কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক আপাতত কুস্তির সমস্ত প্রতিযোগিতা বাতিল করেছে। —ফাইল চিত্র
২০২৪ অলিম্পিক্সে ভারতের কুস্তিগিরদের দেখা যাবে তো? সমর্থকদের মনে এই প্রশ্ন জাগতে শুরু করে দিয়েছে। জাতীয় সংস্থায় গন্ডগোল হলে যে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে নির্বাসিত হতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা ফুটবলে হয়েছে ভারতের। সিঁদুরে মেঘ দেখলে তাই ঘর পোড়াদের মনে আশঙ্কা তো জন্মাবেই। যদিও এখন অলিম্পিক্সে ভারতের কুস্তিগিরদের দেখা না যাওয়ার মতো কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
গত বছর ফিফার নির্বাসনের খাঁড়া নেমে এসেছিল ভারতীয় ফুটবলের উপর। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থাতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মেনে নিতে পারেনি ফুটবলের নিয়মক সংস্থা। সেই কারণে নির্বাসিত করা হয় ভারতকে। পরে যদিও সেই নির্বাসন তুলে নেওয়া হয়। কল্যাণ চৌবের হাত ধরে এখন এগিয়ে চলেছে ভারতীয় ফুটবল। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার প্রধান এখন কল্যাণ। কুস্তি সংস্থা থেকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে সহ-সভাপতি বিনোদ তোমরকে। জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্রিজভূষণ শরণ সিংহকেও।
অভিযোগ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে, কুস্তি ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নয়। তাই এখনই ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু মুশকিল অন্য জায়গায়। ভারতে কোনও রকম কুস্তি প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক আপাতত কুস্তির সমস্ত প্রতিযোগিতা বাতিল করেছে। এই জটিলতা না কাটলে চিন্তায় পড়তে পারেন কুস্তিগিররা। কারণ এই বছরের সেপ্টেম্বরে কুস্তির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। যে প্রতিযোগিতায় খেলে প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করার সুযোগ পাবেন কুস্তিগিররা। কোনও কারণে সেই প্রতিযোগিতায় ভারতীয় কুস্তিগিররা না যেতে পারলে বা এখন কুস্তি প্রতিযোগিতা বন্ধ থাকায় কোনও ভাল ভাবে নিজেদের তৈরি করতে না পারলে বিপদে পড়বেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে অলিম্পিক্স নিয়ে চিন্তা শুরু হয়ে যেতে পারে কুস্তিগিরদের।
গত বুধবার থেকে নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বেশ কিছু কুস্তিগির। সেই দলে ছিলেন বিনেশ ফোগত, বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক-সহ একাধিক কুস্তিগির। তাঁদের অভিযোগ, ব্রিজভূষণ একাধিক কুস্তিগিরকে যৌন নিগ্রহ করেছেন। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদকজয়ী বিনেশ দাবি করেছিলেন, লখনউয়ে জাতীয় শিবিরে মহিলা কুস্তিগিরদের নিয়মিত যৌন হেনস্থা করতেন কোচেরা। এমনকি, ব্রিজভূষণের ভয় দেখিয়ে জোর করে কুস্তিগিরদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ারও চেষ্টা করতেন তাঁরা। বিনেশ যদিও জানিয়েছেন, নিজে কোনও দিন এই পরিস্থিতির সম্মুখীন তাঁকে হতে হয়নি।
সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন ব্রিজভূষণ। তিনি বলেন, “আমি বুঝতেই পারছি না কেন এই অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে বিনেশ অভিযোগ করেছে। কিন্তু তার আগে কি অন্য কোনও কুস্তিগির এই অভিযোগ তুলেছিল? কেউ এগিয়ে এসেছিল? হঠাৎ করে এখন কেন অভিযোগ উঠছে? সবটাই ষড়যন্ত্র। এই অপবাদ নিয়ে থাকা যায় না।” যদিও যত দিন না তদন্ত শেষ হচ্ছে, তত দিন জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্রিজভূষণকে।