প্রশ্ন: নতুন নিয়মে প্যারিসে নামা অনিশ্চিত নোভাকের। ফাইল চিত্র
কোভিড বিধি না মানায় অস্ট্রেলীয় ওপেনে খেলতে পারেননি নোভাক জোকোভিচ। বিশ্বের এক নম্বর তারকার ফরাসি ওপেনে খেলা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হল।
ফ্রান্স সরকার মারণ ভাইরাসের প্রতিষেধক নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কড়াকড়ি আগেই করেছিল। টিকা নেওয়া না থাকলে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর থেকে যাঁরা সে দেশে প্রবেশ করবেন, তাঁদের প্রত্যেককে প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে শেষ চার মাসে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।
এতদিন পর্যন্ত ফ্রান্সের কোনও স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে হলে এই সময়টা ছ’মাসের ছিল। ফরাসি সরকারের সাম্প্রতিক পরিকল্পনা হচ্ছে, টিকা না নেওয়া থাকলে স্টেডিয়াম, রেস্তরাঁ, পানশালা বা জনসমাগম হয় এমন কোনও জায়গায় প্রবেশ আইন করে নিষিদ্ধ করার। জোকোভিচ যে প্রতিষেধক টিকা নেননি, তা কারও অজানা নয়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় তিনি করোনায় আক্রান্তও হয়েছিলেন। বর্তমান ছ’মাসের নিয়ম অনুযায়ী তাঁর ফরাসি ওপেনে খেলায় কোনও সমস্যা ছিল না। কারণ প্রতিযোগিতা শুরু হবে ২২ মে। কিন্তু চার মাসের মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার প্রমাণ আনার নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। তাই সাধারণ অবস্থায় নোভাক ফরাসি ওপেনেও খেলতে পারবেন না।
সার্বিয়ান তারকা তবু খেলার সুযোগ পেতে পারেন যদি এর মধ্যে আবার সংক্রমিত হন বা প্রতিষেধক টিকা নিয়ে নেন। জোকোভিচ কিন্তু ফরাসি ওপেনেও গত বারের চ্যাম্পিয়ন। প্যারিসের গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংগঠকরা পরিষ্কার জানিয়েছেন, বিশ্বের এক নম্বর তারকার খেলা অথবা না খেলার বিষয় নির্ভর করবে মে মাসে ফ্রান্সে কোভিড বিধি কী থাকবে, তার উপরে। এমনিতে টিকার শংসাপত্র ছাড়া কাউকে প্যারিসে খেলতে দেওয়া হবে না বলেই তাঁরা আগে জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখনও পরিষ্কার হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, টিকা না নিয়েও অস্ট্রেলীয় ওপেনে খেলতে যান জোকোভিচ বিশেষ মেডিক্যাল প্যানেলের ছাড়পত্র নিয়ে। যা গ্রহণযোগ্য মনে করেনি সে দেশের অভিবাসন দফতর। ভিসা বাতিল করে দেয় অস্ট্রেলিয়া সরকার। যার বিরুদ্ধে কার্যত বন্দি অবস্থায় থেকেই নোভাক মামলা লড়ে প্রথম বার জিতেও ছিলেন। কিন্তু সে দেশের অভিবাসন মন্ত্রী পরে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে দ্বিতীয় বার ভিসা খারিজ করে দেন তাঁর। মন্ত্রীর যুক্তি ছিল, এ ভাবে নোভাককে খেলার অনুমতি দেওয়া হলে, সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। কারণ অস্ট্রেলিয়ায় টিকা নিয়ে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টাই করা হচ্ছে। মন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও কিন্তু জোকোভিচ দ্বিতীয় বার আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে টেনিস তারকার বিরুদ্ধেই রায় দেওয়া হয়। এবং অস্ট্রেলীয় ওপেনে গতবারের চ্যাম্পিয়নকে মেলবোর্ন থেকে দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক জটিলতা পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছিল। সার্বিয়া সরকার বিবৃতি দেয়, নোভাকের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। তবু অস্ট্রেলিয়া সরকার তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরেনি।
এখন পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে তিনি ফরাসি ওপেনেও খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। এমনিতে এটিপিও চায় সব টেনিস খেলোয়াড়ই টিকা নিয়ে নিন। অথচ অদ্ভুত ভাবে এখনও প্রতিষেধক নিচ্ছেন না নোভাক। তিনি মনে করেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপার। কোনও ভাবেই তাঁকে জোর করে কিছু করানো যাবে না। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন রাফায়েল নাদালও। তাঁর অকপট বক্তব্য ছিল, টিকা নিয়ে নিলেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। সেটা নোভাক নিচ্ছেন না কেন?