পেন বনাম কোহালি। ফাইল চিত্র
বিরাট কোহালির উদ্দেশে মাইকেল ক্লার্কের করা কটাক্ষের জবাব দিলেন তাঁরই দেশের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক টিম পেন। ক্লার্ক অভিযোগ করেছিলেন, আইপিএলে মোটা টাকার চুক্তি পাওয়ার মোহেই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা কোহালিকে স্লেজ করতে ভুলে গিয়েছে। পূর্বসূরিকে এক হাত নিয়ে পেন পাল্টা বলে দিয়েছেন, ক্লার্কের এমন মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
‘‘প্রথমত, আমার কখনও দেখে মনে হয়নি, বিরাটের প্রতি আমাদের ছেলেরা খুব নরমসরম মনোভাব দেখিয়েছে বলে। আমরা কি ওকে আউট করার চেষ্টা করছিলাম না নাকি? ভিত্তিহীন কথাবার্তা,’’ ক্রিকইনফো নামে এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে বলেছেন পেন। যদিও শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে দু’দলের অধিনায়ক টিম পেন এবং বিরাট কোহালির মধ্যে স্লেজিং-যুদ্ধ নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দু’জনে পার্থ টেস্ট ম্যাচে শারীরিক সংঘাতের কাছাকাছিও এসে পড়েছিলেন। আম্পায়ারদের হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল দুই অধিনায়ককে ঠান্ডা করার জন্য। ঋষভ পন্থের সঙ্গে টিম পেনের স্লেজিং দ্বৈরথ খুবই চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছিল।
‘‘আমরা যখনই মাঠে নামি, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ম্যাচ জেতার জন্য সেরাটা নিংড়ে দিই,’’ বলে পেন যোগ করছেন, ‘‘যতটুকু আমরা বিরাটের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রাসন দেখাইনি, তার পিছনে রয়েছে রণনীতি। আমাদের মনে হয়েছিল, বিরাটকে রাগিয়ে দিলেই ও সব চেয়ে ভাল খেলে। তাই সঠিক রণনীতি হবে, ওকে বেশি খোঁচাখুঁচি না করা।’’ এ দিন পাকিস্তানের প্রাক্তন উইকেটকিপার রশিদ লতিফও মন্তব্য করেছেন যে, কিছু কিছু ক্রিকেটার আছেন যাঁদের রাগিয়ে দিতে নেই। ভিভ রিচার্ডস যেমন। এখনকার কোহালি যেমন।
বিরাটের ভারত ফের অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে এ বছরের শেষের দিকে। পেন বলছেন, ‘‘কে বলতে পারে, আসন্ন সিরিজে কী ঘটতে চলেছে। তবে আগের সিরিজ নিয়ে যে তথ্যচিত্র হয়েছে, সেটা দেখলেই তো পরিষ্কার হয়ে যাবে, বিরাট বা ভারতীয় দলের প্রতি আমরা নরম ছিলাম কি না। ওই তথ্যচিত্রে কিন্তু বেশ কিছু উত্তপ্ত মুহূর্ত রয়েছে।’’ অস্ট্রেলীয় টেস্ট অধিনায়কের সংযোজন, ‘‘আমি নিজে তো থেমে থাকছিলাম না। আইপিএল নিয়ে আমার বিশেষ ভাবনাও নেই।’’ আইপিএলের কোনও দলে নেই পেন। পাল্টা তোপ দেগে বলে দিচ্ছেন, ‘‘বিরাটকে বল করতে যাওয়ার সময় কোনও বোলার কি ভাববে, তাকে আইপিএল খেলতে হবে। তার একমাত্র লক্ষ্য হবে বিরাটের উইকেট নেওয়া।’’ একই সঙ্গে পেন জানিয়ে দিতে ভোলেননি, বাগ্যুদ্ধ দিয়ে ম্যাচ জেতা যায় না। ‘‘মাঠে যে কথাগুলো বলা হয়, নিরানব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে তার কোনও প্রভাব খেলোয়াড়দের উপর পড়ে না। কখনওসখনও হয়তো কারও মনঃসংযোগে সামান্য ব্যাঘাত ঘটানো যায় স্লেজিং করে। কিন্তু মোদ্দা কথাটা হচ্ছে, যদি কোনও দল ভাল ব্যাট বা বল না করতে পারে, তা হলে তাদের জেতার সম্ভাবনাও নেই। শুধু স্লেজিং অস্ত্রে কেউ জিততে পারে না।’’ যোগ করছেন, ‘‘গত ১২-১৮ মাসে আমরাও তর্কাতর্কিতে জড়িয়েছি। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে, সময় পাল্টেছে এবং আমাদেরও এগিয়ে যেতে হয়েছে। আর গত দেড় বছরে যে ভাবে আমরা ক্রিকেট খেলেছি, তার জন্য ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত।’’