Wimbledon 2023

সেমিফাইনালে ‘কাঁদলেন’ জোকোভিচ! ক্ষোভ প্রকাশ আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্ত নিয়েও

উইম্বলডনে রোখা যাচ্ছে না জোকোভিচকে। সেমিফাইালেও অনায়াসে জয় পেলেন সরাসরি সেটে। তবু সিনারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মাঝে তাঁকে কাঁদতেও দেখা গিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৩:০৭
Share:

নোভাক জোকোভিচ। ছবি: টুইটার।

উইম্বলডন সেমিফাইনাল খেলতে নেমে ‘কেঁদে’ ফেললেন নোভাক জোকোভিচ। শুক্রবার ইয়ানিক সিনারকে সরাসরি সেটে হারিয়ে নবম বার উইম্বলডন ফাইনালে উঠেছেন তিনি। তবু খেলার মাঝে তাঁকে এক বার ‘কাঁদতে’ দেখা গিয়েছে।

Advertisement

অষ্টম বাছাই ইটালির তরুণকে প্রথম দু’সেটে সহজে ৬-৩, ৬-৪ গেমে হারিয়ে দেন জোকোভিচ। ০-২ সেটে পিছিয়ে পড়ার পর তৃতীয় সেটে মরিয়া লড়াই করেন সিনার। একটা সময় তিনি ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। দশম গেমে ছিল জোকোভিচের সার্ভিস। সেই গেমে সার্ভিস ভাঙতে পারলে সেট জিততে পারতেন সিনার। উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে উপস্থিত দর্শকেরা হয়তো চেয়েছিলেন আরও বেশি ক্ষণ খেলা দেখতে। তাই তৃতীয় সেটের দশম গেমে দর্শকদের প্রায় সকলেই সমর্থন করছিলেন সিনারকে। সিনার তিনটি সেট পয়েন্ট পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। তাতে দর্শকদের আশা আরও বাড়ে। কিন্তু নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ৫-৫ করেন জোকোভিচ। গেম জেতার পর দর্শকেরাও তাঁকে অভিনন্দন জানান। আর এই গেমের পর ‘কাঁদতে’ দেখা গিয়েছে জোকোভিচকে।

দ্বিতীয় বাছাই জোকোভিচ আসলে কাঁদেননি। কাঁদার মতো অভিনয় করেছেন। মজার ছলে টেনিসপ্রেমীদের কিছুটা বিদ্রুপ করেছেন। তৃতীয় সেটের দশম গেমে প্রায় সকলেই সিনারের জয় চাইছিলেন। ইটালির তরুণ পয়েন্ট পেলেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন তাঁরা। সেটাই হয়তো পছন্দ হয়নি জোকোভিচের। শেষ পর্যন্ত সিনার হেরে যাওয়ায় দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তাঁরা আশাহত হওয়ায় কাঁদার অভিনয় করে জবাব দিয়েছেন জোকোভিচ।

Advertisement

আসলে জোকোভিচের সঙ্গে উইম্বলডনের দর্শকদের অম্লমধুর সম্পর্ক। তিনি যত বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, প্রতি বারই সেন্টার কোর্ট তাঁকে বরণ করে নিয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে বার বার তাঁকে বিদ্রুপও করেছেন উইম্বলডনের দর্শকেরা। জোকোভিচও বার বার বলেছেন, ‘‘যতই দর্শকেরা আমাকে অপছন্দ করুন, এখানে খেলতে আমি ভালবাসি।’’

ম্যাচের মধ্যে বিতর্কেও জড়িয়েছেন জোকার। দ্বিতীয় সেটে চেয়ার আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্ত তাঁর পছন্দ হয়নি। জোকোভিচ সার্ভিস করতে দেরি করছেন বলে আম্পায়ার শাস্তি হিসাবে একটি পয়েন্ট সিনারকে দিয়ে দেন। সিনার একটি রিটার্ন করার সময় জোকোভিচ হঠাৎ চেঁচিয়ে ওঠেন। শট মারার পরেও চিৎকার করার জন্য চেয়ার আম্পায়ার তাঁকে সতর্ক করেন। তা নিয়ে চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান জোকোভিচ। ফলে তাঁর পরের সার্ভিসটি করতে দেরি হয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও তা নিয়ে নিজের অসন্তোষ গোপন করেননি। ফাইনালে ওঠার পর জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘চেয়ার আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। এটাই নিয়ম। কিন্তু আমার সঙ্গে এরকম আগে কখনও হয়নি। আমি রিপ্লেও দেখেছি। তার পরেও আমার মনে হয়েছে চেয়ার আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। যদিও হতাশ হইনি। মানসিক ভাবে নিজেকে ঠিক জায়গায় রাখার চেষ্টা করেছি। হয়তো সাময়িক ভাবে বিচলিত হয়েছিলাম। কারণ ওই সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারিনি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমরা একটা ব্যক্তিগত খেলা খেলি। তাই নিজের উপরই নির্ভরশীল থাকতে হয়। কোর্টে নামার আগে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নিজেকে সেরা জায়গায় রাখতে হয় আমাদের।”

ফাইনালে ওঠার পর জোকোভিচ মনে করছেন তাঁর বয়স ১০ বছর কমে গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘৩৬ বছর বয়সে মনে হচ্ছে এটা নতুন ২৬। নতুন করে অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এই খেলাটা আমাকে এবং আমার পরিবারকে অনেক কিছু দিয়েছে। তাই যত দিন সম্ভব খেলে টেনিসকে যতটা সম্ভব ফিরিয়ে দিতে চাই।’’ সিনারের প্রশংসাও শোনা দিয়েছে তাঁর মুখে। সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘স্কোর লাইন দেখে সবসময় বোঝা যায় না, কতটা কঠিন লড়াই হয়েছে। যথেষ্ট হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। সিনারকে কেন আগামী দিনের সেরাদের মধ্যে ধরা হচ্ছে, সেটা ও বুঝিয়ে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের এক জন সিনার।’’

রবিবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে উইম্বলডনে নতুন নজির গড়বেন জোকোভিচ। রজার ফেডেরারের সর্বোচ্চ আট বার খেতাব জয়ের নজির ছোঁবেন তিনি। এর আগে পর্যন্ত আট বার ফাইনাল খেলে সাত বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জোকোভিচ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement