সেমিফাইনালে হাজি আলিয়েভের বিরুদ্ধে লড়ছেন বজরং। শুক্রবার টোকিয়োয়। পিটিআই
টোকিয়ো অলিম্পিক্সে বজরং পুনিয়াকে ফ্রিস্টাইল কুস্তির ৬৫ কেজি বিভাগের ফাইনালে না উঠতে দেখে মন ভেঙে গেল। অনেকে বলতে পারেন, সব হয়ে যাওয়ার পরে বলছি। কিন্তু বজরংকে প্রতিপক্ষের ক্লান্ত হয়ে পড়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে প্রথম দিকেই আক্রমণ করতে দেখলে ভাল লাগত।
আমার বিশ্বাস বজরং নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীকে লড়াইয়ের প্রথম দিকে আক্রমণে পয়েন্ট তুলে নিয়ে ৪-১ এগিয়ে যেতে দিয়েছে, এটা ভেবে ও নিশ্চয়ই হতাশ হবে। কোনও এক দিন বজরং যখন ওর এই সেমিফাইনালের ভিডিয়ো দেখবে, নিজেই অবাক হয়ে যাবে ভেবে যে, কেন ও প্রথম দিকেই পায়ে আক্রমণ করল না।
প্রতিপক্ষ কম ওজনের বিভাগ থেকে উঠে আসায় হয়তো বজরং শক্তির দিক থেকে কিছুটা এগিয়েছিল। তার সুবিধা লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকেই নিতে পারত বজরং। ওর আগের দুটো লড়াইয়েও লক্ষ্য করেছি ও একই কৌশল নিয়েছিল। প্রথমে রক্ষণাত্মক থাকবে, পরে পয়েন্ট তুলতে ঝাঁপাবে।
হয়তো বজরং জানত, ওর জন্য সব চেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে এই আজ়েরবাইজানের কুস্তিগির। তবে এখন আমাদের আশা শনিবার বজরং ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচ জিততে পারবে। ওর মতো কুস্তিগিরের অলিম্পিক্স পদক নিয়ে ফেরাই প্রাপ্য। শুক্রবার বজরংয়ের তিনটে বাউট দেখে আমার কিন্তু বিশ্বাস, ফিটনেস নিয়ে ওর কোনও সমস্যা হয়নি। জানি, রাশিয়ায় পায়ে চোট পাওয়ার পরে অনেকে ওর ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু এ দিন ওর খেলা দেখে মনে হল, সেই চোট থেকে সেরে উঠেছে। তাই এই বিষয়ে আর না কথা বাড়ানোই ভাল।
সীমা বিসলাকে যখন ওর প্রথম বাউটে হারতে দেখলাম, তখন কুস্তিগিরদের উপরে চাপ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেই চিন্তা করছিলাম। চিন্তাটা আটকাতে পারছিলাম না। যখন আমাদের দেশের কোনও মহিলা কুস্তিগির অলিম্পিক্স পদক জেতেনি, তখনও কিন্তু আমি চাপ অনুভব করিনি।
বিনেশ ফোগতের কথায় আসা যাক। রিয়ো অলিম্পিক্সে হাঁটুতে চোট পাওয়ার পরে বিনেশকে দেখেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। তখন মনে হয়েছিল, বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে ও অলিম্পিক্স পদক জয়ের স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাবে। যদি বড় বাধা কেউ হয়ে উঠতে পারে ওর জন্য, সেটা হবে জাপানের প্রতিপক্ষ। কিন্তু ভাবিনি এ ভাবে বিনেশ হেরে যাবে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ভেনেসার কাছে।
রবি কুমার দাহিয়ার যে রকম প্রশংসা হচ্ছে চারিদিকে, তা ওর প্রাপ্য। দারুণ লড়াই করেছে রবি। পাশাপাশি কয়েক সেকেন্ডের জন্য দীপক পুনিয়ার ব্রোঞ্জ হাতছাড়া হওয়ার দুঃখ সহজে যাবে না। দীপকের বিরতির পরে অত রক্ষণাত্মক হওয়া উচিত হয়নি। (টিসিএম)