গোলাপি জ্বরে কাঁপছে কলকাতা। প্রথম গোলাপি বলের টেস্টের সাক্ষী হতে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশ যেন মিশে গিয়েছে কলকাতার সঙ্গে। ইডেন গার্ডেন্স তো বটেই, তার আশেপাশের পুরো পরিবেশটাই যেন সেজে উঠেছে গোলাপি আমেজে।
একই সঙ্গে দুটো ইতিহাস গড়তে চলেছে ইডেন। ইডেনের ইতিহাসে ভারত-বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচ এটা। তার উপরে গোলাপি বলে খেলা।
ইডেন তো বটেই। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোলাপি রঙে সেজে উঠেছে ময়দান চত্বরও। শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা ঢাকা পড়েছে গোলাপি আভায়।
শহরের সব চেয়ে উঁচু তিনটি বহুতলের রং বদলে গিয়েছে গোলাপিতে। শহিদ মিনারের শরীর থেকেও যেন গড়িয়ে পড়ছে গোলাপি রং। শহরের এই নতুন রূপ ক্যামেরাবন্দি করতে ম্যাচের আগের দিন বিকেল থেকেই বহু মানুষ এসে জড়ো হতে শুরু করেছেন শহরে। নিজস্বী তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারও করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার ক্রিকেটপ্রেমী হাজির হয়েছেন কলকাতায়। টেস্ট নিয়ে উন্মাদনা এতটাই যে, শহরে বাংলাদেশের থাকার আস্তানা বলে পরিচিত সদর স্ট্রিট, মার্কো স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডের পঁচিশটি হোটেল ও গেস্ট হাউসে কোথাও কোনও ঘর খালি নেই। ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী থাকতে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক মহম্মদ নুরবক্স।
ইডেনে উপস্থিত রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্রিকেট-অন্ত-প্রাণ হাসিনার। তাঁর কথায়, ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের জাতীয় দল টেস্ট খেলবে, এটা বিরাট ব্যাপার। ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এ দিন ইডেনে উপস্থিত রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। উপস্থিত থাকার কথা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তবে তিনি আসতে পারবেন না বলে ইতিমধ্যেই সিএবি-কে জানিয়ে দিয়েছেন।
শুধু গোলাপি রঙের বাহারই নয়। ইডেনে এ দিন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার পরে গান গাওয়ার কথা বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লার।
২৫০জন শিল্পী নৃত্য পরিবেশন করবেন তাঁর গানের সঙ্গে। তার পরে শুরু হবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। সেটা শেষ হলে গাইবেন বাংলার গায়ক ও সুরকার জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সকাল থেকেই ইডেনের বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সমর্থকরা। কারও মাথায় পতাকা বাঁধা। কেউ তো আবার বাংলার বাঘ হয়েই হাজির হয়ে গিয়েছেন।
ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী থাকতে ইডেনে উপস্থিত সচিন তেন্ডুলকর, কুম্বলে-সহ বহু প্রাক্তন তারকা।
এর আগে কোনও টেস্ট ম্যাচ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা কবে এতটা আগ্রহ দেখিয়েছেন, তা মনে করতে পারছেন না প্রায় কেউই। গোলাপি বলে দিনরাতের এই ঐতিহাসিক টেস্ট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েছে। ম্যাচের টিকিট ছাড়ার মাত্র ৪ দিনেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
টেস্ট ম্যাচ চলার কথা ৫ দিন ব্যাপী। ৫ দিনই ক্রিকেটপ্রেমীরা এই একই উন্মাদনা নিয়ে গ্যালারিতে হাজির থাকেন কি না, সেটাই দেখার।