সেরিনা উইলিয়ামস ছবি রয়টার্স।
এক বছর আগে যে সেন্টার কোর্ট থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বিদায় নিয়েছিলেন, সেই সেন্টার কোর্টেই মঙ্গলবার নেমেছিলেন। কিন্তু এক বছর পরে টেনিসে ফেরাটা খুব একটা সুখের হল না সেরিনা উইলিয়ামসের। ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা ৪০ বছরের সেরিনা উইম্বলডনের প্রথম রাউন্ডেই ৫-৭, ৬-১, ৬-৭ (৭-১০) গেমে হারলেন ফ্রান্সের হারমনি ট্যানের কাছে। শুরুতেই ছিটকে গেলেও সেরিনা যে ফিটনেসের দিক থেকে একেবারেই পিছিয়ে নেই, সেটা ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিটের লড়াইয়ে বার বার বুঝিয়ে দিয়েছেন। জয়ের থেকে মাত্র দু’পয়েন্ট দূরে ছিলেন। সেই কারণে ম্যাচের পরে যখন অবধারিত ভাবে প্রশ্নটা ওঠে যে, ‘‘এটিই কি আপনার শেষ উইম্বলডন হয়ে গেল’’, তখন সাত বারের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘‘এর জবাব আমি দিতে পারব না। কে বলতে পারে, আমি তো আবার ঘুরে দাঁড়াতেই পারি।’’
গত বছর প্রথম রাউন্ডে আলিয়াকসান্দ্রা সাসনোভিচের বিরুদ্ধে ম্যাচে যখন গোড়ালি মচকে কাঁদতে কাঁদতে সেন্টার কোর্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনও এই প্রশ্নটাই উঠেছিল। কিন্তু চোট এবং বয়সকে হারিয়ে সেরিনা ফিরে এসেছেন আবার।
এই মুহূর্তে ক্রমতালিকায় ১২০৪ নম্বরে থাকা সেরিনা ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে খেলতে নামেন। শুরু থেকেই বুঝিয়ে দেন, তাঁকে ওয়াইল্ড কার্ড দিয়ে ঠিকই করেছেন উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ। উইম্বলডনে অভিষেক হওয়া অখ্যাত ট্যানের কাছে প্রথম গেমেই সার্ভিস ব্রেক হওয়ার পর সেরিনা যে ভাবে পরের গেমেই ঘুরে দাঁড়ান, মনে হয়েছিল, তিনি অনেক দূর যাবেন। তখন তিনি কোর্ট জুড়ে দৌড়চ্ছেন। এতটাই জোরে দৌড়চ্ছেন যে চোটের জন্য এক বছর কোর্টের বাইরে থাকা এক জনের পক্ষে সেটা কতটা করা উচিত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাঁর হাত থেকে তখন বেরচ্ছে সেই মার্কা মারা শক্তিশালী সব স্ম্যাশ। কিন্তু একাদশ গেমে ব্রেক পয়েন্ট পেয়ে যান ট্যান। ফোরহ্যান্ড উইনারে প্রথম সেট জিতে নেন তিনি।
তখন টেনিস বেশ উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। কয়েকটি পয়েন্টের লড়াই এতটাই দীর্ঘ এবং উত্তেজক ছিল যে আম্পায়ারকে বার বার দর্শকদের থামাতে হয়েছে। দ্বিতীয় সেটের ফল দেখলে মনে হতে পারে, সেরিনা হয়ত সহজেই জিতেছেন, কিন্তু ব্যাপারটা তা হয়নি। শুধু দ্বিতীয় গেমটাই চলে ২০ মিনিট ধরে। ১২টি ডিউস হয়। শেষ পর্যন্ত ৬-১ ফলে জেতেন সেরিনা।
তৃতীয় সেটে সেরিনা শুরুতে ট্যানের সার্ভিস ব্রেক করে এগিয়ে যান। কিন্তু পরের গেমেই ট্যান ম্যাচে ফিরে আসেন। ৫-৪ গেমে যখন ট্যানের সার্ভিস ব্রেক করে সেরিনা এগিয়ে যান, তখন তাঁর উল্লাস দেখে মনে হচ্ছিল, উইম্বলডনটাই বোধ হয় জিতে গিয়েছেন। জিতে গিয়েছিলেনও। ৩০-১৫ পয়েন্টে যখন ম্যাচ জেতার জন্য সার্ভিস করছেন, তখন ট্যান তাঁর সার্ভিস ভেঙে দেন। টাই ব্রেকারেও ৪-০ এগিয়ে গিয়েছিলেন সেরিনা। টিভিতে সেরিনার খেলা দেখে বড় হওয়া ১১৫ নম্বরের ট্যান মাথা ঠাণ্ডা রেখে ম্যাচ বার করে নেন।