আজকের ফাইনালে ভারতকে দেখার আশায় এত দিন বসেছিল কলকাতা। তাই ধোনিরা খেলছে না বলে একটু হতাশা তো আছেই। তবু ফাইনালের সব টিকিট শেষ। জোর দিয়ে বলতে পারি, রাতে পরিবেশটা একদম জমজমাট হবে। দুরন্ত মেজাজে থাকবে ভরা ইডেন।
টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় ম্যাচের জন্য ইডেন একদম তৈরি। স্টেডিয়াম আর মাঠ তো ঝকঝক তকতক করছেই। বাইশ গজেরও একদম নতুন চেহারা। ইডেনে শেষ দু’টো ম্যাচ যে ধরনের সরফেসে খেলা হয়েছিল, তার চেয়ে ফাইনালের সারফেসটা কিন্তু অন্য রকম হয়েছে।
উইকেট এখন পুরো সবুজ ঘাসে ঢাকা। সুন্দর বাউন্স থাকবে। বল ব্যাটে আসবে। তাই ব্যাটসম্যানদের পক্ষে স্ট্রোক খেলা সহজ হবে। এই পিচে ব্যাট করা উপভোগ করবে ওরা। রবিবার আবার একটা নয়, দু’ দু’টো ফাইনাল। মেয়েদের ফাইনালের পর ছেলেদেরটা। তাই উইকেট এমন হওয়া জরুরি ছিল যাতে দু’টো ম্যাচ মিলিয়ে পুরো আশি ওভার উইকেট ভাল থাকে। আমরা ফাইনালের পিচ করার সময় সেটা সবার আগে মাথায় রেখেছিলাম।
ভারত ফাইনালে না ওঠায় অনেকেই মনমরা। আমার কাছে কিন্তু টুর্নামেন্টের সেরা দু’টো টিমই আজ কাপ-যুদ্ধে নামছে। আমি বরাবরই বলে এসেছি, টি-টোয়েন্টি এমন একটা ফর্ম্যাট যেখানে দিনের দিন যে টিম নিজেদের সেরাটা বের করতে পারবে তারাই ম্যাচ বের করে নিয়ে যাবে। ইংল্যান্ড টিমটা খুব ভাল খেলেছে। তবে ওদের আসল শক্তি বোলিং। ভারতীয় কন্ডিশন দারুণ ভাবে কাজে লাগাচ্ছে ওদের পেসাররা। বিশেষ করে ডেথ ওভারগুলোয় অসম্ভব কার্যকর দেখাচ্ছে বেন স্টোকস আর ক্রিস জর্ডানকে। আর ফাইনালের পিচে ঘাস থাকছে বলে ওরা পিচের সাহায্যটাও পাবে। তাই আরও ভাল বল করার কথা। ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়েও যথেষ্ট গভীরতা রয়েছে। তবে আজ জেসন রয়, জো বাটলারদের ব্যাটেবলে হওয়া বা না হওয়াটাই কিন্তু ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ের আসল চাবিকাঠি হবে।
অবশ্য ইংল্যান্ড টিম হিসাবে যতই শক্তিশালী হোক, অন্য ফাইনালিস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ এক কথায় বিপজ্জনক!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের গেইল ফ্যাক্টর নিয়ে টুর্নামেন্টের আগে অনেক কথা হয়েছিল। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পর ওরা দেখিয়ে দিয়েছে, টিম মোটেই স্রেফ গেইল নির্ভর নয়। ওদের টিমে গেইল ছাড়াও অনেক ম্যাচ উইনার রয়েছে। আসল কথা হল, জনসন চার্লস, লেন্ডল সিমন্স, আন্দ্রে রাসেলরা গেইলের উপর থেকে চাপ কমিয়ে দিয়ে ওকে অনেক বেশি ঝাড়া হাত-পা হয়ে খেলার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে ফাইনালে গেইল অনেক চাপমুক্ত থেকে নিজের ব্যাটিংটা উপভোগ করতে পারবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিং বলতে আবার শুধু এই ক’জন মোটেই নয়। মনে রাখতে হবে ভারতের বিরুদ্ধে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও ওরা যখন জিতছে, তখন ডোয়েন ব্র্যাভো, ডারেন স্যামি, কার্লোস ব্রেথওয়েট আর দীনেশ রামদিনের মতো ক্রিকেটাররা ডাগআউটে বসে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিংয়েও বৈচিত্র্য রয়েছে। বিশেষ করে সুলেমান বেন আর স্যামুয়েল বদ্রীর মতো স্পিনার থাকায় ওদের স্পিন বিভাগ ইংল্যান্ডের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
আমার কাছে স্যামিরা কিন্তু তুলনায় বেশি অল-রাউন্ড সাইড। গেইলদের টিমের জনা দুই ব্যাটসম্যানেরও যদি ঠিকঠাক ব্যাটেবলে হয়, ইডেন গার্ডেন্সকেও কিন্তু ছোট্ট মাঠ বলে মনে হতে শুরু করবে! (গেমপ্ল্যান)