সিন্ধু, সাইনাদের নিয়ে স্পষ্ট গোপীচন্দ ফাইল ছবি
টমাস কাপে জিতে ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত। কিদম্বি শ্রীকান্ত, এইচএস প্রণয়দের প্রশংসা করতে গিয়ে পাশাপাশি সাইনা নেওহাল এবং পিভি সিন্ধুকে তুলোধনা করলেন জাতীয় ব্যাডমিন্টন কোচ পুল্লেলা গোপীচন্দ। টমাস কাপে ভারতীয় দলের মধ্যে যে দলগত ঐক্য দেখা গিয়েছে তা সোনা জয়ের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন গোপী। কিন্তু তাঁর মতে, মহিলাদের দলগত ইভেন্টে এই ব্যাপারটায় খামতি রয়েছে বলেই দেশের হয়ে খেলার সময়ে তাঁরা সাফল্য পাচ্ছেন না।
পুরুষ দল প্রথম বার টমাস কাপ জিতলেও মহিলাদের জন্য যে উবের কাপ, সেখানে ভারত এক বারও ফাইনালে ওঠেনি। দু’বার শুধু ব্রোঞ্জ পেয়েছে। এক সংবাদপত্রের কলামে গোপীচন্দ লিখেছেন, ‘ভারতীয় দলের গভীরতা অসাধারণ। যদি আরও পাঁচটা সিঙ্গলস থাকত, সেখানেও ভারত জিতত। অলিম্পিক্সে কেন সোনা আসছে না, সেটা না ভেবে দলগত ইভেন্টের উপরে জোর দিতে হবে। মহিলাদের দলে সেই গভীরতা কিন্তু এখনও নেই। মহিলা খেলোয়াড়রা শুধু নিজেদের ম্যাচ নিয়ে ভাবে। বাকি দলের কথা ভাবে না। সাইনা খেললে সিন্ধু গ্যালারিতে থাকে না। সিন্ধু খেললে সাইনাকে সেখানে দেখা যায় না। সাইনা এবং সিন্ধু দলকে নিয়ে এগোতে পারে না। উবের কাপে এই সংস্কৃতিটাই গড়তে হবে। এটাই ব্রোঞ্জ এবং সোনার পার্থক্য।’
আরও উদাহরণ দিয়ে গোপীচন্দ লেখেন, ‘এইচএস প্রণয় বা কিদম্বি শ্রীকান্ত কিন্তু দলে নিজের জায়গা ধরে রাখা নিয়ে যথেষ্ট ভাবিত ছিল। লক্ষ্য সেনও নিজের জায়গা পাওয়ার জন্যে লড়েছে। ছেলেদের আসল কৃতিত্ব প্রাপ্য। কারণ ওরা নিজেরা লড়ার পাশাপাশি একে অপরকে সাহায্য করেছে। প্রত্যেকে কোথাও না কোথাও আঘাত পেয়েছে। অলিম্পিক্সে হেরেছে, অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। বড় ম্যাচে হেরে। কিন্তু আসল জায়গায় নিজেদের প্রতিভার মর্যাদা রেখেছে।’
সাইনা এবং সিন্ধু ছেলেদের কাজটা কঠিন করে দিয়েছেন জানিয়ে গোপী লেখেন, ‘সাইনা এবং সিন্ধুর সঙ্গে বার বার ওদের তুলনা করা হয়েছে। মহিলা খেলোয়াড়রা নিজেদের এমন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে যে, কোনও পুরুষ খেলোয়াড় সুপার ৫০০ খেতাব জিতলেও লোকের চোখে পড়েন না। কোনও পুরুষ খেলোয়াড় যদি প্রথম দশে ঢোকে, বা কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালে ওঠে, সেটা আর শিরোনাম হয় না। লক্ষ্য অল ইংল্যান্ডে ফাইনালে খেলল। কিন্তু একমাত্র জিতলে তবেই সিন্ধু বা সাইনার জনপ্রিয়তায় পৌঁছতে পারত ও। টমাস কাপেও শ্রীকান্তরা যদি ফাইনালে হেরে যেত, তা হলে সব উত্তেজনা স্তিমিত হয়ে যেত।’
টমাস কাপ ফাইনালে ডাবলস জুটির জয়ে সবচেয়ে খুশি গোপীচন্দ। লিখেছেন, ‘চিরাগ শেট্টি-সাত্বিকসাইরাজ রানকিরেড্ডি জিতেছে মহম্মদ আহসান-কেভিন সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। এর আগে সিঙ্গলসে কেভিনের বিরুদ্ধে ১১ বারই আমাদের খেলোয়াড়রা হেরেছে। আজ গোটা দল ওদের সাহায্য করেছে। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেছে। ওদের পাশে থেকে। এটাই পার্থক্য গড়ে দেয় দলগত ইভেন্টে।’
গোপীচন্দের অবশ্য মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গিয়েছে। সেটা পরের লক্ষ্য স্থির করা নিয়ে। লেখেন, ‘কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হবে, এবার কী করব। এই ছেলেরা দেখিয়ে দিল, বিশ্বসেরা হওয়ার ক্ষমতা ওদের রয়েছে। ফলে এ বার আমাকে ভাবতে হবে, ওদের জন্য এর পর কী লক্ষ্য স্থির করব।’