এশিয়ান গেমসে শুরুতেই ছিটকে যাওয়ার মুখে সুনীল ছেত্রীরা! ইনচিওনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আমিরশাহির কাছে পাঁচ গোল হজম করেছে ভারত। যে কুৎসিত হারের পর আরও একবার উইম কোভারম্যান্সের অপসারণের দাবি উঠে গেল ভারতীয় ফুটবল মহলে।
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিলেন, ‘‘কোভারম্যান্সকে এখনই তাড়িয়ে দেওয়া উচিত। ওঁর কোচিংয়ে ভারতীয় দল বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।” সঙ্গে যোগ করলেন, “যদি বিদেশি কোচই আনতে হয়, তবে কোভারম্যান্সদের মতো নিচুু মানের কোচ না এনে, ভাল কোচ নিয়ে আসা উচিত। আর সেই কোচের সঙ্গে যাকে তাকে সহকারী করে জুড়ে না দিয়ে, সুব্রত ভট্টাচার্য, আর্মান্দো কোলাসোর মতো অভিজ্ঞদের নিয়ে আসা উচিত।” ভারতে বসে প্রসূন যখন সুনীল ছেত্রীদের কোচকে ছেঁটে ফেলার দাবি তুলছেন, তখন ইনচিওন থেকে ফোনে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সুব্রত দত্ত বললেন, “কোভারম্যান্সের জ্ঞান আছে, কিন্তু ম্যাচে তার কোনও প্রয়োগ দেখতে পেলাম না। এ দিন কোচের স্ট্র্যাটেজিতে ভুল ছিল বলেই আমার মনে হয়েছে।” তিনিও হতাশ।
ভারতের ব্যথর্তা প্রসঙ্গে প্রসূন, সুব্রতদের মতো সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে কোভারম্যান্সকেই দায়ী করেলেন ভারতের ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল কোচ ডেরেক পেরেরাও। গোয়া থেকে ফোনে বললেন, “আমার মনে হয়, ভারতীয় ফুটবলকে বুঝতে কোভারম্যান্সের কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে। যে জন্য সঠিক গাউডলাইন পাচ্ছে না ফুটবলাররা।”
এর আগে ২০১১-য় প্রি-ওয়ার্ল্ড কাপের যোগ্যতা নির্ণায়ক ম্যাচে আমিরশাহির বিরুদ্ধে ২-২ ড্র করেছিল ভারত। প্রায় তিন বছর বাদে অনূর্ধ্ব-২৩ আমিরশাহির কাছে পাঁচ গোল খেল কোভারম্যান্সের টিম। ইনচিওনের খবর, এ দিন পরিকল্পনাহীন ফুটবল খেলে ভারত। কোভারম্যান্সের ছেলেদের নাকি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একেবারে ছন্নছাড়া লেগেছে। ম্যাচের চোদ্দ থেকে কুড়িএই ছ’মিনিটের ঝড়েই যেন উড়ে যায় ভারত। সৌজন্যে সইদ আলকাথিরির দুই গোল এবং আল আহবাবির গোল।
এর পরও ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টাটুকুও করতে দেখা যায়নি সুনীলদের। বিরতির পর নিজের তৃতীয় গোলটি করেন আমিরশাহি অধিনায়ক আলকাথিরি। এবং ম্যাচের শেষের দিকে আহবাবির দ্বিতীয় গোলে ষোলকলা পূর্ণ হয়।
সুব্রত দত্ত আফসোস করছিলেন, “দল যদি ভাল ফুটবল খেলে হারত, তা হলে আফসোস থাকত না। কিন্তু আজ খেলা থেকেই যেন হারিয়ে গেল ভারত।”
ফুটবলের পুরুষ এবং মহিলা কোনও দলকেই এশিয়ান গেমসের ছাড়পত্র দিতে রাজি ছিল না কেন্দ্রীয় সরকার। ফেডারেশনের সভাপতি প্রফুল্ল পটেলের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত ইনচিওন যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছিলেন সুনীলরা। মহিলা দল যখন প্রথম ম্যাচেই ১৫ গোলে দুরন্ত জয় পেয়ে ফেডারেশনের মান রাখল, তখন কোভারম্যান্সের দল এ দিন যেন প্রমাণ করল এশিয়ান গেমসে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা সত্যিই তাদের নেই!