মালদহ, শিলিগুড়ির পরে এ বার টেনিস সংস্থার নজরে দার্জিলিং। তিনটি আন্তর্জাতিক মানের সিন্থেটিক টেনিস কোর্টের উদ্বোধন হল দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবে।
বাংলার টেনিসের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ। প্রতীকী ছবি
উত্তরবঙ্গের টেনিসে জোর দিচ্ছে বাংলার টেনিস নিয়ামক সংস্থা বেঙ্গল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। মালদহ, শিলিগুড়ির পরে এ বার তাদের নজরে দার্জিলিং। তিনটি আন্তর্জাতিক মানের সিন্থেটিক টেনিস কোর্টের উদ্বোধন হল দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবে।
উত্তরবঙ্গ পুলিশের আইজি ডিপি সিংহ তিনটি কোর্টের উদ্বোধন করেন। ছিলেন বিটিএ সচিব সুদর্শন ঘোষ, সিওও সুজয় ঘোষ, জিমখানা ক্লাবের চেয়ারম্যান জামলিং তেনজিং নোরগে। দার্জিলিং রাজভবনের পাশে ম্যাল রোডে ১১৩ বছরের পুরনো এই ক্লাবে নতুন তিনটি টেনিস কোর্ট যুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলেই উচ্ছ্বসিত।
দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবের টেনিস কোর্ট। নিজস্ব চিত্র
এই তিনটি কোর্ট তৈরি করতে মোট ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে স্কুল পড়ুয়াদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজন করা হবে। তার জন্য বিটিএ ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছে। এ বার জাতীয় এবং রাজ্যস্তরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে দার্জিলিং জিমখানা ক্লাবে।
নোরগে বলেন, ‘‘আমাদের ১০০ বছরের পুরনো ক্লাব। এখানে পুরনো কোর্ট ছিল। আমরা অনেক দিন থেকেই চেয়েছিলাম, নতুন সিন্থেটিক কোর্ট তৈরি করতে। সেটা করতে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আমরা এ বার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাও আয়োজন করতে পারব। সেটা হলে আর্থিক লাভও হবে। সর্বভারতীয় টেনিস মহলে দার্জিলিং অবশ্যই আলাদা জায়গা করে নেবে।’’
দার্জিলিং জিমখানা টেনিস কোর্টে কর্তারা। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিংয়ের স্কুলগুলির উপর বিশেষ করে নজর রয়েছে জানিয়ে নোরগে বলেন, ‘‘এখানে যত স্কুল আছে, তার প্রত্যেকটার প্রিন্সিপালকে আমরা চিঠি দিয়ে অনুরোধ করছি, তাঁরা যাতে টেনিসের উন্নতিতে এগিয়ে আসেন। আমরা খরচও খুব কম রাখছি। ফুটবলের বাইরেও পাহাড়ের একটা পরিচিতি হোক। দার্জিলিংয়ের জন্য এটা গর্বের মুহূর্ত। সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, দার্জিলিংয়ে এসে টেনিস খেলুন।’’
সুদর্শন বললেন, ‘‘দার্জিলিংয়ের টেনিসের উন্নতির জন্য আমরা পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছি। উত্তরবঙ্গে এখন এতগুলো টোনিস কোর্ট হয়েছে দেখে ভাল লাগছে। স্থানীয় প্রতিভা উঠে আসবে। বাংলার টেনিসের মানও বাড়বে। আমরা গত মাসে মালদা টেনিস ক্লাবকেও সাহায্য করেছি যাতে ওরা সারা বছর প্রশিক্ষণ শিবির চালু রাখতে পারে। শিলিগুড়িতে টেনিস কোর্ট আছে। আশা করছি, বাংলার টেনিসের উন্নতি হবে।’’
সুজয় বললেন, ‘‘স্বপ্ন পূরণ হল। ২০১৭ সালে সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। নানা কারণ, মূলত কোভিডের জন্য গোটা ব্যাপারটা পিছিয়ে যায়। তার পর জামলিং এবং তাঁর দল যে ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কাজটা শেষ করেছেন, তা প্রশংসনীয়। এখন যা তৈরি হয়েছে, তাতে দাবি করতে পারি, এটা ভারতের অন্যতম সেরা টেনিস কোর্ট। আন্তর্জাতিক মানের তিনটে কোর্ট রয়েছে। আগে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতা করতেই আমাদের সমস্যা হত। কারণ পরিকাঠামোর অভাব। এখন আর সেই সমস্যা থাকল না। আমরা দার্জিলিংয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের টেনিসে উদ্বুদ্ধ করতে চাইছি। বিটিএ-র চিফ ডেভলপমেন্ট অফিসার গ্যারি ও’ব্রায়েন ইতি মধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। দার্জিলিংয়ে প্রতিযোগিতা হলে অনেকেই বাড়তি উৎসাহ পাবে। শুধু এই কোর্টগুলোর জন্য নয়, পর্যটনের দিক থেকেও দার্জিলিংয়ের আকর্ষণ কতটা, আমাদের সবার জানা। বিটিএ সব রকম সাহায্য করবে।’’