অকপট: ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরের কথা এ বার বিরাটের মুখে।
ক্রিকেট বিশ্বে বোলারদের কাছে তিনি দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু এমন একটা বিদেশ সফর এসেছিল বিরাট কোহালির জীবনে, যা প্রায় দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারত অধিনায়কের কাছে। ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার মার্ক নিকোলাসের পডকাস্টে সেই অভিশপ্ত সফরের কথা বলেছেন কোহালি।
২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফর। যেখানে পাঁচ টেস্টে মাত্র ১৩৪ রান করেছিলেন কোহালি। গড় ছিল ১৩.৪০। দুঃস্বপ্নের সেই সফর নিয়ে কোহালি বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছিল গোটা বিশ্বে আমার মতো একা আর কেউ নেই। প্রত্যেকটা দিন আমি আরও বেশি করে তলিয়ে যাচ্ছিলাম।’’
তিনি কি তখন মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন? কোহালি বলেন, ‘‘হ্যাঁ। সকালে উঠে যদি কোনও ব্যাটসম্যানের মনে হয়, আমি আজ রান করতে পারব না, তা হলে সেটা কখনও ভাল অনুভূতি হতে পারে না। আমার মনে হয়, সব ব্যাটসম্যানের জীবনে এমন একটা সময় আসে, যখন মনে হয় কিছুই আর নিয়ন্ত্রণে নেই।’’ যোগ করেন, ‘‘আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না কী ভাবে ওই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। ওই সময় কিছুই ঠিকঠাক করতে পারছিলাম না।’’
এখানেই শেষ নয়। সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা নিয়ে কোহালি আরও বলেন, ‘‘ওই সময় মনে হচ্ছিল, গোটা দুনিয়ায় আমার মতো একা কেউ নেই। মনে হচ্ছিল, অতলে তলিয়ে যাচ্ছি। রোজই পিছিয়ে পড়ছি।’’ কোহালি মনে করেন, তিনি দলের সঙ্গে থাকলেও এক জন পেশাদারের অভাব টের পেয়েছিলেন, যাঁর সঙ্গে কথা বলে মনের ভাব হাল্কা করা যায়। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, এমন এক জনকে দরকার ছিল, যার কাছে গিয়ে আমি বলতে পারব, এই কাজটা ঠিক করে করতে পারছি না। কী ভাবে করব, রাস্তা বলে দিন।’’ কোহালি অবশ্য রাস্তা ঠিকই খুঁজে পেয়েছিলেন। পরের অস্ট্রেলিয়া সফরেই ৬৯২ রান করেছিলেন। চারটি সেঞ্চুরি-সহ। সেখানে সচিন তেন্ডুলকরের পরামর্শ তাঁর অনেক কাজে লেগেছিল বলে জানিয়েছেন কোহালি। তবে মানসিক অবসাদ যে ভয়ঙ্কর একটা সমস্যা তা মেনে নিয়েছেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। এবং, তিনি চান বিশেষজ্ঞের সাহায্যে এই সমস্যা দূর করা হোক।
সেই সফরের পর থেকে জল অনেক গড়িয়েছে। কোহালি নিজে এখন বোলারদের অবসাদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে রান পেয়েছেন তিনি। চেন্নাইয়ে টেস্ট সিরিজ ১-১ করে বৃহস্পতিবারই আমদাবাদে পা রেখেছে কোহালির দল। যেখানে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে দিনরাতের টেস্ট।
দ্বিতীয় টেস্টে দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের পরে শোয়েব আখতারের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা মনে করছেন, ভারত এই সিরিজ ৩-১ ফলে জিতবে। চেন্নাইয়ে দেখা গিয়েছে ভারতের দুই স্পিনার— আর অশ্বিন এবং অক্ষর পটেলের সামনে ম্লান হয়ে যান ইংল্যান্ডের দুই স্পিনার— মইন আলি এবং জ্যাক লিচ। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন মনে করেন, দু’দলের স্পিনারদের পারফরম্যান্সই ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দিয়েছে। তাঁর কলামে হুসেন লিখেছেন, ‘‘অশ্বিন বা অক্ষর ম্যাজিক দেখায়নি মাঠে। ওরা ঠিক জায়গায় ধারাবাহিক ভাবে বলটা ফেলে গিয়েছে। ইংল্যান্ডের স্পিনাররা যা করতে পারেনি।’’