দিল্লিতে এনআইএ আধিকারিকদের সঙ্গে তাহাউর রানা। ছবি: পিটিআই।
২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৮ দিনের হেফাজতে পেয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। নয়াদিল্লির সিজিও কমপ্লেক্সে এনআইএ দফতরের একটি উচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন কুঠুরিতে তাঁকে রাখা হয়েছে। সূত্রের খবর, এনআইএ হেফাজতে মোট তিনটি জিনিসের জন্য আবেদন করেছেন রানা। তাঁকে সেগুলি দেওয়াও হয়েছে। তিনি চেয়েছেন কাগজ, কলম এবং কোরান। জেরার সময় ছাড়া দিনের বাকি সময় তা নিয়েই কাটিয়ে দিচ্ছেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রানাকে যে কুঠুরিতে রাখা হয়েছে, তার বাইরে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি রয়েছে। নজরদারির জন্য মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তারক্ষীদের। এ ছাড়া কুঠুরির ভিতরে রয়েছে সিসি ক্যামেরা। হিন্দুস্তান টাইম্সকে এনআইএ-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আর পাঁচ জন সাধারণ বন্দির মতোই দেখা হচ্ছে রানাকেও। কোনও বাড়তি সুবিধা তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর জন্য আলাদা কোনও করে কোনও সুযোগসুবিধার বন্দোবস্ত করা হয়নি। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘এনআইএ হেফাজতে উনি কোরান চেয়েছিলেন। তা ওঁকে দেওয়া হয়েছে। নিজের কুঠুরির ভিতরে দিনে পাঁচ বার নমাজ পড়েন।’’ রানাকে ‘ধার্মিক মানুষ’ বলেও উল্লেখ করেছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিক।
রানার অনুরোধে তাঁকে কাগজ-কলম দেওয়া হয়েছে বটে, কিন্তু তা নিয়ে সতর্ক এনআইএ আধিকারিকেরা। যে পেনটি তাঁকে দেওয়া হয়েছে, তার মাধ্যমে রানা যাতে কোনও ভাবে নিজের কোনও ক্ষতি করার চেষ্টা না-করেন, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সবসময় কেউ না কেউ তাঁর কার্যকলাপের দিকে চেয়ে আছেন। এই তিনটি জিনিস ছাড়া আর কোনও অনুরোধ রানা করেননি।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এক দিন অন্তর অন্তর আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন রানা। দিল্লি আইন পরিষেবা কর্তৃপক্ষ (ডিএলএসএ) সেই আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দেবে। এ ছাড়া, ৪৮ ঘণ্টা অন্তর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে।
অভিযোগ, ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইতে সন্ত্রাসবাদী হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন পাক বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানা। ওই হামলার কয়েক দিন আগে তিনি ভারতেও এসেছিলেন। এত দিন আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন রানা। সম্প্রতি তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে এনআইএ। তাঁকে জেরার মাধ্যমে ২৬/১১ হামলার সম্পর্কে আরও অজানা তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।