আশাবাদী: বক্সিংয়ে একটা বা দুটো পদক দেখছেন বিজেন্দ্র। ফাইল চিত্র।
ভারতীয় বক্সিংয়ে কিংবদন্তির আসন দখল করে নিয়েছেন তিনি। প্রথম ভারতীয় বক্সার হিসেবে অলিম্পিক্সে পদক জিতেছেন। ২০০৮ সালে ব্রোঞ্জ। সেই বিজেন্দ্র সিংহ মঙ্গলবার ভিডিয়ো কলে কথা বললেন টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পদকের অভিযানে যাওয়া ভারতীয় বক্সারদের নিয়ে।
কী আশা করছেন: গত বার অলিম্পিক্সে আমরা ভাল ফল করতে পারিনি। এ বার ন’জনের দল গিয়েছে। প্রত্যেকেই খুব ভাল। মেরি কম আছে, বিকাশ কৃষাণ আছে। ওরা অভিজ্ঞ। আগেও অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া আছে অমিত পঙ্ঘাল। অমিত খুব ভাল ছন্দে। আমি তো একটা বা দুটো পদক এ বার দেখছি
বক্সিং থেকে।
দলে অভিজ্ঞতার অভাব: জানি, মেরি কম ও বিকাশ ছাড়া আর কেউ সে রকম অভিজ্ঞ নয়। কিন্তু তাতে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। মেরি-বিকাশ ওদের অভিজ্ঞতা বাকিদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারে। আমি তো তাই করতাম। এই মণীশ কৌশিকের (যিনি এ বারের অলিম্পিক্স দলে আছেন) কথাই ধরুন। ও আমার কাছে সব সময় জানতে চাইত, অলিম্পিক্সে খেলার অভিজ্ঞতাটা কেমন। আমিও বলতাম। খুব ভাল লাগছে যে মণীশ এ বার সুযোগ পেয়েছে। প্রথম যারা নামছে, তারা যদি এ বার পদক নাও পায়, তা হলেও ক্ষতি নেই। অনেক কিছু শিখে আসতে পারবে এবং পরের অলিম্পিক্সের জন্য তৈরি হয়ে যাবে।
করোনা অতিমারির ছাপ: শুধু ভারতের নয়, সব দলেরই অনুশীলন করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। তবে যতদূর জানি, ভারতীয় বক্সাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। মানসিক ভাবে ওদের খুব শক্তিশালী থাকতে হবে। ওরা এখন বাইরে যাচ্ছে না। তাই আরও মনযোগী হতে পারবে অলিম্পিক্স নিয়ে।
বিকাশ ও অমিত: দু’জনেই খুব ভাল বক্সার। বিকাশের অভিজ্ঞতা আছে। আগেও অলিম্পিক্সে অংশ নিয়েছে। ওর বক্সিংয়ের স্টাইলটা একটু অন্য রকম। যেটা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমস্যায় ফেলে দেয়। অমিত বিশ্বের এক নম্বর বক্সার। র্যাঙ্কিংটা কিন্তু খুব কাজে দেয়। অমিতের সব চেয়ে যেটা বড় অস্ত্র, সেটা হল ওর ‘স্ট্রেট পাঞ্চ’। সোজা ঘুষিটা দারুণ মারে। তবে অলিম্পিক্সে ড্র-টাও খুব গুরুতত্বপূর্ণ। দেখা যাক, কী রকম ড্র পায় ওরা।
মেরির লড়াই: মেরি কমের পদক জিতে আসার ক্ষমতা আছে। আমরা সবাই প্রার্থনা করছি, মেরি যেন পদক নিয়ে ফেরে। ওর মতো শক্তিশালী মহিলা খুব কমই দেখা যায়। তিন সন্তানের মা হওয়ার পরেও মেরি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবারই শেখার আছে মেরি কমের
কাছ থেকে।
নতুনদের জন্য পরামর্শ: তরুণ বক্সারদের আমি বলব, অলিম্পিক্স চলাকালীন গণমাধ্যম থেকে দূরে থাকো। অলিম্পিক্স ভিলেজে পা দেওয়ার পরে সব কিছু বদলে যায়। তখন তুমিই রাজা। মনে হয়, যা ইচ্ছে করা যায়। কিন্তু নিজেকে সংযত রাখতে হবে। মনঃসংযোগ নষ্ট হতে দিলে চলবে না। মাথায় ঘুরবে একটাই কথা। কী ভাবে নিজের লক্ষ্যে
পৌঁছনো যায়।
পদক জয়ের এক্স ফ্যাক্টর: আলাদা করে কোনও বিশেষ কারণকে চিহ্নিত করা যায় না। একজন বক্সারকে পদক জিততে হলে অনেক কিছু ঠিকঠাক হতে হয়। যেমন কোচ, ট্রেনিংয়ের সঙ্গী, ফিজিয়ো— সবাইকে খুব দক্ষ হতে হবে। একজন বক্সারের পিছনে যে দলটা থাকে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বক্সার হল সেই দলটারই মুখ।
অন্য কোন খেলায় নজর: কুস্তি আমি খুব ভালবাসি। অনেক কুস্তিগিরই আমার বন্ধু। তা ছাড়া টেনিস আর অ্যাথলেটিক্সে ১০০ মিটার আমার খুব পছন্দের ইভেন্ট।
টোকিয়ো অলিম্পিক্স: ২৩ জুলাই থেকে সরাসরি সম্প্রচার সোনি সিক্স, টেন ২ এবং টেন ৩ চ্যানেলে।