বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
চিনা পণ্য বর্জনের ডাক জোরদার হয়েছে গালওয়ান উপত্যকায় রক্তপাতের পর। দেশ জুড়ে চিন-বিরোধী আবহ। কিন্তু, এই অবস্থাতেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের টাইটেল স্পনসর ভিভোকেই রাখা হচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড মনে করছে যে, চিনের সংস্থা থেকে আসা অর্থ চাঙ্গা করবে ভারতীয় অর্থনীতিকেই।
বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল বলেছেন, “আবেগ দিয়ে ভাবলে অনেক সময়ই যুক্তিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। আমাদের বুঝতে হবে যে, চিনের স্বার্থে চিনের সংস্থাকে সাহায্য করা আর ভারতের স্বার্থে চিনের অর্থনীতির সাহায্য নেওয়ার মধ্যের তফাত রয়েছে।” ২০২২ সাল পর্যন্ত ভিভোর সঙ্গে চুক্তি রয়েছে বোর্ডের। প্রত্যেক বছর ভিভোর থেকে বোর্ডের আয় ৪৪০ কোটি টাকা। ধুমলের মতে, চিনের কোম্পানি আইপিএলের জন্য অর্থ ব্যয় করলে তাতে দেশেরই লাভ।
আরও পড়ুন: দর্শকরাই তো দলের বড় প্রেরণা, বলে দিলেন ‘হিটম্যান’
আরও পড়ুন: বেঁচে ফেরার স্বস্তি বোঝাতে পারব না, বললেন করোনাকে হারানো রঞ্জি জয়ী সাগরময়
নিজের মতের স্বপক্ষে বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ আরও বলেছেন, “আমরা যখন চিনের কোনও সংস্থাকে ভারতে পণ্য বিক্রির অনুমতি দিচ্ছি, তখন ওরা ভারতীয় ক্রেতার থেকে অর্থ নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারই কিছুটা ওরা এখানে বোর্ডকে দিচ্ছে। আর বোর্ড আবার সেই অর্থের ৪২ শতাংশ কর হিসেবে সরকারকে দিচ্ছে। তাই এ ক্ষেত্রে ভারতের স্বার্থই রক্ষিত হচ্ছে, চিনের নয়।” তিনি আরও বলেছেন, “আইপিএলের জন্য টাকা না দিলে সেই অর্থ ওরা সম্ভবত চিনে নিয়ে চলে যেত। সেই অর্থ যখন দেশেই থাকছে, তখন তো আমাদের খুশি হওয়ারই কথা। আমরা সেই অর্থে কর দেওয়ার মাধ্যমে সরকারকে সাহায্য করছি। দেখুন, যদি চিনের কোনও সংস্থাকে ক্রিকেট স্টেডিয়াম করতে বলা হয়, তবে তা চিনের অর্থনীতিকে সাহায্য করবে। গুজরাত ক্রিকেট সংস্থা মোতেরায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়ে তুলেছে এক ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেই। দেশ জুড়ে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে ক্রিকেটীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে। আর তার কোনও চুক্তিই কিন্তু চিনের সংস্থা পায়নি।”
বোর্ডের মনোভাব স্পষ্ট করে অরুণ ধুমল বলেছেন, “চিনের অর্থ যখন ভারতীয় ক্রিকেটের সাহায্যে আসছে, তখন তা মেনে নেওয়া উচিত। আমিও কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে চিনের পণ্যে বিধিনিষেধ জারির পক্ষে। চিনের কোম্পানির থেকে স্পনসরশিপ এনে আমরা এখানে সরকারকে সাহায্য করছি, ভারতের স্বার্থ রক্ষা করছি। চিনের নয়, এমন সংস্থার থেকেও আমরা স্পনসরশিপের অর্থ পেতে পারি। তার মধ্যে ভারতের সংস্থাও থাকতে পারে। কিন্তু চিনের কোম্পানি যখন এখানে পণ্য বিক্রি করছে, তখন সেই অর্থের কিছুটা ভারতীয় অর্থনীতিতে ফিরে আসাই ভাল। বিসিসিআই চিনে অর্থ দিচ্ছে না। বরং তার উল্টোটা ঘটছে। তাই আবেগ নয়, যুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”