ক্রিকেট-খিদে নিয়ে আমাকে কিছু বলতে আসবেন না: ক্লার্ক

চলতি অ্যাসেজে আধ ডজন ইনিংসে রান এসেছে মাত্র ৯৪। তার উপর ১-২ পিছিয়ে পড়ায় অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার সেরা টার্গেট হয়ে গিয়েছেন মাইকেল ক্লার্ক। বিশেষ করে এজবাস্টনে হারার পরে ‘ক্লার্ক হঠাও’ ধ্বনি উঠে পড়েছে ব্যাগি গ্রিনের দেশে। অজি অধিনায়ক কিন্তু নাছোড়বান্দা। ট্রেন্টব্রিজে চতুর্থ টেস্ট শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে তিনি সাফ বলে দিলেন, ক্রিকেটার হিসেবে মোটেও শেষ হয়ে যাননি। আর খেলা ছাড়ার প্রস্তাব যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁদের কথা ‘পুরো রাবিশ’!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৫ ০৪:০১
Share:

চলতি অ্যাসেজে আধ ডজন ইনিংসে রান এসেছে মাত্র ৯৪। তার উপর ১-২ পিছিয়ে পড়ায় অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার সেরা টার্গেট হয়ে গিয়েছেন মাইকেল ক্লার্ক। বিশেষ করে এজবাস্টনে হারার পরে ‘ক্লার্ক হঠাও’ ধ্বনি উঠে পড়েছে ব্যাগি গ্রিনের দেশে। অজি অধিনায়ক কিন্তু নাছোড়বান্দা। ট্রেন্টব্রিজে চতুর্থ টেস্ট শুরুর চব্বিশ ঘণ্টা আগে তিনি সাফ বলে দিলেন, ক্রিকেটার হিসেবে মোটেও শেষ হয়ে যাননি। আর খেলা ছাড়ার প্রস্তাব যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁদের কথা ‘পুরো রাবিশ’!

Advertisement

‘‘আমার ক্রিকেট নিয়ে যে ধরনের সমালোচনা ইদানীং হচ্ছে, সেগুলো আমার প্রাপ্য। অধিনায়ক হিসেবে অন্য কিছু আশাও করি না,’’ সিডনির এক সংবাদপত্রে নিজের কলামে এ দিন লিখেছেন ক্লার্ক। কিন্তু এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘তবে কিছু লেখায় পড়লাম যে আমার খিদেটা নাকি শেষ হয়ে গিয়েছে। কেউ এটাও বলেছে যে, আমার চোখ দেখে নাকি বোঝা যাচ্ছে এটাই আমার শেষ সিরিজ। এটা পুরো রাবিশ!’’

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের মুখ্য ক্রীড়া প্রতিবেদক অ্যান্ড্রু ওয়েবস্টার যেমন লিখেছিলেন যে, প্রতিটা আউটের পর ক্লার্কের মুখচোখ ক্রমশ শূন্য হয়ে যাচ্ছে। তাঁকে দেখে নাকি বিরক্ত নয়, পথভ্রষ্ট মনে হচ্ছে। দ্য অস্ট্রেলিয়ানের ক্রিকেটলিখিয়ে পিটার লালরের মত, চতুর্থ টেস্ট হারা মানে ক্লার্কের ক্রিকেট জীবনের নিশ্চিত সমাপ্তি। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্লার্কের পাল্টা, ‘‘লোকে আমার পারফরম্যান্স নিয়ে যা খুশি বলতেই পারে। কিন্তু আমার খেলার ইচ্ছে বা সংকল্প নিয়ে বলার অধিকার কারও নেই। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও ট্রেনিংয়ে আমি সবার আগে ঢুকি আর সবার পরে বেরোই। তাই আমার ইচ্ছে বা খিদে নিয়ে আমাকে কিছু বলতে আসবেন না। আর স্পষ্ট বলে রাখছি, ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার কোনও ইচ্ছে আমার নেই।’’

Advertisement

দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়া ক্যাপ্টেন যখন নিজের হয়ে নিজেই সওয়াল করায় পর্যবশিত, তাঁর বিপক্ষ অধিনায়ক তখন স্বস্তির স্টেশনে। শেষ দুটো টেস্টের একটায় জিতলেই গৌরবের অ্যাসেজ অ্যালিস্টার কুকের জিম্মায় চলে আসবে। তা-ও আবার ফেভারিটদের হারিয়ে, ঘরের মাঠে টানা চার বার। মিচেল জনসনের মতে ট্রেন্টব্রিজ টেস্টটাই ‘গ্র্যান্ড ফাইনাল’। যার আগে অপ্রত্যাশিত ভাবে জয়ের ভরবেগ ইংরেজদের দিকে।

তবু যে তিন সিংহের শিবির থেকে সতর্কতার হাওয়া ভেসে আসছে, তার কারণ ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক অদ্ভুত ফর্ম। শেষ সাতটা টেস্টে তারা একটা জিতেছে তো পরেরটা হেরেছে। টানা দুটো জয় বা হার নেই। টেস্ট ইতিহাসে যে রেকর্ড কোনও টিমের নেই। আর যা দেখে স্টুয়ার্ট ব্রড বলছেন, ‘‘আমরা ধারাবাহিক ভাবে ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছি। এটা পাল্টাতে হবে।’’

ট্রেন্টব্রিজেই পাল্টানো যাবে কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। পেস আক্রমণের অন্যতম সৈন্য জেমস অ্যান্ডারসনকে পাচ্ছে না ইংল্যান্ড। তাঁর গোড়ালির চোটের শুশ্রুষা চললেও কিয়া ওভালে শেষ টেস্টের আগে তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। কুক বলে দিচ্ছেন, ‘‘ফিজিওদের সঙ্গে কাজ করছে জিমি। অক্সিজেন ট্যাঙ্কও ব্যবহার করছে।’’ প্রতি দিন নাকি আশি মিনিট করে অক্সিজেন মাস্ক পরে থাকতে হচ্ছে অ্যান্ডারসনকে। তাঁর বদলি হিসেবে ট্রেন্টব্রিজে প্রায় নিশ্চিত মার্ক উড। ‘‘বৃহস্পতিবার সকালে সিদ্ধান্ত নেব, কিন্তু আপাতত উডির সম্ভাবনা খুব উজ্জ্বল,’’ বলছেন কুক। উড ছাড়া দৌড়ে আছেন লিয়াম প্লাঙ্কেট এবং আনকোরা বাঁ-হাতি মার্ক ফুটিট। ওপেনার অ্যাডাম লিথের অ্যাসেজ গড় আপাতত ১২ হলেও তাঁকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা কম।

অস্ট্রেলীয় বোলিংয়ে নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে নেওয়া হতে পারে পিটার সিডলকে। ব্যাটসম্যান অ্যাডাম ভোজেস বাদ যেতে পারেন বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তবে অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্র্যাড হাডিনের বদলে যে পিটার নেভি0লকেই খেলানো হবে, তা প্রায় নিশ্চিত। হাডিন নিয়ে হঠাৎ তৈরি হওয়া এই ধোঁয়াশা টিমের ক্ষতি করছে, সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় কোচ ডারেন লেম্যান। তবে হাডিন প্রসঙ্গে যথেষ্ট অস্বস্তি সহকারে জনসন বলছেন, ‘‘হাড্‌সের মতো এক সতীর্থকে না পাওয়া, তা-ও এ রকম পরিস্থিতিতে, সবার জন্যই খুব কঠিন। ওর জন্য সবচেয়ে বেশি। এর বেশি কিছু বলব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement