বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠে কল্যাণীকে হারিয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অজয় ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রফি চ্যাম্পিয়ন বর্ধমান দল। নিজস্ব চিত্র
প্রথম দিনের খেলা শেষে কল্যাণীর রান ছিল ৮৫। জিততে প্রয়োজন মাত্র ৫০ রান। আর বর্ধমানের জিততে দরকার পাঁচ উইকেট। এই সমীকরণে দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ দিনের খেলা শুরু হয় মঙ্গলবার। প্রতি মুহূর্তে হতে থাকে পট পরিবর্তন। শেষমেশ ম্যাচ জিতে নেয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। দু’দিনের রোমাঞ্চকর ফাইনাল ম্যাচের সাক্ষী থাকল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনবাগান মাঠ।
দলের ছেলেদের খেলায় খুশি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস অফিসার সুরজিৎ নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘দু’দশকের বেশি সময় পরে বর্ধমান এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হল।’’
সোমবার থেকে বর্ধমানের মোহনবাগান মাঠে শুরু হয়েছিল আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, অজয় ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ। দু’দিনের এই ম্যাচে মুখোমুখি হয় বর্ধমান ও কল্যাণী। প্রথম দিন বর্ধমান প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। তবে খেলার শুরুতে ১১৪ রানে ৩ উইকেট ছিল বর্ধমানের। এই অবস্থায় মাত্র ২০ রানে ৭ উইকেট পড়ে যায়। দলের হয়ে মতিউর রহমান ৩৮ এবং প্রদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ৩৪ রান করেন।
অধিকাংশ দর্শক ও বিপক্ষ দলের সমর্থকেরা ভেবেছিলেন ম্যাচ একতরফা হবে। কিন্তু তাঁদের সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে বর্ধমান। প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত বর্ধমান দল কল্যাণীর ৫ উইকেট তুলে নেয়। একাই ৩টি উইকেট নেন বর্ধমানের রামিজ হোসেন। অধিনায়ক সঞ্জীব গড়াই ২টি উইকেট নেন।
মঙ্গলবার খেলা শুরু হওয়ার পরে মসৃণ ভাবেই রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকে কল্যাণী। ১০৯ রান পর্যন্ত তাদের আরও কোনও উইকেট পড়েনি। তারা জয়ের খুব কাছাকাছি ছিল। জয়ের গন্ধ যখন কল্যাণী শিবির পেতে শুরু করেছে তখনই ছন্দপতন। বল হাতে প্রথমে বর্ধমানের সরফরাজ আলম আঘাত হানেন কল্যাণী শিবিরে। ব্যক্তিগত ৩৮ রানে কল্যাণীর সেট ব্যাটসম্যান মদনমোহন রায়কে তিনি ফিরিয়ে দেন। তাঁর বলে কিপার দেবদীপ মুখোপাধ্যায়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মদনমোহন। এর পরে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি কল্যাণী। তার পরে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে কল্যাণী। সরফরাজ এবং অধিনায়ক সঞ্জীব গড়াই পর পর উইকেট তুলে নিতে থাকেন। শেষে ১২৬ রানে থেমে যায় কল্যাণীর ইনিংস। সরফরাজ আলম ৩টি এবং অধিনায়ক সঞ্জীব গড়াই ২টি উইকেট নেন।
দলের কোচ সুব্রত রায় বলেন, ‘‘ব্যাটিং-এ ভরাডুবি হলেও বল হাতে ও ফিল্ডিংয়ে ছেলেরা বেশ ভাল প্রদর্শন করেছে। একটা সময়ে শেষ উইকেটে কল্যাণীর প্রয়োজন ছিল ১০ রান। শেষে ৯ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় ছেলেরা।’’
এ দিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রজিৎ রায়, সিএবি-র কোষাধ্যক্ষ দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, সিএবি সদস্য অশোক বর্মা, সিএবি-র কলেজ সাব কমিটির চেয়ারম্যান সুদর্শন বিশ্বাস প্রমুখ।