n স্বপ্নভঙ্গ: ষষ্ঠ হয়েই খুশি থাকতে হল কমলপ্রীতকে। ছবি পিটিআই।
একজন ভারতীয় হিসেবে টোকিয়ো অলিম্পিক্স দেখে উৎসাহিত হওয়ার মতো অনেক কিছুই পাচ্ছি। কোভিডে এক বছর পিছিয়ে যাওয়া গেমসেও আমার দেশের প্রতিযোগীদের পারফরম্যান্স যথেষ্টই ভাল।
মীরাবাই চানুর সৌজন্যে শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। মেয়েটা সত্যিই চমকে দিয়েছে ভারোত্তোলনের ৪৯ কেজিতে রুপো জিতে। ওর এই সাফল্য কিন্তু আর একটা সত্যও প্রতিষ্ঠিত করছে। সেটা হল, অলিম্পিক্সের মতো মঞ্চে অভিজ্ঞতা অর্জন করাটা বিরাট ব্যাপার। একটা গেমসে কেউ ব্যর্থ হলেই তাকে বাতিল করে দেওয়া যায় না।
ঘটনা হল, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খেলোয়াড়েরা জীবনের দ্বিতীয় অলিম্পিক্সে অনেক ভাল খেলে। এখানে নিজের কথাও একটু বলে নিই। আমি দৌড়েছিলাম ১৯৮৪তে মস্কো অলিম্পিক্সেও। কিন্তু সেরা সময়টা করি তার পরের বার লস অ্যাঞ্জেলসে। এমনকি মিলখা সিংহও প্রথম বার ১৯৫৬ মেলবোর্ন গেমসে সাফল্য পাননি। কিন্তু তার পরের বার রোমে প্রায় পদকই জিতে যাচ্ছিলেন।
এটা ভেবে ভাল লাগছে, চানুকে দিয়েই ভারতের পদক অভিযান শেষ হয়ে যায়নি। বক্সিংয়ে লাভলিনার বিজয়মঞ্চে দাঁড়ানোটা সময়ের অপেক্ষা। পি ভি সিন্ধুও জিতেছে। যার অর্থ একটা ব্রোঞ্জও এসে গেল। কী যে আনন্দ হচ্ছে, বলে বোঝাতে পারব না।
হকিতে শেষপর্যন্ত কী হবে জানি না। কিন্তু গ্রুপে মনপ্রীত সিংহেরা যথেষ্ট ভাল খেলেছে। রবিবার এমনকি সেমিফাইনালেও উঠল গ্রেট ব্রিটেনকে হারিয়ে। মেয়েরাও শুরুর ধাক্কাটা সামলে নিয়ে দুরন্ত খেলে উঠেছে সেমিফাইনালে। আমি তো শুটারদের পারফরম্যান্সেও বিরাট কিছু হতাশ হইনি। মানছি, ওরা ভাল ফল করেনি। কিন্তু মনু ভাকেরদের বয়স একেবারেই অল্প। এইসব কমবয়সি শুটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্যারিস অলিম্পিক্স তো পড়েই রইল।
সবশেষে আসি আমার নিজের খেলা অ্যাথলেটিক্স প্রসঙ্গে। অ্যাথলিটরাও কিন্তু এ বার যথেষ্ট ভাল করছে। অবিনাশ সাবলের কথাই ধরা যাক। ছিটকে গেলেও ও তিন হাজার মিটার স্টিপলচেজে জাতীয় রেকর্ড ভেঙেছে। নিজের সময় কমিয়েছে তিন সেকেন্ড। সেটা কিন্তু মোটেও কম কথা নয়।
পাশাপাশি মেয়েদের ডিসকাস থ্রোয়ে কমলপ্রীত কৌরের পারফরম্যান্সে তো মুগ্ধ হলাম। পঞ্জাবের মেয়েটা ফাইনালে উঠেছিল দ্বিতীয় হয়ে। যা সত্যিই ভাবা যায়নি। জানতাম ফাইনালের লড়াইটা খুব কঠিন হবে। ওখানে যুক্তরাষ্ট্র, ক্রোয়েশিয়া, কিউবার থ্রোয়াররাও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে। তবু ভেবেছিলাম, ওই রকম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়ে কমলপ্রীত স্বাধীন ভারতের ৭৩ বছরের অপেক্ষা শেষ করে পদক জিততেও পারে। সেটা অবশ্য সত্যি হল না। ফাইনালে ষষ্ঠ হল কমলপ্রীত। সঙ্গে ছেলেদের জ্যাভলিনে নীরজ চোপড়াকে নিয়েও আশাবাদী আমি। (টিসিএম)