলোয়াড়দের। উনবিংশ শতক থেকে এই ঐতিহ্য মেনে আসা হচ্ছে।

এমন নয় যে ফেডেরার এই ঐতিহ্যকে সম্মান করেন না। তবে ঐতিহ্য রক্ষা নিয়ে কড়াকড়ির বিরুদ্ধে। ‘‘এই ঐতিহ্যটা দারুণ এবং মজার। জানি এখন যিনি অল ইংল্যান্ড ক্লাবের চেয়ারম্যান, ফিল ব্রুক তিনিও কড়া ভাবে এই ঐতিহ্য মেনে চলার পক্ষে। যে রকম পাঁচ বা ছয়ের দশকে হত। তবে সত্যি কথা বলতে, এই সাদা পোশাকের মধ্যেই কিছু রঙের ছোঁয়া থাকলে আরও ভাল হয়।’’ ২০ গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন আরও বলেছেন, ‘‘এক সময় বর্গ, ম্যাকেনরো লাল পোশাকে উইম্বলডনে নেমেছিলেন। বলছি না, সেটা আবার হওয়া উচিত। তবে সাদার সঙ্গে অন্য রঙের মিশ্রনও থাকুক।’’

Advertisement

ফেডেরার মনে করেন যদি উইম্বলডন তাঁর প্রস্তাব মতো নিয়ম একটু শিথিল করে তা হলে বিভিন্ন স্পনসরের কাছেও সাদা আর অন্য রঙের মিশ্রনে নতুন নতুন পোশাক তৈরি করার একটা চ্যালেঞ্জ থাকবে।

কতটা কড়া উইম্বলডন তাদের সাদা পোশাকের ঐতিহ্য নিয়ে?

কয়েকটা ঘটনা বলা যাক। ২০১৩ সালে ফেডেরার নিজেই শিকার হয়েছিলেন। যখন তাঁর জুতোয় থাকা কমলা রঙ নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। সেটা নিয়ে অবশ্য খুব একটা হইচই হয়নি। তবে ২০০৭ সালে ফ্রান্সের তাতিয়ানা গোলোভিন তার ধবধবে সাদা পোশাকের সঙ্গে লাল অন্তর্বাস পরে চমকে দিয়েছিলেন। ম্যাচের পরে গোলোভিনকে মোট ১৫টা প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১০টাই লাল অন্তর্বাস নিয়ে।

২০১৭ সালে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ভিনাস উইলিয়ামসকেও বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অন্তর্বাস পাল্টাতে হয়েছিল। কারণ তাঁর গোলাপি অন্তর্বাসের কিছুটা দৃশ্যমান ছিল। এই কড়াকড়ি নিয়ে হইচই হয় গত বছরও। জুনিয়র ইভেন্টে এক দল বালকের অন্তর্বাস কোর্টেই পরীক্ষা করে বদলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তার মধ্যে এক জন হাঙ্গেরির সম্বর পিরোস প্রতিবাদ করে বলে উঠেছিল, ‘‘নীল-কালো অন্তর্বাস আমাদের সৌভাগ্যের প্রতীক। সেটা পাল্টে যে সাদা অন্তর্বাস পরতে হয়েছিল তাতে একেবারেই স্বচ্ছন্দ ছিলাম না।’’

চলতি বছরেও উইম্বলডনের অন্তর্বাস পুলিশের নজরে পড়ায় এমনই একটি ঘটনা ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার জন মিলম্যানকে যে জন্য সমস্যায় পড়ে যেতে হয় মিলোস রাওনিচের বিরুদ্ধে ম্যাচে নামার আগে। শেষ পর্যন্ত তাঁর বাবাকে উইম্বলডনের কাছাকাছি দোকানে দৌড়তে হয় সাদা অন্তর্বাস কিনতে।

তবে এই ঐতিহ্যের সমর্থকও কম নেই। যার মধ্যে সাত বারের চ্যাম্পিয়ন সেরিনা উইলিয়ামসও আছেন। ‘‘আমার তো দারুণ লাগে এই ঐতিহ্যটা। আর কোথাও এটা দেখা যায় না। সবুজ ঘাসের উপর ধবধবে সাদা পোশাকে নামার ব্যাপারই আলাদা।’’

শুধু পোশাক নিয়েই নয়, বিতর্ক উঠেছে সেন্টার কোর্টের দর্শকদের আচরণ নিয়েও। যা নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ নোভাক জোকোভিচ। তৃতীয় রাউন্ডে শনিবার কাইল এডমান্ডের বিরুদ্ধে চার সেটের লড়াইয়ে জেতেন নোভাক। তাঁর অভিযোগ ম্যাচ চলাকালীন দর্শকদের একাংশ ‘শিস দিয়ে, কাশির শব্দ করে’ তাঁর মনসংযোগে ব্যঘাত ঘটানোর চেষ্টা করে। ‘‘দর্শকদের একাংশের এ রকম ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন ছিল না। ম্যাচটার শেষের দিকে আমি বল বাউন্স করানোর সময় কেউ কেউ শিস দিচ্ছিল, কাশছিল। এগুলো টিভিতে বোঝা যায় না। এগুলোর কোনও দরকার ছিল না। আমার এ সব একেবারে পছন্দ নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement