Wrestling

নির্বাসিত ভারতীয় কুস্তি, অলিম্পিক্সে সাক্ষীরা নামবেন দেশ ছাড়াই, মোদী সরকারকে আক্রমণ মমতার

বিপদে পড়লেন ভারতের কুস্তিগিরেরা। ভারতের জাতীয় কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করে দিল বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। সঠিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন না করার কারণেই এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৩ ১২:০২
Share:

সাক্ষী মালিক। — ফাইল চিত্র।

চরম বিপদে পড়লেন ভারতের কুস্তিগিরেরা। ভারতের জাতীয় কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করে দিল বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। সঠিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন না করার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা পরিচালিত কোনও প্রতিযোগিতায় ভারতের কুস্তিগিরেরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে, অলিম্পিক্স বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মতো প্রতিযোগিতায় দেশের পতাকা ছাড়াই নামতে হবে তাঁদের। অলিম্পিক্স এখনও দূরে। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ পরের মাসেই রয়েছে। তার ট্রায়ালের দিনও ঘোষিত। কুস্তি সংস্থার নির্বাসন শুনে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

Advertisement

গত ২৭ এপ্রিল ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওএ) জাতীয় কুস্তির নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি অ্যাড-হক প্যানেল তৈরি করে দিয়েছিল। গঠন হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হত। বিশ্ব কুস্তি সংস্থার তরফেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল যে নির্বাচন না হলে ভারতের কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করা হবে। সেটাই হল। বুধবার রাতেই নাকি অ্যাড-হক প্যানেলকে নির্বাসনের ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাজমাধ্যমে মমতা লেখেন, “বিশ্ব কুস্তি সংস্থা ভারতের কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করেছে এই খবর শুনে আমি অবাক। গোটা দেশের কাছে এই ঘটনা লজ্জাজনক। কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের অহংকারী মনোভাব নিয়ে গোটা দেশের কুস্তিগিরদের টেনে নীচে নামিয়েছে। আমাদের কুস্তিগির বোনেদের উপর দাম্ভিক মানসিকতা দেখিয়েছে। নির্মম পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে আমাদের কুস্তিগির বোনেদের উপর নির্যাতন করেই চলেছে কেন্দ্র এবং বিজেপি। যাদের কোনও নৈতিক আদর্শ নেই, যারা আমাদের দেশের লড়াকু মেয়েদের পাশে দাঁড়ায় না, তাদের বিরুদ্ধে গোটা দেশের গর্জে ওঠা উচিত। শেষের সে দিন আর দূরে নেই।”

Advertisement

ভারতীয় কুস্তি সংস্থা এই মুহূর্তে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার দায়িত্বে রয়েছে অ্যাড-হক প্যানেল। প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরন সিংহ কুস্তিগিরদের শারীরিক নির্যাতনে অভিযুক্ত হওয়ার পরেই আগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। একাধিক বার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও কোনও না কোনও আদালতের নির্দেশে বার বার নির্বাচন পিছিয়ে গিয়েছে। ১২ অগস্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটিও পিছিয়ে যায় পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশে।

সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের একটি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হরিয়ানা কুস্তি অ্যাসোসিয়েশনের সচিব ইন্দ্রজিৎ সিংহ। তাঁর দাবি ছিল, তাঁদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে রিটার্নিং অফিসার হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশনকে ইলেক্টোরাল কলেজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ ভাবে কোনও সংস্থাকে সদস্যপদ বা ভোটাধিকার দেওয়া যায় না। কোনও ক্রীড়া সংস্থা সদস্যপদ পাবে কি না, তা ঠিক হতে পারে শুধু সর্বভারতীয় সংস্থার সাধারণ সভায়। তা ছাড়া হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশন কখনও হরিয়ানা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যও নয়। সর্বভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃত নয় এমন কোনও ক্রীড়া সংস্থা সেই খেলার সর্বভারতীয় সংস্থার সদস্য পদ পেতে পারে না। সেই নিয়মে হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশন সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সদস্য হতে পারে না। পেতে পারে না ভোটাধিকারও। এই মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না বলে জানিয়েছিলেন পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের বিচারপতি বিনোদ এস ভরদ্বাজ।

কুস্তি ফেডারেশনের বিদায়ী সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিভিন্ন পদের জন্য তাঁর ১৮ জন ঘনিষ্ঠ প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ। ১২ বছর ধরে সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদে রয়েছেন ব্রিজভূষণ। জাতীয় ক্রীড়া নীতি অনুযায়ী তিনি নিজে এ বার প্রার্থী হতে পারেননি। তবে সভাপতি পদে সঞ্জয় কুমার সিংহ-সহ একাধিক ঘনিষ্ঠ কর্তাকে প্রার্থী করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement