ফাইল চিত্র।
ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের বিচ্ছেদ কি অবশ্যম্ভাবী? চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে সংঘাত যে রকম তীব্র হয়ে উঠেছে, তাতে সেই সম্ভাবনাই প্রবল। আগামী সোমবারের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে ক্লাব ও লগ্নিকারী সংস্থার সম্পর্কের ভবিষ্যৎ।
অষ্টম আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গল খেলবে কি না, তা আগামী সোমবারের মধ্যে এফএসডিএল-কে জানাতে হবে। লগ্নিকারী সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরিমোহন বাঙুর কয়েক সপ্তাহ আগেই পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, চূড়ান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত না হলে আইএসএলে খেলবে না দল। এখনও পর্যন্ত স্বাক্ষর করেননি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দু’এক দিনের মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলকে জানিয়ে দেবেন যে তাঁরা অষ্টম আইএসএলে অংশ নেবেন না। শুধু তাই নয়। রবিবারের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত না হলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দিয়ে পুরো বিষয়টি জানানোর ভাবনা-চিন্তা চলছে।
প্রশ্ন উঠছে লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলে কি ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলতে পারবে? কারণ, ফুটবল স্বত্ব রয়েছে লগ্নিকারী সংস্থার কাছেই। শেষ পর্যন্ত যদি বিচ্ছেদ হয়, তা হলে কি ফুটবল স্বত্ব ইস্টবেঙ্গলকে ফিরিয়ে দেবে তারা? শুক্রবার লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তাঁদের বিনিয়োগ করা অর্থ ও অন্যান্য খরচ যদি মিটিয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল, তা হলেই ক্রীড়া স্বত্ব ফেরত দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, লগ্নিকারী সংস্থার তরফে প্রায় ৫২ কোটি টাকা দাবি করা হবে ক্লাবের কাছে। গত এক বছর ধরে বিনিয়োগ করা অর্থের সঙ্গে যোগ করা হবে অন্যান্য খরচ। যেমন, কোচ রবি ফাওলারের সঙ্গে আরও এক মরসুম চুক্তি রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। সেই অর্থও দিতে হবে ক্লাবকে। আগের লগ্নিকারী সংস্থার আমলে ফুটবলারদের বকেয়া না মেটানোয় ইতিমধ্যে ফিফা নির্বাসিত (ট্রান্সফার ব্যান) করেছে ইস্টবেঙ্গলকে। অর্থাৎ, বকেয়া না মেটালে নতুন মরসুমে কোনও ফুটবলার সই করাতে পারবে না তারা। তাই শুধু লগ্নিকারী সংস্থার আর্থিক দাবি পূরণ করলেই হবে না, ফুটবলারদের বকেয়াও মেটাতে হবে।
লাল-হলুদ কর্তারা অবশ্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন বিনা শর্তে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তাতে রাজি নন লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা। তাঁদের কথায়, “আমরা ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে কখনওই চাইনি। এখনও আমরা আশাবাদী, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সামনে স্বাক্ষরিত হওয়া প্রাথমিক চুক্তিকে মান্যতা দেবেন এবং চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন।” যোগ করেছেন, “আমাদের পক্ষে আর অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। হয় ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করুন, না হলে এখনও পর্যন্ত আমরা যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ ও খরচ করেছি, তা মিটিয়ে দিন। তা হলেই আমরা ক্রীড়া স্বত্ব ওদের ফেরত দেব।”
ইস্টবেঙ্গল কি পারবে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ক্রীড়া স্বত্ব ফিরিয়ে আনতে? না কি এই সঙ্কটের মুহূর্তে বিবাদ ভুলে চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন লাল-হলুদ কর্তারা? এখন সেটাই দেখার।