লক্ষ্য: চার্চিলের বিরুদ্ধেও ছন্দ ধরে রাখতে চান মর্গ্যান। নিজস্ব চিত্র
লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়। প্রায় চার বছর পর শিলং থেকে ম্যাচ জিতে কলকাতায় ফেরার স্বপ্নও পূরণ। অথচ কোনও উচ্ছ্বাস নেই লাল-হলুদ শিবিরে!
রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ গুয়াহাটি থেকে কলকাতায় পৌঁছয় ইস্টবেঙ্গল। লাজংয়ের বিরুদ্ধে জয়ের আনন্দে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে লাল-হলুদ সমর্থকেরা ঝড় তুললেও এ দিন কাউকেই দেখা যায়নি বিমানবন্দরে ফুটবলারদের স্বাগত জানাতে। তার চেয়েও আশ্চর্যজনক হচ্ছে, চব্বিশ ঘণ্টা আগের জয় নিয়ে কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান থেকে নতুন নায়ক ক্রিস্টোফার পেইনের নির্লিপ্ত মনোভাব।
চার্চিল ব্রাদার্সের নাটকীয় উত্থানই কি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে?
শনিবার লাজং ম্যাচের পর টিম হোটেলে ফিরে টিভিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে চার্চিলের দুরন্ত জয় দেখেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ ও ফুটবলাররা। ৭ মার্চ বারাসত স্টেডিয়ামে গোয়ার দলটিই প্রতিপক্ষ তাঁদের। এই ম্যাচেই দলে ফিরছেন চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা উইলিস প্লাজা। তা সত্ত্বেও মর্গ্যানের দুশ্চিন্তা কমছে না। তিনি বলছেন, ‘‘ডেরেক পেরেরা দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে চার্চিল। দারুণ উন্নতি করেছে ওরা। মঙ্গলবারের ম্যাচটা যথেষ্ট কঠিন।’’
লাল-হলুদ অন্দরমহলে আতঙ্ক শুধু চার্চিলকে নিয়েই নয়। আতঙ্ক মর্গ্যানের কোচিংয়েই এর আগে আই লিগে দুরন্ত শুরু করেও শেষ পর্বে ব্যর্থ হওয়ার। কখনও সালগাওকর। কখনও আবার ওএনজিসি কাঁটা ছড়িয়ে দিয়েছিল খেতাব জয়ের পথে। ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের মতে, শেষ পর্বে গিয়ে চোট-আঘাতের সমস্যাই বিপদ ডেকে এনেছিল। এ ছাড়া মানসিক চাপও ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছিল দলের।
কী বলছেন লাল-হলুদের প্রাক্তন গুরুরা? ডেম্পোকে আই লিগে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন করা কোচ আর্মান্দো কোলাসো রবিবার গোয়া থেকে ফোনে বললেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, শেষ পর্বে পৌঁছে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের ফোকাসটাই নড়ে গিয়েছিল এর আগে।’’ এ বার প্লাজাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা কতটা? আর্মান্দো বলছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন না হলে আমি অবাকই হব।’’
লাল-হলুদের আর এক প্রাক্তন কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের বিশ্লেষণ, ‘‘লিগের শেষ পর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফুটবলারদের ফিট রাখা। অতীতে দারুণ শুরু করা সত্ত্বেও ফিটনেস সমস্যাই ইস্টবেঙ্গলকে ছিটকে দিয়েছিল খেতাবের দৌড় থেকে। আর ছিল ফুটবলারদের ওপর প্রবল মানসিক চাপ।’’ এ বার কি মনে হচ্ছে? জাতীয় দলের প্রাক্তন স্ট্রাইকার বললেন, ‘‘আমার মনে হয়, পরের ছ’টা ম্যাচের মধ্যে চারটিতে জিতলেই খেতাব নিশ্চিত করে ফেলবে ইস্টবেঙ্গল।’’
মর্গ্যান অবশ্য এখনই চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে ভাবতে চাইছেন না। তাঁর পাখির চোখ চার্চিল ম্যাচে। তিনি বললেন, ‘‘এখনও ছ’টা খেলা বাকি। তাই একটা ম্যাচ জিতেই উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই। আমার প্রধান লক্ষ্য ছন্দ ধরে রাখা। সেই সঙ্গে ফুটবলাররা যাতে চাপমুক্ত থাকে সেটাও দেখা।’’