কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বোর্ডের সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভর করছে না আইপিএল। বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ আদৌ এ বছরে আয়োজন করা যাবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রবিবার তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু। আইপিএল হলেও তা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হতে পারে। কিন্তু ভারতীয় ওপেনার শিখর ধওয়ন জানিয়ে দিয়েছেন, সমর্থকদের উচ্ছ্বাসের অভাব অনুভব করবেন যদি ফাঁকা মাঠে খেলতে হয়।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে, তা হলে আইপিএল হওয়ার সম্ভাবনাও কমতে পারে। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীর ইঙ্গিত, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই ঝুঁকিপূর্ণ কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চায় না কেন্দ্র। রবিবার রিজিজু বলেছেন, ‘‘আমাদের দেশ করোনার আগ্রাসন কতটা মোকাবিলা করতে পারছে, তা দেখতে হবে। আইপিএল আয়োজন করার আগে দেখতে হবে, দেশে করোনার মাত্রা কমছে কি না। সে সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ ক্রীড়ামন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে গিয়ে দেশকে বিপদে ফেলতে পারি না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করা।’’
ভারতীয় বোর্ডের কেউ কেউ বলেছেন, অক্টোবর অথবা নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাতিল হলে সে সময়ে আইপিএল আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু তার বিরোধিতা করেছেন অ্যালান বর্ডার থেকে ইয়ান চ্যাপেলের মতো প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়কেরা। এমনকি বর্ডার এ-ও জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের সঙ্গে আইপিএলের কোনও তুলনাই চলে না। অন্য দিকে চ্যাপেল তাঁর দেশের ক্রিকেটারদের অনুরোধ করেছিলেন, ঘরোয়া ক্রিকেট ছেড়ে কেউ যেন আইপিএল খেলতে না যান।
কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হোক অথবা আইপিএল, প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হলে তা দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হওয়ার সম্ভাবনাই সব চেয়ে বেশি। এত দিন মাঠে সমর্থকদের জয়ধ্বনি শুনে আসা ক্রিকেটারেরা কী ভাবে মানিয়ে নেবেন? অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজকে ইনস্টাগ্রাম লাইভ চ্যাটে শিখর ধওয়ন জানিয়েছেন, সমর্থকদের অভাব তিনি অবশ্যই অনুভব করবেন। শিখরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যদি কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, তা হলে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামেই খেলা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফাঁকা মাঠে খেলতে সত্যি খারাপ লাগবে। সমর্থকদের উচ্ছ্বাস শুনতে পাব না। স্টেডিয়ামের মধ্যে সেই পরিবেশই তৈরি হবে না। সমর্থকেরা থাকলে আলাদা অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। ফাঁকা মাঠে যা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’’ কিন্তু ধওয়ন একেবারেই বাড়িতে আর বসে থাকতে চান না। যে কোনও ভাবেই ক্রিকেট শুরু হোক, চান তিনি। বলেছেন, ‘‘যে ভাবে সম্ভব ক্রিকেট শুরু হোক। আর বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগছে না। শ্যাডো প্র্যাক্টিস করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছি। মাঠে ফেরার পরে প্রত্যেকের মধ্যেই পারফর্ম করার খিদে বেড়ে যাবে। এত দিন পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করার ইচ্ছে তৈরি হবে। সেটা কিন্তু অন্য রকম অনুভূতি।’’
ধওয়নের বিশ্বাস, এ বছরও আইপিএল হবে। ম্যাথেউজকে তিনি বলেছেন, ‘‘এত বড় প্রতিযোগিতা বন্ধ থাকলে খুবই খারাপ লাগবে। আমার বিশ্বাস আইপিএল হবেই। বরাবরই ইতিবাচক চিন্তা করতে পছন্দ করি। তাই আইপিএল হবে না, তা ভাবতেও পারব না।’’ যোগ করেন, ‘‘খেলাধুলো শুরু হলে মানুষের মনও ভাল হয়ে যায়। অবসাদ কেটে যায় অনেকের। আইপিএল শুরু হলে কিন্তু অনেকেরই সুবিধা হবে। বাড়িতে বসে ম্যাচ উপভোগ করতে পারবে। অনেকটা সময় কেটে যাবে। আমরাও মাঠে নামার সুযোগটা অন্তত পাব।’’
আরও পড়ুন: ‘বিরাট মাঠে আমার শত্রু হত, মাঠের বাইরে ভাল বন্ধু’