মহড়া: উইম্বলডনের জন্য তৈরি হচ্ছেন নোভাক। প্রস্তুত রাফা।
এ বার উইম্বলডনে কোর্টে বল পড়ার আগেই থেকেই কিন্তু বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। বিতর্ক রুশ হামলার জন্য সে দেশের এবং বেলারুশের খেলোয়াড়দের এ বারের প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে। কেউ কেউ উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন, আবার অনেকেই এর বিরোধী। পুরুষ ও মহিলা টেনিসের দুই পেশাদার সংস্থা এটিপি এবং ডব্লুটিএ ব্যাপারটা মেনে নেয়নি। তাই উইম্বলডনে এ বার কোনও র্যাঙ্কিং পয়েন্ট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এটা ঠিক কী ভুল, সেই বিতর্কে আমি যাব না। তবে বহুদিন পরে উইম্বডনে এ বার এক এবং দু’নম্বর বাছাই হিসেবে দেখা যাচ্ছে নোভাক জোকোভিচ এবং রাফায়েল নাদালকে। পুরুষদের সিঙ্গলসে যে দু’জনের উপরে নজর থাকবে সবার। ড্র-এ দু’জন আলাদা অর্ধে রয়েছে অর্থাৎ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ফাইনালে দেখা হতে পারে বিশ্ব টেনিসের দুই কিংবন্তির।
নাদাল এ মরসুমে পরপর দুটো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে ফেলেছে। ২২টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম এখন ওর। জোকোভিচকে ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়েছে। তবুও আমার কাছে ট্রফি জয়ের দৌড়ে এগিয়ে জোকোভিচ। ও শুধু ছ’বারের চ্যাম্পিয়নই নয়, টানা তিন বার জিতেছে এখানে। ফিটনেসের দিক থেকে ওর কোনও সমস্যা নেই। দুরন্ত রিটার্ন করতে পারে। যেটা ওর সবচেয়ে বড় অস্ত্র। জানি না নাদালের পায়ের চোট এখন কী অবস্থায় রয়েছে। ফরাসি ওপেনের শেষে তো রটে গিয়েছিল নাদাল এ বার উইম্বলডনে খেলবে না। হাঁটুর চোট এতটাই ভোগাচ্ছে যে রোলঁ গারোজে ম্যাচে নামার আগে ব্যথা কমানোর ইঞ্জেকশন নিয়ে ওকে খেলতে হয়েছে। তার পরেও কেন ও উইম্বলডনে এ বার খেলতে রাজি হল সেই প্রশ্ন অনেকের মনেই উঠতে পারে। আমার মতে নাদাল অঙ্ক কষেই এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে। কারণ বিশ্বের এক নম্বর রাশিয়ার দানিল মেদভেদেভ খেলছে না। চোটের জন্য খেলবে না আলেকজান্ডার জ়েরেভও। এই অবস্থায় যদি ও ভাল ড্র পায় তা হলে ২৩নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার সুযোগ থাকবে। সেই কারণেই হয়তো নাদাল এ বার খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে তরুণ প্রজন্মের খেলোয়াড়দের মধ্যে অনেকেই কিন্তু এ বার জোকোভিচ, নাদালদের কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারে। যেমন স্টেফানোস চিচিপাস রয়েছে যে গত বছর ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠেছিল। মাত্তেয়ো বেরেত্তিনি রয়েছে। ইটালির এই ছেলেটা দুটো প্রস্তুতি প্রতিযোগিতা জিতেছে। গত বার উইম্বলডনের ফাইনালেও উঠেছিল। স্পেনের কার্লোস আলকারাজ় আছে। কানাডার ফেলিক্স অগার আলিয়াসমে রয়েছে। যে ফরাসি ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে নাদালের কাছে হেরেছিল। উইম্বলডনে কোয়ার্টার ফাইনালে আবার মুখোমুখি হতে পারে নাদাল-ফেলিক্স। আমার মতে বেরেত্তিনি এ বার ‘কালো ঘোড়া’।
মেয়েদের সিঙ্গলসে সেরিনা আকর্ষণের কেন্দ্রে। এক বছর পরে উইম্বলডনে ফিরে আসায়। তবে বিশ্বের এক নম্বর, ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন ইগা শিয়নটেক ট্রফি জেতার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে। টানা ৩৫টি ম্যাচ জিতেছে পোল্যান্ডের মেয়েটা। আত্মবিশ্বাসের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। তাই ওকে হারানো সহজ নয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ওপেন চ্যাম্পিয়ন ব্রিটেনের এমা রাদুকানু রয়েছে। নিজের দেশে গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চাপ সামলে রাদুকানু কত দূর যেতে পারে সেটা দেখার। শেষে বলব আমাদের সানিয়া মির্জার কথা। এ বারই হয়তো শেষ উইম্বলডনে নামবে সানিয়া। তাই ওর উপরেও আমাদের অনেক আশা থাকবে।