ফক্সবরোয় নেইমারের দিন। ছবি: রয়টার্স।
সেলেকাও দর্প আর চার গোলের গোলায় ৪-১ চুরমার য়ুর্গেন ক্লিন্সম্যানের যুক্তরাষ্ট্র!
মার্কিন মুলুকে ফক্সবরোর জিলেট স্টেডিয়ামে ব্রাজিল বনাম যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচটার নামের সামনে ‘প্রীতি’ শব্দটা থাকলেও দুই টিমের কাছেই এটা ছিল বড় যুদ্ধে নামার আগে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি। যাতে নেইমারের জোড়া গোল-সহ দুঙ্গার ছেলেরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে দিলেন নিজেদের পায়ে।
আগামী মাসে শুরু হচ্ছে ব্রাজিলের ২০১৮ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের যুদ্ধ। যাতে প্রথম লড়াইটাই বেশ কঠিন। চিলির মাঠে গিয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে শুরু করতে হবে। তবে তার আগে ক্লিন্সম্যানের টিমকে ৪-১ হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ভরপুর পেয়ে গেল ব্রাজিল।
জার্মান তারকার কোচিংয়ে এই নিয়ে তৃতীয় বার এত বড় ব্যবধানে হারল যুক্তরাষ্ট্র। তাও আবার ঘরের মাঠে। এর আগে ২০১২ ব্রাজিলের কাছেই ১-৪ এবং গত বছর আইরিশদের কাছে একই স্কোরলাইনে হেরেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ দিকে, অক্টোবরে কনফেডারেশনস কাপের প্লে অফ। যাতে মেক্সিকোর মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজেদের শক্তি-দুর্বলতা যাচাই করে নেওয়ার এটাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামনে সেরা সুযোগ। যেটা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষার রাস্তায় হেঁটে মাথা হেঁট হল ক্লিন্সম্যানের।
আলেজান্দ্রো বেদোয়াকে ডিফেনসিভ মিডফিল্ডারের অনভ্যস্ত ভূমিকায় রেখে একটা পরীক্ষা করেছিলেন ক্লিন্সম্যান। ব্রাজিল আক্রমণের পর পর ঢেউয়ের ধাক্কায় যে পরীক্ষা কাচের দেওয়ালের মতোই ভেঙে পড়ল। ব্রাজিলের হয়ে প্রথম গোলটা আসে হাল্কের পা থেকে। চেলসির উইলিয়ান গতিতে দুই মার্কিন ডিফেন্ডারকে পিছনে ফেলে ডান দিক থেকে আক্রমণে উঠে লুপিং ক্রসটা বাড়িয়েছিলেন মার্কিন গোলরক্ষক ব্র্যাড গুজানের মাথা টপকে। অ্যাস্টন ভিলার গোলকিপার কিছু বোঝার আগে বল পোস্টে লেগে গিয়ে পড়ে হাল্কের পায়ের ঠিক সামনে। যিনি জোরাল শটে বল গোলে পাঠান।
বেদোয়া-পরীক্ষাটা যে ভুল হয়েছে সেটা ছত্রিশ মিনিটেই স্বীকার করে নিয়ে তাঁকে তুলে ড্যানি উইলিয়ামসকে নামান ক্লিন্সম্যান। কিন্তু তাতেও ব্রাজিলের ছন্দ নষ্ট করা যায়নি। বরং দুঙ্গা দ্বিতীয়ার্ধে নেইমারকে নামিয়ে আরও ধার বাড়ান আক্রমণের। নেইমারের প্রথম গোল পেনাল্টি থেকে। দাভিদ লুইজের বাড়ানো বল নিয়ে বিদ্যুৎ গতিতে ছোটার সময় তাঁকে ফাউল করেন স্টোক সিটির ডিফেন্ডার জিওফ ক্যামেরন। পেনাল্টি থেকে নিজের পঁতাল্লিশতম আন্তর্জাতিক গোল করতে কোনও ভুল করেননি নেইমার। এর পর রাফিনা ৩-০ করার পর সাতষট্টি মিনিটে প্যারিস সাঁজার মৌরার বাড়ানো বল রিসিভ করেন বার্সেলোনা তারকা। মার্কিন রক্ষণের জটলা ভেদ করে মাটি ঘেঁষা নিচু শটে যাঁর দ্বিতীয় গোলটি অনবদ্য। নব্বই মিনিটে তিরিশ গজের শটে ড্যানি উইলিয়ামস একটা শোধ দিলেও, ওই গোলটার বাইরে গোটা ম্যাচে ক্লিন্সম্যানের ছেলেদের বলার মতো আর কোনও পারফরম্যান্স ছিল না। বরং প্রথমার্ধে মার্সেলোর শট গোলকিপারের হাতে না লাগলে এবং রাফিনা লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে ব্যবধানটা আরও বাড়তেই পারত।