চোট হোক বা অন্য কোনও কারণ, দেশের হয়ে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে ভারতের বহু ক্রিকেটারের। এঁদের মধ্যে অনেকের রেকর্ড বেশ ঈর্ষণীয়। এই ক্রিকেটারদের নিয়ে যদি একটা একাদশ গড়া হয়, কেমন হত সেই ভারতীয় দল? কারা ঠাঁই পেতেন? কেনই বা জায়গা হয়নি সে সব ক্রিকেটারের?
টেস্ট ক্রিকেটের জন্যই মূলত তাঁর নাম বিবেচিত হয়। তবে মুরলী বিজয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখুন, ওডিআইতেও সমান সাবলীল তিনি। জাতীয় দলের হয়ে মাত্র ১৭টি ওডিআই খেলে ৩৩৯ রান করলেও আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে বিজয়ের ইনিংসগুলো অন্য কথাই বলে। বিশ্বকাপে অনায়াসে টিম ইন্ডিয়ার ওপেনার হিসাবে খেলতে পারতেন ফর্মে থাকা বিজয়।
২০০৩-এ প্রায় দলে ঢুকে পড়েছিলেন পার্থিব পটেল। তবে তখনকার টিম ইন্ডিয়া ক্যাপ্টেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় উইকেট রক্ষক হিসাবে রাহুল দ্রাবিড়ের নাম প্রস্তাব করেন। এর পর এমএস ধোনির যুগ শুরু। ফলে বিশ্বকাপ খেলা আর হয়ে ওঠেনি এই মারকাটারি ওপেনার তথা উইকেট রক্ষকের। ৩৮ ওডিআইতে সর্বোচ্চ রান ৯৫-সহ তাঁর সংগ্রহ ৭৩৬।
রাহুল দ্রাবিড়ের পর টেস্টে টিম ইন্ডিয়ায় তিন নম্বর জায়গাটা একেবারে নিজের নামেই করে নিয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। তবে ওয়ানডেতে খেলার তেমন সুযোগই আসেনি তাঁর। দেশের হয়ে মাত্র ৫টি ওডিআই খেলেছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার জার্সি গায়ে দেওয়ার সুযোগ হয়নি পূজারার।
ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান খুব কমই দেখা গিয়েছে। তবে দীর্ঘ দিন সাফল্যের সঙ্গে টেস্ট খেললেও তাঁর একটা খেদ রয়ে গিয়েছে। ৮৬ ওডিয়াইতে ২৩৩৮ রান করলেও বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি তিনি। যদিও ২০০৩-এ দলে ঢোকার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তবে নির্বাচকরা তাঁর বদলে দীনেশ মোঙ্গিয়াকেই টিম ইন্ডিয়ায় শেষমেশ জায়গা দেন।
হৃষিকেশ কানিতকরকে মনে আছে? ১৯৯৮-এ ঢাকায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপে জয়ের রান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। তবে ৩৪ ওডিআই খেলে ৩৩৯ রান ও ১৭ উইকেট নিলেও এই অলরাউন্ডারের কাছে বিশ্বকাপের দরজা খোলেনি।
তামিলনাড়ুর হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করলেও দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি হেমাঙ্গ বাদানি। চার বছর ধরে ওডিআই কেরিয়ারে ৪০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ১টি সেঞ্চুরি-সহ ৮৬৭ রান এসেছে বাদানির ব্যাট থেকে।
দেশের হয়ে ১০০-র বেশি ওডিআই খেলেও ৫০ ওভারের ফরম্যাটে বিশ্বকাপ খেলেননি ইরফান পাঠান। যদিও ২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৭-এ বিশ্বকাপের দলে ডাক পেলেও প্রথম একাদশে কখনই জায়গা হয়নি পাঠানের। ১২০ ওডিআইতে ১৭৩ উইকেট রয়েছে তাঁর। ব্যাট হাতে পাঠানের সর্বোচ্চ রান ৮৩।
২০০৩-এ ওডিআইতে অভিষেক হলেও হরভজন সিংহ ও অনিল কুম্বলের উপস্থিতিতে টিম ইন্ডিয়ায় তেমন সুযোগ হয়নি অমিত মিশ্রর। কেরিয়ারের তুঙ্গে থাকার সময় রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাডেজার ছায়ার ঢাকা পড়ে গিয়েছেন। ৩৬ ওডিআইতে রয়েছে ৬৪ উইকেট (গড় ২৩.৬০)। তবে পরিসংখ্যান তাঁর পক্ষে থাকলেও টিম ইন্ডিয়ার বিশ্বকাপ দলে ঠাঁই পাননি অমিত।
দেশের আরও এক জন প্রতিভাবান স্পিনার যিনি আন্তর্জাতিক স্তরে তেমন একটা সুযোগ পাননি। টিম ইন্ডিয়ার হয়ে মাত্র ৩৭টি ওডিআই খেলেছেন মুরলী কার্তিক। ৩৭টি উইকেট নিলেও পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি তিনি। ফলে বিশ্বকাপের দলেও তাঁর কথা ভাবা হয়নি কোনও দিন।
নতুন বলে সুইং করানোর ক্ষমতা রয়েছে। পুরনো বলেও ব্যাটসম্যানকে বেঁধে রাখতে পারতেন। ফলে টিম ইন্ডিয়ার ওডিআই টিমে সহজে জায়গা করে নিয়েছিলেন প্রবীণ কুমার। মেরঠের এই মিডিয়াম পেসার ২০১১-তে বিশ্বকাপের টিমে ডাকও পেয়েছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে কনুইয়ের চোটের জন্য ছিটকে যান তিনি। ৬৮ ওডিআইতে ২৯২ রান ছাড়াও ৭৭ উইকেট রয়েছে প্রবীণের।
এখনও পর্যন্ত ৮০টি ওডিআই খেলা হয়ে গিয়েছে ইশান্ত শর্মার। ১১৫ উইকেট নিলেও বিশ্বকাপে কখনও খেলা হয়নি তাঁর। ২০১৫-তে অবশ্য দলে ডাক পেয়েছিলেন। তবে হাঁটুর চোটের জন্য টিম ইন্ডিয়ার হয়ে বিশ্বকাপে খেলা অধরাই থেকে যায় ইশান্তের।