ফাইল চিত্র।
এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্যে শুরু হতে চলেছে টোকিয়ো অলিম্পিক্স। একটা সময় এ বারের অলিম্পিক্স হবে কি না, তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল।
এই অতিমারির মধ্যে আয়োজনই বুঝিয়ে দিচ্ছে এ বারের অলিম্পিক্সের গুরুত্ব কতটা। বছরের পর বছর ধরে অলিম্পিক্সে মানবজাতির উন্নতি প্রতিফলিত হয়ে আসছে। পুরুষদের ১০০ মিটারের পারফরম্যান্সই উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক। ১৮৯৬ অলিম্পিক্সে বিজয়ী সময় নিয়েছিলেন ১২ সেকেন্ড। এখন সেই সেরা সময় দাঁড়িয়েছে ৯.৫৮ সেকেন্ড। মানুষ নিজেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে!
এ বার ভারতীয় দলের কথায় আসা যাক। এ বারের ভারতীয় দল অনেক খেলাতেই খুব শক্তিশালী। যা দেখে আমার মনে হচ্ছে, ভারতের অলিম্পিক্স থেকে দুই অঙ্কের পদক প্রাপ্তির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এ বার পূরণ হতে পারে। যে সব খেলা থেকে পদকের আশা দেখছি, সেগুলো হল— শুটিং, কুস্তি, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন, তিরন্দাজি এবং অ্যাথলেটিক্স। শুটিং দলে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার দারুণ মিশেল রয়েছে। আমার মনে হয় শুটিং থেকে এ বার ৪টে পদক আসতে পারে। তারকা হয়ে উঠতে পারে সৌরভ চৌধরি, মনু ভাকের, রাহি স্বর্ণবত এবং অঞ্জুম মুদগিল। অভিষেক বর্মা, যশস্বিনী দেশওয়াল এবং দীপক কুমারও চমক দেখাতে পারে।
কুস্তি থেকেও আসতে পারে অন্তত দুটি পদক। মেয়েদের বিভাগে বিনেশ ফোগত এবং পুরুষদের বিভাগে বজরং পুনিয়া পদক জয়ের বড় দাবিদার। বক্সিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর অমিত পঙ্ঘাল এবং মেরি কম পদক জেতার জোরালো দাবি রাখে। ব্যাডমিন্টন এমন একটা খেলা যা আমাদের গত দুটি অলিম্পিক্সে পদক দিয়েছে। আশা করি পি ভি সিন্ধু সেই ধারা বজায় রাখতে পারবে। ক্যারোলিনা মারিন এ বার খেলছে না। তা সত্ত্বেও চিনের সেরা খেলোয়াড়েরা, তাইওয়ানের তাই জু ইং, জাপান এবং কোরিয়ার প্রতিপক্ষরা সিন্ধুর জন্য লড়াই কঠিন করে
তুলতে পারে। তিরন্দাজিতে রয়েছে বিশ্বের এক নম্বর দীপিকা কুমারী। ও খুব ভাল ছন্দেও রয়েছে। এ বার হয়তো দীপিকা দেশকে ওর প্রথম অলিম্পিক্স পদক এনে দিতে পারবে।
এ বার আমার প্রিয় খেলা অ্যাথলেটিক্সের কথায় আসি। আশা করছি, জ্যাভলিন থ্রোয়ে নীরজ চোপড়া স্বাধীনতার পরে অ্যাথলেটিক্স থেকে দেশকে প্রথম অলিম্পিক্স পদক এনে দিতে পারবে। পাশাপাশি মেয়েদের ডিসকাস, পুরুষদের তিন হাজার মিটার স্টিপলচেজ এবং পুরুষদের শটপাটে আমাদের অ্যাথলিটদের হয়তো ফাইনালে উঠতে দেখব।
এই করোনা অতিমারির মধ্যেও আশা করব, গোটা দেশের মানুষ আমাদের অ্যাথলিটদের যে যার নিজের বাড়ি থেকেই উৎসাহ দিয়ে যাবে। ভারতীয় দলের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইল। গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে আমরাও কম যাই না। (টিসিএম)