৩০ বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে পা রাখলেন জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স
তিনি বিশ্বের এক নম্বর। রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদালকে ছোঁয়ার সুযোগ তাঁর সামনে। এমন অবস্থায় নোভাক জোকোভিচকে আটকানো যে কঠিন, তা হয়তো জানতেন প্রথম বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনাল খেলতে নামা ডেনিস শাপোভালভও। তবু লড়াই করেছেন তিনি। স্ট্রেট সেটে হারলেও প্রতিটা সেটেই শেষ পর্যন্ত আটকে রেখেছিলেন জোকোভিচকে।
লড়াই শেষে ফাইনালে ওঠার তৃপ্তি নিয়ে জোকোভিচ বলেন, “আমার মনে হয় না এই ম্যাচের ফলাফল খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বুঝতে সাহায্য করবে। প্রথম এবং দ্বিতীয় সেটে দারুণ খেলেছে শাপোভালভ। প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছিল ও। আজ এবং এই শেষ কয়েক সপ্তাহে যা করেছে তার জন্য ওকে অভিনন্দন।”
কোর্টে ‘নেকড়ে’ হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন জোকোভিচ। তেমনই জানিয়েছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। উইম্বলডনের সবুজ ঘাসে সেই ক্ষিপ্রতা, শক্তিই যেন দেখল টেনিস বিশ্ব। সেমিফাইনালেও পা হড়কাল জোকোভিচের। আবার পড়ে গেলেন সেন্টার কোর্টে। মুহূর্তের মধ্যে উঠে দাঁড়ালেন, যেন এখনও শিকার বাকি।
৪১তম সেমিফাইনাল খেলতে নেমে শাপোভালভকে ৭-৬, ৭-৫, ৭-৫ ফলে হারিয়ে দিয়েছেন জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স
প্রতিপক্ষ প্রথম বার সেমিফাইনাল খেলছে। আর তাঁর সামনে ২০ তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার হাতছানি। জোকোভিচ বলেন, “ওর প্রথম সেমিফাইনাল। আবেগ কাজ করছিল ওর মধ্যে। তবে ভবিষ্যতে ওকে বার বার দেখতে পাব এই মঞ্চে। দারুণ খেলোয়াড় ও।” ৩০ বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে পা রাখলেন জোকোভিচ।
পাঁচ বার উইম্বলডন জিতেছেন জোকোভিচ। তবুও আরও এক বার জেতার খিদে তাঁর মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, “আমি এখানে আগেও অনেক বার এসেছি। বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিযোগিতা। এক বার খেলতে নামলে পিছনে তাকানোর উপায় নেই। জেতার জন্যই খেলতে হবে। স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রতিটা ম্যাচে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”
এই বছর অস্ট্রেলীয় ওপেন জয় হয়ে গিয়েছে। জিতেছেন ফরাসি ওপেনও। উইম্বলডনের ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ ইটালির মাত্তেয়ো বেরেত্তিনি। যিনি প্রথম বার ফাইনাল খেলতে নামবেন। সেমিফাইনালের পর ফাইনালেও যেন নেকড়ের সামনে মৃগশাবক। জয়ের জন্য তৈরি জোকোভিচ। ৩৪ বছরের সার্বিয়ান টেনিস তারকা বলেন, “আমার কেরিয়ারের এই জায়গায় দাঁড়িয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়টাই সব। টেনিসে এই চারটি প্রতিযোগিতাই সব চেয়ে বড়। সেই খেলায় ইতিহাস তৈরি করতে পেরে আমি খুশি। আমার কাছে আর একটাই ম্যাচ বাকি আগামী কিছু দিনে। সেই ম্যাচটা নিয়েই ভাবব। ৩০ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল খেলতে নামছি এটা ভুলে যাব।”
গ্র্যান্ড স্ল্যামে ৪১তম সেমিফাইনাল খেলতে নেমে শাপোভালভকে ৭-৬, ৭-৫, ৭-৫ ফলে হারিয়ে দিয়েছেন জোকোভিচ। এ বার তাঁর সামনে একই বছরে টানা তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সুযোগ। ২০১১ এবং ২০১৫ সালেও এমন কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে শাপোভালভ বলেছিলেন, “কোর্টে আমি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠি। নেকড়ের মতো নিজের দাঁত দেখাতে ভালবাসি।” তবে জোকোভিচ বুঝিয়ে দিলেন নেকড়ে দলের নেতা তিনি। তাঁর সামনে শান্তই থাকতে হবে বাকিদের।