এই বছরের আইপিএলে কিছু স্মরণীয় জয়ের পাশাপাশি যন্ত্রণাকর পরাজয়ও সঙ্গী হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। যার নেপথ্যে বোলিংয়ের দুর্বলতাই বড় কারণ। নাইটরা এ বার নিলামের আগেই ছেড়ে দিয়েছে ১১জন ক্রিকেটারকে। ১৯ তারিখের নিলামে তাই নিজেদের দল গুছিয়ে নেওয়ার কাজ সেরে ফেলতে হবে কেকেআরকে।
লকি ফার্গুসন ও হ্যারি গার্নি, দুই ভিনদেশি জোরেবোলারকে দলে থাকলেও তাঁরা এর আগে ভারতীয় কন্ডিশনে জ্বলে উঠতে পারেননি। স্বদেশিদের মধ্যে প্রসিধ কৃষ্ণ, কমলেশ নাগারকোটি, শিবম মাভি, সন্দীপ ওয়ারিয়রা অবশ্য রয়েছেন। কিন্তু চোট-আঘাত বাধা হয়ে উঠেছে তাঁদের। ফলে, শাহরুখের দলের ভাল পেসার প্রয়োজন বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহল।
সীমিত ওভারের ফরম্যাটে এই বছরে রীতিমতো ধারাবাহিক থেকেছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ক্রিস জর্ডন। সারা বিশ্বেই টি-টোয়েন্টি বোলারদের মধ্যে তাঁর চাহিদা রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে দুরন্ত পারফরম্যান্সের পর ইংল্যান্ড দলেও নিজের জায়গা পাকা করে ফেলেছেন তিনি।
অতীতে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন ক্রিস জর্ডন। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তিনি ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সেরও ক্রিকেটার। ব্যাট হাতে বড় শট নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে জর্ডনের। আর বোলার জর্ডনের সবচেয়ে বড় গুণ হল তাঁর বৈচিত্র।
২০১৮ ও ২০১৯ সালের আইপিএল নিলামে সবচেয়ে দামি ছিলেন জয়দেব উনাদকাট। কিন্তু, নিলামের আগে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। এ বারের আইপিএলে ১১ ম্যাচে ১০.৬৬ ইকনমি রেটে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আইপিএলের বাইরে এই বছরে জয়দেবের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত।
বিজয় হাজারে ট্রফিতে সৌরাষ্ট্রের এই পেসার আট ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৫ উইকেট। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে মাত্র সাত ম্যাচে নিয়েছিলেন ১২ উইকেট। ইকনমি রেট ছিল মাত্র ১০.৬৬। এই মুহূর্তে দেশের সেরা বাঁ-হাতি পেসারদের মধ্যে পড়েন তিনি। নাইটদের বোলিংয়ে বৈচিত্র আনতেই পারেন তিনি।
আইপিএলে গত মরসুমে নেথান কুল্টার-নিলের পরিবর্ত হিসেবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে এসেছিলেন ডেল স্টেন। কিন্তু চোটের জন্য ছিটকে যেতে হয়েছিল তাঁকে। এখন স্টেন পুরো সুস্থ। ফলে অভিজ্ঞ বিদেশি পেসার হিসেবে কেকেআর নিতেই পারে তাঁকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া এমএসএল টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ছয় ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন স্টেন। প্রতিযোগিতায় এখন সর্বাধিক উইকেট সংগ্রহকারী তিনিই। ইকনমি রেটও বেশি নয়, ৮.০০। এখনও জাতীয় দলে ফেরেননি ঠিকই, তবে দ্রুত প্রত্যাবর্তন ঘটাতেই পারেন স্টেন।
এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা জোরে বোলারদের মধ্যে পড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেলডন কটরেল। যিনি বিখ্যাত তাঁর ‘স্যালুট’ সেলিব্রেশনের জন্য। আইপিএলে কেকেআরের পেস বোলিং সমস্যার সমাধান হয়ে উঠতেই পারেন তিনি।
কেকেআরের দরকার এমন একজন বোলার, যিনি নেতৃত্ব দেবেন পেস আক্রমণে। আর তা হতেই পারেন কটরেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণেরও এখন পয়লা নম্বর স্ট্রাইক বোলার তিনি। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে আট ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১২ উইকেট। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতেও নজর কাড়ছেন তিনি।