এই প্রথম চেন্নাই জার্সি গায়ে আইপিএল খেলছেন না। এই প্রথম কোনও আইপিএল টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর অভিষেকেই সফল তিনি। আইপিএল দু’সপ্তাহ গড়াতে না গড়াতেই গুজরাত লায়ন্স এখন কেকেআরের সঙ্গে সমান পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে রয়েছে। তাঁর নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি, অধিনায়কত্ব, শিক্ষা এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আইপিএলের ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকার দিলেন সুরেশ রায়না।
নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির সাফল্য: নিলামের আগে থেকেই তৈরি হয়েছি। যে রকম প্লেয়ার চেয়েছিলাম, সে রকম প্লেয়ারই তুলে ছিলাম। একটা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি যখন তৈরি হয়, তখন মালিকরা যদি সব রকম ভাল পরিকাঠামো দিয়ে টিমকে সাহায্য করে, তা হলে প্লেয়ারদের অনেক সুবিধা হয়। আমরা সে সব পেয়েছিও। নেটে আমাদের খুব ভাল বোলার দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া সাসপেন্ড হওয়া দুটো ফ্র্যাঞ্চাইজির প্লেয়াররা জানত ওদের হয় পুণেতে, না হয় গুজরাতে খেলতে হবে। মানসিক ভাবে ওরা তাই তৈরিও ছিল।
সতীর্থদের সঙ্গে সম্পর্ক: এই টিমের প্রচুর প্লেয়ারের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে খেলেছি। বাজ (ম্যাকালাম), ডোয়েন ব্র্যাভো, ডোয়েন স্মিথ, জাডেজাদের সঙ্গে সিএসকে-তে। ডিকে (দীনেশ কার্তিক), পিকে (প্রবীণ কুমার), কুলকার্নি (ধবল)-দের সঙ্গেও খেলেছি। তাই আমি ওদের চাহিদা, ওদের পছন্দ-অপছন্দ— সব কিছু জানি। এই ব্যাপারটা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।
কোচিং স্টাফ: আমাদের কোচিং টিম আমাকে অনেক সাহায্য করছে। যেমন ব্র্যাড হজ, যেমন হিথ স্ট্রিক। হজি ভারতীয় পরিবেশে এবং অনেক দিন ধরে আইপিএলে খেলেছে। ওর অভিজ্ঞতাটা দারুণ কাজে আসছে। জিম্বাবোয়ে টিমে স্ট্রিকের কী অবদান, তা সবার জানা। এই রকম ছোট সেট আপে এই ধরনের পরিশ্রমী লোকজন পেলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
কী শিখছেন: অনেক আন্তর্জাতিক প্লেয়ারের সঙ্গে খেলেছি, যারা কোনও না কোনও সময়ে দেশের অধিনায়কত্ব করেছে। ম্যাকালাম, ব্র্যাভো, ফ্লেমিং এবং অবশ্যই ধোনি। ধোনির সঙ্গে আমি ক্রিকেট মাঠে ১০-১৫ বছর কাটিয়েছি। দেখেছি ম্যাচ এবং ম্যাচের আগে ও কী ভাবে কাজটা করে। সুযোগ পেলেই ওর সঙ্গে কথা বলতাম, ওর থেকে শিখতে চাইতাম। এমনকী খেলা চলার সময়ও হয় স্লিপে বা পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ওকে প্রশ্ন করে যেতাম, কেন ও কোনও সিদ্ধান্ত নিল, কেন বোলার বদল করল বা কেন এ রকম ফিল্ড প্লেসিংটা হল। চাপের মুখে ও এত মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে! এ ছাড়া খুব অল্প বয়সে আমি রাহুল ভাইয়ের (দ্রাবিড়) সঙ্গে খেলেছি। উত্তরপ্রেদেশে আমার অধিনায়ক ছিল কাইফ। এখন আমি নিজে একটা টিমকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। এত দিন সবার কাছ থেকে যা শিখেছি, সেটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।
ব্যক্তিগত জীবন: বিয়ের পরে আমি মানুষ হিসেবে অনেক বদলে গিয়েছি। অনেক শান্ত হয়েছি, দায়িত্ব নিতে শিখেছি। পরের মাসে বাবা হতে চলেছি। সব মিলিয়ে এটা আমার কাছে একটা তাজা হাওয়ার মতো যেখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। এই নতুন জার্নিতে সব সময় স্ত্রীকে পাশে পেয়েছি। ও আমাকে সব সময় উৎসাহ দিয়েছে, নতুন সতীর্থদের সঙ্গে বেশি করে মিশতে বলেছে। যার জন্য আমি আমার স্ত্রীকেও সময় দিতে পারিনি সে ভাবে। স্ত্রী এই ভাবে পাশে থাকায় আমি এই নতুন টিমটার সঙ্গে আরও ভাল ভাবে মিশে যেতে পেরেছি।
টিম স্পিরিট তৈরি: মাঠে সব সময় চেষ্টা করি সবাইকে উৎসাহ দিতে। একে অন্যকে উৎসাহ দেওয়ার কাজটা সবাই করলে ক্যাপ্টেনের কাজও সহজ হয়ে যায়। সিএসকে থেকে কয়েকটা জিনিস শিখেছি। যেমন জিতলেও বিপক্ষকে সম্মান করো। আর সব সময় নিজের মান উঁচুতে তুলে নিয়ে যাও। সেগুলোই কাজে লাগাচ্ছি।