গোল করার পর উচ্ছসিত ন্যাব্রি।
লিয়ঁ ০ • বায়ার্ন ৩
অপ্রতিরোধ্য বায়ার্ন মিউনিখ। বুধবার রাতে লিয়ঁকে ৩-০ চূর্ণ করে এগারোতম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠলেন থোমাস মুলারেরা। এই মরসুমে বায়ার্নের দুরন্ত সাফল্যের মতোই রোমাঞ্চকর এক উপেক্ষিত ফুটবলারের তারকা হয়ে ওঠার কাহিনি। তিনি, স্যাজ ন্যাব্রি।
২০১১ সালে জার্মানির স্টুটগার্ট থেকে বছর পনেরোর ন্যাব্রিকে আর্সেনালের যুব দলের জন্য নির্বাচিত করেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। এক বছরের মধ্যেই সিনিয়র দলে জায়গা করে নেন ন্যাব্রি। কিন্তু মাত্র আঠারোটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। চোটপ্রবণ ন্যাব্রিকে ২০১৫ সালে লোনে ওয়েস্ট ব্রমউইচ অ্যালবিয়নকে দিয়ে দেয় আর্সেনাল। সেখানেও এক ছবি। পুরো মরসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। পরের বছর জার্মানি ফিরে গিয়ে যোগ দেন ওয়েডার ব্রিমেনে। ২০১৭-তে বায়ার্ন সই করিয়েও প্রতিশ্রুতিমান উইঙ্গারকে লোনে ছেড়ে দেয় হফেনহাইমে খেলার জন্য। ২০১৮-’১৯ মরসুমে বায়ার্নে প্রত্যাবর্তনের পরে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি ন্যাব্রিকে।
বুধবার রাতে লিসবনে লিয়ঁর বিরুদ্ধে ন্যাব্রিই ১৮ মিনিটে বাঁ-পায়ের দুরন্ত গোলে এগিয়ে দেন বায়ার্নকে। দ্বিতীয় গোল করেন ৩৩ মিনিটে। ম্যাচের সেরাও হন তিনি। ৮৮ মিনিটে বার্য়ার্নের হয়ে ৩-০ করেন রবার্ট লেয়নডস্কি। প্রাক্তন ছাত্র ন্যাব্রির খেলায় ওয়েঙ্গার এক দিকে যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনই ভুলতে পারছেন না আর্সেনালে ন্যাব্রিকে রাখতে না পারার যন্ত্রণা। একটি ক্রীড়া ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি ন্যাব্রিকে আর্সেনালে নিয়ে এসেছিলাম। সৃজনশীল ফুটবলার। দু’পা দিয়েই গোল করতে পারে। কিন্তু ভয়ঙ্কর চোটপ্রবণ ছিল। সেই ন্যাব্রি এখন অনেক পরিণত। এই মুহূর্তে জার্মানির অন্যতম সেরা ফুটবলার।’’ কেন ছেড়ে দিয়েছিলেন ন্যাব্রিকে? ওয়েঙ্গারের দাবি, ‘‘আমি কখনওই ন্যাব্রিকে ছাড়তে চাইনি।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেছেন, ‘‘তবে আমিই ওকে লোনে পাঠিয়েছিলাম ওয়েস্ট ব্রমউইচে।’’ প্রাক্তন আর্সেনাল ম্যানেজার আরও বললেন, ‘‘আসলে ব্রিমেনের সঙ্গে বায়ার্নের একটা বোঝাপড়া হয়েছিল। এই কারণেই আর্সেনালের সঙ্গে চুক্তি নবীকরণ করেনি ন্যাব্রি। আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম ও চলে যাওয়ায়।’’
২৫ বছর বয়সি ন্যাব্রি এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত ২৩টি গোল করেছেন। থোমাস মুলারের পরে তিনিই জার্মানির একমাত্র ফুটবলার, যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে জোড়া গোল করেছেন। এখানেই শেষ নয়। রবার্ট লেয়নডস্কির সঙ্গে জুটি বেঁধে ভেঙেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-গ্যারেথ বেলের গড়া ২৩ গোলের নজিরও। ২০১৩-’১৪ মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনাল্ডো করেছিলেন ১৭ গোল। বেল গোল করেছিলেন ছ’টি। দু’জনে মিলে গোল করেছেন ২৩টি। এই মরসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লেয়নডস্কি এখনও পর্যন্ত করেছেন ১৫টি গোল। আর ন্যাব্রি করেছেন নয়টি। দু’জনের মোট গোল ২৪।