ব্রোঞ্জ জেতার পর পিভি সিন্ধু। ফাইল চিত্র
খেলোয়াড় হিসেবে তেমন সাফল্য পাননি। ২০০২ সালের বুশান এশিয়ান গেমসে সোনা জয় ছাড়া খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর তেমন সাফল্য নেই। পরবর্তী সময় কোরিয়ার জাতীয় দলের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করলেও তাঁর আমলে দেশ অলিম্পিক্সে পদক জেতেনি। তবে চলতি টোকিয়ো অলিম্পিক্সে এহেন পার্ক তায়ে সাংও পদক জয়ের স্বাদ পেলেন। স্বভাবতই আপ্লুত পিভি সিন্ধুর প্রশিক্ষক। তবে অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী সিন্ধুকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আগে আগে যে তিনি চাপে ছিলেন সেটা স্বীকার করছেন পার্ক তায়ে সাং। এমনকি ব্রোঞ্জ পদকের ম্যাচের সময়ও যে তাঁর চাপ কমছিল না, সেটাও জানালেন এই প্রশিক্ষক।
হি বিংজিয়ায়োকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জিতলেও বেশ কিছু ভুল করেছিলেন সিন্ধু। সেটা নিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলেন পার্ক তায়ে সাং। ছাত্রীকে কি বলছিলেন তিনি? পার্ক তায়ে সাংয়ের প্রতিক্রিয়া, “সিন্ধু সেই ম্যাচে মাঝেমধ্যেই পয়েন্ট নষ্ট করছিল। ফলে আমি তো একটা সময় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। মাঝেমধ্যে খেই হারালেই বলতাম, ‘সিন্ধু আরাম সে...আরাম সে’। সেটাই অবশেষে কাজে এল।”
২০১৯ সালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পর সিন্ধুর কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন পার্ক তায়ে সাং। কেমন ছিল সেই মুহূর্ত? কোচের অকপট স্বীকারোক্তি, “আমি যখন সিন্ধুকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করি ততদিনে ও রিয়ো অলিম্পিক্সে পদক জিতে নিয়েছে। শুধু ভারত কেন ব্যাডমিন্টন জগতে ওকে সবাই একনামে চেনে। সেই জন্য শুরুর দিকে আমি কিছুটা চাপে ছিলাম। কারণ আমার আমলে কোরিয়া দলও কোনও পদক জেতেনি। তাই এ বার সোনা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই অভিযান শুরু করেছিলাম। তবে ব্রোঞ্জ জয়ও কিন্তু বড় প্রাপ্তি।”
ব্রোঞ্জ জেতার পর সিন্ধুকে জড়িয়ে ধরেছেন পার্ক তায়ে সাং। ফাইল চিত্র
গত বছর কোভিডের সময়ও অনুশীলন থেমে থাকেনি। গাচিবাউলি স্টেডিয়ামে সিন্ধুকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে গিয়েছেন। ছাত্রীর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে পরিবারকে পর্যন্ত উপেক্ষা করেছেন। দেশে ফিরে যাওয়ার বদলে থেকে গিয়েছেন ভারতে।
সেই ত্যাগের অবদান তিনি অবশেষে পেলেন। পার্ক তায়ে সাং বলছেন, “এটা আমার কাছে দারুণ আনন্দের মুহূর্ত। কারণ এই প্রথম বার আমার কোনও খেলোয়াড় অলিম্পিক্সে পদক জিতল। সিন্ধু এ বার পদক পাওয়ার থেকে আমার জীবন পুরো বদলে গিয়েছে। অগণিত ভারতীয় সমর্থক আমার ইনস্টাগ্রামে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছে। এটাই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।”