প্রতীকী ছবি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রাশিয়া এবং বেলারুশের টেনিস খেলোয়াড়দের উইম্বলডনে খেলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাব। পাল্টা প্রতিবাদে এটিপি এবং ডব্লুটিএ বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম থেকে পয়েন্ট সরিয়ে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে অসম বলে মন্তব্য করেছেন উইম্বলডন আয়োজকরা।
উইম্বলডন নিয়ে ইংরেজরা বড্ড খুঁতখুঁতে। নিজেদের ঐতিহ্য বজার রাখার ব্যাপারে অত্যন্ত রক্ষণশীলও বটে। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিযোগিতা হঠাৎই গুরুত্ব হারিয়েছে। কারণ রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদালরা চ্যাম্পিয়ন হলেও কোনও পয়েন্ট পাবেন না। এই প্রতিযোগিতার জন্য টেনিসের বিশ্ব ক্রমতালিকাতেও কোনও পরিবর্তন হবে না।
এটিপি এবং ডব্লুটিএ— এই দু’সংস্থার বক্তব্য, বিভিন্ন প্রতিযোগিতার জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম হতে পারে না। খেলোয়াড়রা প্রতিযোগিতাগুলিতে অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে। তা ছাড়া যুদ্ধের জন্য টেনিস খেলোয়াড়রা কোনও ভাবেই দায়ী নন। পয়েন্ট না থাকায় অনেক টেনিস খেলোয়াড়ই আগ্রহ হারাচ্ছেন এ বারের উইম্বলডন নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হতাশ উইম্বলডনের আয়োজকরা।
এটিপি-র সিদ্ধান্ত নিয়ে উইম্বলডনের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে প্রভাব পড়ছে, তাতে আমরা খুবই হতাশ।’’ বিশ্বের দু’নম্বর পুরুষ খেলোয়াড় রাশিয়ার ড্যানিয়েল মেডভেদেভ বলেছেন, ‘‘আমাকে যদি খেলতেই না দেওয়া হয়, তা হলে আমি কোর্টে গিয়ে কী করব!’’ উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক টেনিস সংস্থাও জানিয়েছে, জুনিয়র এবং হুইল চেয়ার উইম্বলডন থেকে পয়েন্ট সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
উইম্বলডন আয়োজকরা হতাশ হলেও তাঁদের পক্ষে বলা হয়েছে, ‘‘একটা যুদ্ধ ৮৫ দিন ধরে চলছে। অথচ রাশিয়া বা বেলারুশের এক জন টেনিস খেলোয়াড়ও ঘটনার নিন্দা করেননি। এটা টেনিসের জন্য খুবই হতাশার। আমরা এটিপিকে আরও এক বার ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট না থাকলে ভ্লাদিমির পুতিন বা ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।’’ ব্রিটেন সরকারের সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া সচিব ন্যাদিন ডরিস বলেছেন, ‘‘উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমরা তার সঙ্গে সম্পূর্ণ সহমত। ওঁরা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।’’
জোড়া চাপে কার্যত দিশাহারা উইম্বলডনের আয়োজকরা। এক দিকে দেশের সরকারের চাপ। অন্য দিকে টেনিস নিয়ামক সংস্থার চাপ। পরিস্থিতি যা তাতে, ঐতিহ্য, গর্বের উইম্বলডনই এখন সব থেকে বড় সমস্যা অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের।