বাধা সত্ত্বেও পদক জিতে নজির বিনেশের। ফাইল ছবি
প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপে জোড়া পদক জিতেছেন বিনেশ ফোগাট। ২০১৯-এর পর এ বছর বেলগ্রেডে ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। রেপেশাজ রাউন্ডের পর ব্রোঞ্জ পদক জয়ের ম্যাচে সুইডেনের জোনা মামগ্রেনকে হারিয়েছেন ৮-০ পয়েন্টে। তবে যে পরিস্থিতিতে বিশ্ব মঞ্চে পদক ছিনিয়ে নিয়েছেন বিনেশ, তা ভাবলেও অবাক হতে হয়। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে থেকেই ঋতুস্রাব শুরু হয় তাঁর। শারীরিক অস্বস্তি তো ছিলই। পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য যে প্রক্রিয়া চালু রেখেছিলেন, তাতে শারীরিক ভাবে প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েন। সব বাধাবিপত্তি পেরিয়েই তিনি ব্রোঞ্জ জিতেছেন।
পদক জয়ের পর এক সাক্ষাৎকারে বিনেশ বলেছেন, “আমি জানি না রেপেশাজের সুযোগ পাওয়ার জন্য গর্ব বোধ করব, নাকি ঠিক প্রতিযোগিতার আগেই ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার জন্যে নিজেকে দুর্ভাগ্যবান মনে করব।” দুবাই থেকে বেলগ্রেডে যাওয়ার সময়েই বিনেশের ঋতুস্রাব শুরু হয়। সেই প্রসঙ্গে ভারতীয় কুস্তিগির বলেছেন, “মাঝেমাঝে মনে হয় ছেলে হয়ে জন্মালে ভাল হত। জীবনে প্রথম বার ঋতুস্রাব কমানোর ট্যাবলেট খেয়েছিলাম। তাতেও আটকানো গেল না। এক মুহূর্তে মনে হয়েছিল গত ১০ মাসের পরিশ্রম এক লহমায় বৃথা গেল।”
শুধু তাই নয়, ওজন কমানোর জন্য খাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেন বিনেশ। বেশি মাত্রার কার্ডিয়ো করেন কোচের নির্দেশে, যাতে দ্রুত ওজন কমে। শরীর এই ধাক্কা সইতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে ০-৭ পয়েন্টে হেরে যান। বিনেশ বলেছেন, “ম্যাটে নিজের সেরাটা দিয়েছিলাম। কিন্তু শরীর মাঝেমাঝে ছেড়ে দেয়। সব মহিলা ক্রীড়াবিদেরই এটা হয়। অনেকেই মুখে প্রকাশ করে না।”
২০১৯-এর এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও একই সমস্যায় পড়েছিলেন বিনেশ। সেই সম্পর্কে বলেছেন, “সে বার ঋতুস্রাব নিয়ে লড়াই করে দু’বার চোট লাগে। এ বারও চোটের ভয় ছিল।” গবেষণা বলছে, ঋতুস্রাবের সময় পেশি শিথিল হয়ে যায় এবং চোট লাগার সম্ভাবনা থাকে। ফলে এ বারও বিনেশের চোটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না। সেটা অবশ্য হয়নি।
পরিশ্রমের ফল পাওয়ার পর এ বার একটু আরাম করতে চান বিনেশ। বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে চা খেতে চান। পাশাপাশি ঘুরতে চান দেশের বিভিন্ন মন্দিরে। শুরু করতে চান কেদারনাথ, বদ্রীনাথ থেকে। তার পর বাকিগুলি। নিজেই বলেছেন, “আমি বেশি উচ্ছ্বাস করতে পারি না। তবে এ বার অন্য ভাবে জীবনটা উপভোগ করতে চাই। দ্রুত অনুশীলনে ফিরতে হবে।”