Tokyo Olympic 2020

Tokyo Olympics: অলিম্পিক্সে সিন্ধুর পাশে কোরীয় কোচ, ‘গুরু’ গোপীচন্দ কোথায় গেলেন?

টোকিয়ো অলিম্পিক্সে কোথাও দেখা যাচ্ছে না গোপীচন্দকে। কারণ তিনি টোকিয়োয় যাননি। তাঁর বদলে সিন্ধুর কোচ হিসেবে অলিম্পিক্সে গিয়েছেন কোরিয়ার পার্ক তায়ে সাং।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১ ১৯:০৫
Share:

কোচ পার্কের সঙ্গে সিন্ধু। ছবি পিটিআই

২০১৬ রিয়ো অলিম্পিক্সে রুপো জয়ের পর পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধুকে নিয়ে যতটা হইচই হয়েছিল, ততটাই মাতামাতি হয়েছিল তাঁর কোচ পুল্লেলা গোপীচন্দকে নিয়ে। গুরু-শিষ্যাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের অন্ত ছিল না। কিন্তু টোকিয়ো অলিম্পিক্সে কোথাও দেখা যাচ্ছে না গোপীচন্দকে। কারণ তিনি টোকিয়োয় যাননি। তাঁর বদলে সিন্ধুর কোচ হিসেবে অলিম্পিক্সে গিয়েছেন কোরিয়ার পার্ক তায়ে সাং। সিন্ধুকে সাফল্যের দোরগোড়ায় এনে দিলেন তিনি। অলিম্পিক্সের সেমিফাইনালে চলে গেলেন সিন্ধু। ইয়ামাগুচিকে হারালেন ২১-১৩, ২২-২০ ব্যবধানে। পদক জয়ের থেকে এক ধাপ দূরে সিন্ধু।

Advertisement

সমর্থকদের মনে তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জেগেছে, কে এই কোরিয়ার কোচ? কেনই বা গোপীচন্দ টোকিয়োয় যাননি?

আসল ঘটনা হল, সিন্ধু দীর্ঘদিন ধরেই গোপীচন্দের কাছে অনুশীলন করেন না। কোরিয়ার পার্কই এখন তাঁর ব্যক্তিগত কোচ। গত দু’বছর ধরে এই পার্কের কাছেই অনুশীলন করছেন সিন্ধু। এমনকী, হায়দরাবাদের গোপীচন্দের অ্যাকাডেমিও তিনি এখন ব্যবহার করেন না। বদলে তিনি গাচিবাউলি স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো ব্যবহার করেন।

Advertisement

সিন্ধুর কোচ পার্ক নিজের কেরিয়ারে খুব একটা বিখ্যাত ছিলেন না। ২০০২ এশিয়ান গেমসে সোনা বাদে তাঁর কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য কিছু নেই। কিন্তু ব্যাডমিন্টনের খুঁটিনাটি সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান অত্যন্ত প্রখর। সিন্ধুর ছোটখাটো ভুল শুধরে তাঁকে আগের থেকেও বেশি শক্তিশালী তৈরি করে তুলেছেন তিনি। কোর্টের মধ্যে সিন্ধু এখন আরও বেশি ক্ষিপ্র।

বস্তুত, ২০১৬-র রুপোজয়ের পর থেকেই সিন্ধু-গোপীচন্দের সম্পর্কে ধুলো জমতে শুরু করেছিল। সিন্ধুর অভিযোগ ছিল, গোপীচন্দ তাঁর জন্য যথেষ্ট সময় দিতে পারছেন না। দুই পরিবারের মধ্যেও ঝামেলা হয় এ নিয়ে। সিন্ধু একসময় রাগের মাথায় ইংল্যান্ডে চলে গিয়েছিলেন। গোপীচন্দ তা অস্বীকার করেন এবং বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালে নিয়ে আসেন ইন্দোনেশিয়ার কোচ মুলয়ো হান্দোয়োকে। বছর দেড়েক এ দেশে ছিলেন মুলয়ো। তিনি যথেষ্ট উন্নতি ঘটিয়েছিলেন সিন্ধু এবং বাকি ভারতীয়দের খেলায়।

এরপর কোরিয়া থেকে পার্ক এবং কিম জি হিউনকে নিয়ে আসেন গোপী। সিন্ধুর খেলায় আরও উন্নতি করেছিলেন কিম। তাঁর অধীনে থাকাকালীনই বাসেলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব জেতেন সিন্ধু। এরপর আচমকাই স্বামীর অসুস্থতার কারণে নিউজিল্যান্ডে চলে যান কিম। তখন থেকেই সিন্ধুর কোচ পার্ক।

সিন্ধুর খেলায় এখন একেবারেই নাক গলান না গোপী। ভারতের পুরুষ ডাবলস জুটি সাত্ত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি এবং চিরাগ শেট্টিও অলিম্পিক্সের বেশ কিছুদিন আগে গোপীচন্দের অ্যাকাডেমি ছেড়ে গাচিবাউলিতে অনুশীলন করা শুরু করেন। পার্কের পাশাপাশি তাঁদের অনুশীলন করানো শুরু করেন ডেনমার্কের প্রাক্তন খেলোয়াড় মাতিয়াস বো।

করোনা অতিমারিতে যখন গোটা বিশ্বে খেলাধুলো থমকে, তখন গত বছর অগস্ট মাসে আচমকাই ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন সিন্ধু। সে সময় এক সাক্ষাৎকারে গোপীচন্দের সঙ্গে সিন্ধুর ঝামেলার কথা উসকে দেন সিন্ধুর বাবা রামান্না। সিন্ধু যদিও পরে বলেছিলেন তাঁর সঙ্গে গোপীর কোনও ঝামেলা নেই!

সিন্ধুর সঙ্গে পার্কের বোঝাপড়া অনবদ্য। সিন্ধু একাধিকবারই একথা স্বীকার করেছেন। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সিন্ধু বলেছেন, “আমার মনের ভিতরে কী চলছে সেটা ভাল করে বুঝতে পারে পার্ক। আমি চাপে থাকলে বা কঠিন পরিস্থিতিতে পড়লে আমাকে নিজের মতো করে ভাবতে দেয়। জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে না। চোখের ইশারায় ম্যাচের কৌশল আলোচনা করে নিতে পারি আমরা। ও জানে কখন আমাকে এসে পরামর্শ দিতে হবে। তাই টোকিয়োয় গোপী স্যরকে মিস করব না।” আর গোপীর সম্পর্কে সিন্ধু বলেছেন, “গোপী স্যর আমার ব্যাডমিন্টন যাত্রার একটা অংশ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement