রবার্তা ভিঞ্চি। ফ্লাশিং মেডোর নতুন ‘ডেভিড’। ছবি: এএফপি।
পচা শামুকে পা কাটার প্রবাদটা তা হলে এখনও কার্যকর!
সেরেনা-শাসন নিয়ে টেনিস সার্কিটের রসিকতা তা হলে নির্মম ভাবে বুমেরাং হয়ে উঠতে পারে!
আড়াই দশকেরও বেশি পরে ঐতিহাসিক ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম করার চ্যালেঞ্জ রাউন্ড, মানে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে ওঠার ম্যাচে সেরেনা উইলিয়ামস এক সেট এগিয়ে থেকেও মহানাটকীয় ভাবে হেরে গেলেন অবাছাই ইতালীয় রবার্তা ভিঞ্চির কাছে। ৬-১, ৪-৬, ৪-৬!
বিশ্বের অবিসংবাদী এক নম্বরকে সেমিফাইনালে এক অখ্যাত ইতালীয়র রুদ্ধশ্বাস হারানোর আগে অন্য সেমিফাইনালে আবার আর এক ইতালিয়ান, ২৬ নম্বর বাছাই ফ্লাভিয়া পেনেত্তার ৬-১, ৬-৩-এ বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় সিমোনা হালেপকে হারানোটাও রোমাঞ্চকর!
রাতারাতি সেরেনার ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম ‘ইতালি ওপেনে’ পরিণত! যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালে পেনেত্তা বনাম ভিঞ্চি। অল ইতালিয়ান ফাইনাল! মাত্র দু’ঘণ্টায়!
নাকি ব্যাপারটা সেরেনা আগেই আঁচ করেছিলেন? যদিও ভিঞ্চির মুখোমুখি হওয়ার আগে সেরেনার মন্তব্য ‘‘সত্যিকারের একটা সমানে-সমানে গ্রেট ম্যাচ,’’ টেনিসমহলের কাছে বছরের অন্যতম বড় ‘জোকস’ বলে গণ্য হচ্ছিল!
বয়সেই দু’জনে যা প্রায় সমান। ৩৩ আর ৩২। নইলে টেনিসের সব কিছুতেই আকাশ-পাতাল তফাত। সার্কিটে বলা হয়, ‘‘ডোন্ট ব্রেক সেরেনা! ইট সিমস ইউ ব্রেক হার হার্ট!’’ ভিঞ্চি সেটা এক বার নয়, দু’বার করে বসেছিলেন। প্রথম সেটে সেরেনার সার্ভিস ভেঙে ২-১ এগোন। দ্বিতীয় সেট দখল করেন। প্রথম ক্ষেত্রে স্বভাবসিদ্ধ ‘রেগেমেগে’ পরের পাঁচটা গেম জিতে সেরেনা সেট ৬-২-এ পান। নির্ণায়ক তৃতীয় সেটে স্বাভাবিক ব্যাপার হত সেরেনার স্বমূর্তি ধারণ করে বিপক্ষকে উড়িয়ে দেওয়া। যেটা এ বছর আগের তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পথে এক ডজন বার করেছেন তিনি।
কিন্তু কোনও এক রবার্তা ভিঞ্চির সামনে অপ্রত্যাশিত চাপে ভেঙে পড়লেন তিনি। সহজতম ফোরহ্যান্ড ভলি নেটে মারলেন। নেটের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যাকহ্যান্ড মিস করলেন। মেজাজ হারিয়ে মাটিতে র্যাকেট আছড়ে বেঁকিয়ে ফেললেন। ডাবল ব্রেক পয়েন্ট পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না।
মেয়েদের টেনিস হলেও সেখানে সেরেনা সাক্ষাত অর্জুন! কিন্তু মোক্ষম সময়ে অর্জুনের রথের চাকা কর্ণের রথের চাকার মতোই বসে গেল যেন!