মণিকা বাত্রা ও সৌম্যদীপকে নিয়ে বিতর্ক কমছে না।
মণিকা বাত্রার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে সর্বভারতীয় টেবিল টেনিস সংস্থা। টোকিয়ো থেকে হোয়াট্সঅ্যাপ কল-এ এমনটাই জানালেন সংস্থার সচিব অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় দলের মুখ্য প্রশিক্ষক সৌম্যদীপ রায়কে উপেক্ষা করার জন্যই মণিকার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন অরুণ।
মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে টেলিফোনে অরুণ বলেন, “অলিম্পিক্সের আসরে ব্যক্তিগত কোচ নিয়ে যাওয়া কোনও নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু মণিকা যে ভাবে জাতীয় দলের কোচকে উপেক্ষা করেছে, সেটা মোটেই ভদ্রতা নয়। আমাদের সবার কাছে এটা খুব দৃষ্টিকটু ও অস্বস্তিকর। দেশের একজন প্রথম সারির ক্রীড়াবিদের কাছ থেকে এমন আচরণ শোভা পায় না। জাতীয় কোচকে অপমান করা মানে দেশকে অপমান করা।”
এখানেই থেমে না থেকে সর্বভারতীয় টেবিল টেনিস সংস্থার সচিব আরও যোগ করেন, “মণিকার দাবি, সৌম্যদীপ নাকি সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত কোচ! তাই ও সৌম্যদীপের কাছে অনুশীলন করতে চায় না। এটা বোকা বোকা যুক্তি ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা ৩১ জুলাই দেশে ফিরছি। অগস্টের প্রথম সপ্তাহে অলিম্পিক্সের পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনায় বসব। সেখানে সবার আগে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। দলের ম্যানেজার এম পি সিংহ ও কোচ সৌম্যদীপ এই বিষয়ে রিপোর্ট দেবেন। তারপর মণিকার বিরুদ্ধে বাকি সিদ্ধান্ত সংস্থা নেবে।”
কিন্তু মণিকা কী ধরনের শাস্তি তিনি পেতে পারেন, সে বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে নারাজ অরুণ। তাঁর কথায়, “মণিকার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হবে সেটা আমার পক্ষে টোকিয়ো থেকে বলা সম্ভব নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি যে, আমরা কোনও অশোভন আচরণ মেনে নেব না।”
সমস্যায় মণিকা বাত্রা। ফাইল চিত্র
কেন এমন কান্ড ঘটালেন মণিকা? শোনা যাচ্ছে, সৌম্যদীপকে উপেক্ষা করে তাঁর ব্যক্তিগত কোচ সন্ময় পরাঞ্জপের জন্য বিশেষ কার্ড চেয়েছিলেন মণিকা। যাতে ম্যাচের সময় সন্ময় তাঁর সঙ্গে থাকতে পারেন। কিন্তু ২২ জুলাই পর্যন্ত তাঁর আবেদন মেনে নেওয়া হয়নি। ফলে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে সৌম্যদীপকে ছাড়াই খেলেছিলেন মণিকা। তবে ২৫ জুলাই মণিকার খেলার সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক সন্ময়। গ্যালারিতে বসেই ২৬ বছরের তরুণীকে নির্দেশ দিচ্ছিলেন তিনি। ম্যাচের সময় বারবার টেলিভিশনে সেই ছবি ধরা পড়েছে।
অলিম্পিক্সের আসরে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক নিয়ে যাওয়ার বিরোধী নয় সংস্থা। সেই জন্য মণিকার সঙ্গে সাথিয়ান জ্ঞানশেখরনের ব্যক্তিগত কোচ নিয়ে যাওয়ার আবেদনও মেনে নিয়েছিলেন কর্তারা। কিন্তু ২৬ বছরের দিল্লির এই অ্যাথলিট যে অলিম্পিক্সের মঞ্চে জাতীয় দলের প্রশিক্ষককে অপমান করে বসবেন, তা বুঝতে পারেননি কর্তারা। সচিব বলেন, “সবাই ভেবেছিল মণিকা পদকের দাবিদার বলে আমরা মুখ বুজে বসে আছি। ব্যাপারটা আদৌ তেমন নয়। দেশের কাছে সকলেই সমান। সেটা ওর মাথায় রাখা উচিত ছিল।"